শ্রীমঙ্গল (মৌলভীবাজার): লাউয়াছড়া সংরক্ষিত বনে দিনের পর দিন উজাড় হচ্ছে মূল্যবান সব গাছ। মোটেই নিরাপদে নেই গাছগুলো।
গাছ কাটার বিষয়টি কমবেশি সবার জানা। কিন্তু চাঞ্চল্যকর তথ্য হলো, শুধু কাটা হচ্ছে না, হত্যা করা হচ্ছে। সরাসরি গাছ কাটলে চোখে পড়বে কর্তৃপক্ষের! তাই পরিকল্পনামাফিক চিহ্নিত গাছগুলো আগে হত্যা করে তারপর মরা গাছগুলো কেটে নেওয়া হচ্ছে।
সম্প্রতি বাংলানিউজের অনুসন্ধানে জানা যায়, লাউয়াছড়া জাতীয় উদ্যানের কালাছড়া বিটে বসবাসরত সংঘবদ্ধ ভিলেজাররা প্রথমে জীবিত গাছকে হত্যা করেন। তারপর শুকনো মরে যাওয়া গাছ দেখিয়ে তা কেটে দখলে নেয় সংরক্ষিত বনের জায়গা।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কালাছড়া বিটের পার্শ্ববর্তী গ্রামের দু’জন বাসিন্দা বলেন, প্রথমে গাছের গোড়ার চারদিকে মাটি খোড়া হয়। তারপর প্রচুর পরিমাণে লবণ ও ইউরিয়া সার দেওয়া হয় গাছের গোড়ায়। এর বেশ কিছুদিন পর গাছটির সবুজ পাতা লাল হলুদ হতে শুরু করে। তারপর একসময় মরে যায়।
এভাবে পরিকল্পনামাফিক তারা জীবিত গাছগুলো মেরে কেটে বন উজাড় করছে।
তারা আরও বলেন, এটি হয় খুব গোপনে। কখনও রাতে। মাটি খুড়ে লবণ ও ইউরিয়া সার দিয়ে মাটি দিয়ে ঢেকে দেওয়া হয়। যাতে কারো নজরে না পড়ে।
ইউরিয়া সার ও লবণের ক্ষতির দিক সম্পর্কে শ্রীমঙ্গলের উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তা প্রদীপ কুমার ভট্টাচার্য বাংলানিউজকে বলেন, ইউরিয়া সার যদি অধিক পরিমাণে গাছের গোড়ায় সরাসরি দেওয়া হয়, তবে গাছ মারা যাবে। এটি দেখতে ধবধবে সাদা ও দানাদার। কোনো গন্ধ নেই। আর লবণ শুধু নারিকেল গাছ ছাড়া অন্য কোনো গাছের গোড়ায় দেওয়া উচিত নয়।
এ ব্যাপারে যোগাযোগ করা হলে কালাছড়া বিটের বন কর্মকর্তা মো. মিজানুর রহমান বাংলানিউজকে বলেন, বিষয়টি আমি আগে কখনো শুনিনি। এখন থেকে তদন্ত করে দেখবো। যদি এ ধরনের কিছু হয়ে থাকে তবে এখানে বসবাসরত ভিলেজারদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
বাংলাদেম সময়: ০৯১০ ঘণ্টা, নভেম্বর ০৮, ২০১৫
বিবিবি/এএ