ঢাকা: বিশ্বে জলবায়ু পরিবর্তনের ফলে বাংলাদেশে যে প্রভাব পড়বে, এর ক্ষতিপূরণ হিসেবে অর্থ ঋণ নয়; অনুদান হিসেবে দিতে হবে।
বৃহস্পতিবার (২৬ নভেম্বর) ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির সাগর-রুনি মিলনায়তনে এক সংবাদ সম্মেলনে বেসরকারি সংগঠন অ্যাকশন/২০১৫ বাংলাদেশ কোয়ালিশনের পক্ষ থেকে এ দাবি জানানো হয়।
এতে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন হেল্পএজ ইন্টারন্যাশনালের কান্ট্রি ডিরেক্টর নির্ঝরিণী হাসান। সভাপতিত্ব করেন স্টেপস টুয়ার্ডস ডেভেলপমেন্টের নির্বাহী পরিচালক রঞ্জন কর্মকার।
৩০ নভেম্বর থেকে ১১ ডিসেম্বর পর্যন্ত ফ্রান্সের প্যারিসে বিশ্ব জলবায়ু সম্মেলন অনুষ্ঠিত হবে। এ উপলক্ষে বাংলাদেশের পক্ষ থেকে করণীয় ও উদ্যোগ বিষয়ে এ সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করা হয়।
সংবাদ সম্মেলনে বলা হয়, প্যারিস জলবায়ু সম্মেলনে আইনগত বাধ্যবাধকতাসহ একটি চুক্তি প্রণয়ন ও জলবায়ু আদালত প্রতিষ্ঠার দাবি তোলার জন্য বাংলাদেশের পক্ষ থেকে উদ্যোগ নেওয়া জরুরি।
গবেষণায় প্রমাণিত হয়েছে, জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে দক্ষিণ এশিয়ার দরিদ্র জনগোষ্ঠী সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হবে। বাংলাদেশ পৃথিবীর অন্যতম অরক্ষিত জলবায়ুর দেশ। জলবায়ুর পরিবর্তনে অবস্থার আরও অবনতি ঘটবে।
নির্ঝরিণী হাসান বলেন, বিশেষজ্ঞরা মত দিয়েছেন, বাংলাদেশ জলবায়ু পরিবর্তনের ঝুঁকিতে শীর্ষে রয়েছে। তাই আমরা মনে করি এ সম্মেলন বাংলাদেশের মানুষের ন্যায্য পাওনা বুঝে নেবার একটি চমৎকার সুযোগ।
তিনি বলেন, ক্ষতিপূরণের অর্থ ঋণ নিয়ে নাগরিকদের ওপর আর এর বোঝা বাড়াতে চাই না। ঋণ চাইলে তা নাগরিকদের সঙ্গে প্রতারণা করা হবে। তাই এটা ক্ষতিপূরণ বা ঋণের প্রশ্ন নয়, এটা বিশ্বজনীন মানবাধিকারের ব্যাপার।
‘উন্নত বিশ্ব শুধু নিজেদের জন্য সংরক্ষণ করলে হবে না বরং সবদেশের মানুষের জন্যই তা করতে হবে। অনেক সময় উন্নত দেশগুলো পানি, স্বাস্থ্য, কৃষি, শিক্ষা প্রভৃতি বিষয়ে উন্নত দেশগুলো তাদের অঙ্গীকার রাখছে না। তাই জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব মোকাবেলায় উন্নত বিশ্বের অঙ্গীকারের দ্রুত বাস্তবায়ন চাই। ’
সংবাদ সম্মেলনে জলবায়ু সম্মেলনে দেশের মানুষের কল্যাণে পদক্ষেপ নেওয়ার জন্য বলিষ্ঠ ভূমিকা রাখতে বাংলাদেশের প্রতিনিধিত্বকারীদের প্রতি আহ্বান জানানো হয়।
এদিকে জনমত গঠনে অ্যাকশন/২০১৫ বাংলাদেশ কোয়ালিশনের পক্ষ থেকে বিভিন্ন কর্মসূচি ঘোষণা করা হয়।
দেশের সব জেলা শহরে ২৮ এবং ২৯ নভেম্বর নানা শ্রেণি-পেশার মানুষের অংশগ্রহণে র্যালির আয়োজন করা হয়েছে।
আর ২৯ নভেম্বর সকাল ১০টায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অপরাজেয় বাংলার পাদদেশ থেকে কার্জন হল পর্যন্ত একটি শোভাযাত্রা অনুষ্ঠিত হবে।
অ্যাকশন/২০১৫ কোয়ালিশন এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ডিজেস্টার ম্যানেজমেন্ট অ্যান্ড ভালনারেবিলিটি স্টাডিজের উদ্যোগে আয়োজিত র্যালির উদ্বোধন করবেন উপাচার্য আ আ ম স আরেফিন সিদ্দিক।
ব্রিট-এর মহাসচিব রাহাতুল আশেকীনের সঞ্চালনায় এতে উপস্থিত ছিলেন- স্টেপস টুয়ার্ডস ডেভেলপমেন্টের পরিচালক রেখা সাহা, বিভুরঞ্জন সরকার এবং হেল্পএজ ইন্টারন্যাশনালের অ্যাডভোকেসি এবং কমিউনিকেশন কোঅর্ডিনেটর সেগুফতা শারমিন প্রমুখ।
বাংলাদেশ সময়: ১৭১৭ ঘণ্টা, নভেম্বর ২৬, ২০১৫
পিআর/এমএ
** ক্ষতিপূরণ ঋণ নয়, অনুদান হিসেবে দিতে হবে