ঢাকা, সোমবার, ২৩ বৈশাখ ১৪৩১, ০৬ মে ২০২৪, ২৬ শাওয়াল ১৪৪৫

জলবায়ু ও পরিবেশ

সুন্দরবনের ১০ একর এলাকা জুড়ে আগুন, তদন্তে কমিটি

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৯০৮ ঘণ্টা, এপ্রিল ১৩, ২০১৬
সুন্দরবনের ১০ একর এলাকা জুড়ে আগুন, তদন্তে কমিটি

বাগেরহাট: সুন্দরবনে লাগা আগুনের তীব্রতা বেড়েছে। এরই মধ্যে বনের ১০ একর এলাকা জুড়ে আগুন ছড়িয়ে পড়েছে বলে ধারণা করা হচ্ছে।

আগুন নেভাতে বাগেরহাট, মোরেলঞ্জ ও শরণখোলা ফায়ার সার্ভিসের তিনটি ইউনিট কাজ করছে। এছাড়া খুলনা থেকে আরও দু’টি ইউনিট ঘটনাস্থলে যাচ্ছে বলেও জানা গেছে।

এদিকে, আগুন লাগার কারণ অনুসন্ধান ও ক্ষয়ক্ষতি পরিমাণ নিরুপণ করতে তিন সদস্যের কমিটি করেছে বন বিভাগ।

বুধবার (১৩ এপ্রিল) বেলা সাড়ে ১০টার দিকে পূর্ব সুন্দরবনের চাঁদপাই রেঞ্জের ধানসাগর স্টেশনের নাংলি ফরেস্ট ক্যাম্পের আব্দুল্লাহর ছিলায় এ অগ্নিকাণ্ডের সূত্রপাত হয়।

পরে তা পার্শ্ববর্তী পঁচাকোড়ালিয়া ও নাপিতখালীসহ অন্তত ১০ একর এলাকা জুড়ে ছড়িয়ে পড়ে।

ঘটনাস্থল পরিদর্শনে গিয়ে বিকেলে পূর্ব সুন্দরবনের বিভাগীয় কর্মকর্তা (ডিএফও) মো. সাইদুল ইসলাম তদন্ত কমিটি গঠন করেন। পূর্ব সুন্দরবনের চাঁদপাই রেঞ্জের সহকারী বন সংরক্ষক (এসিএফ) বেলায়েত হোসেনকে প্রধান করে গঠিত এ কমিটির অন্য দুই সদস্যের নাম তাৎক্ষণিকভাবে ঘোষণা করেননি তিনি।

ডিএফও মো. সাইদুল ইসলাম বাংলানিউজ জানান, কমিটিকে ১৪ কর্মদিবসের মধ্যে আগুন লাগার কারণ, আগুনে বনজ সম্পদের কি পরিমাণ ক্ষতি হয়েছে ও পুড়ে যাওয়া জমির পরিমাণ কতো তা জানিয়ে চূড়ান্ত প্রতিবেদন দিতে বলা হয়েছে।

তিনি আরো জানান, নাংলি ফরেস্ট ক্যাম্পের আব্দুল্লাহর ছিলা, পঁচাকোড়ালিয়া ও নাপিতখালী এলাকার অন্তত পাঁচ স্থানে আগুন ছড়িয়ে পড়েছে। আগুন নেভাতে ফায়ার সার্ভিসের তিন ইউনিট কাজ করছে।

আগুন যেভাবে জ্বলছে তাতে এ জনবল দিয়ে পুরোপুরি নেভানো অসম্ভব। তাই খুলনা ফায়ার সার্ভিসকে আসতে বলা হয়েছে।

আগুন যাতে আর ছড়িয়ে পড়তে না পারে সেজন্য বন বিভাগের কর্মীরা স্থানীয় জনগণকে সঙ্গে নিয়ে ১০ একর এলাকায় ফায়ার লাইন কাটার কাজ চালিয়ে যাচ্ছেন বলেও জানান ডিএফও।

ধানসাগর স্টেশন কর্মকর্তা সুলতান মাহামুদ বাংলানিউজকে জানান, যে এলাকায় আগুন লেগেছে সেখানে অল্প কিছু সুন্দরী গাছ রয়েছে। প্রাথমিকভাবে যা দেখা যাচ্ছে, এখানে লতাগুল্ম জাতীয় গাছই বেশি।

মাত্র ১৭ দিন আগে ২৭ মার্চ সুন্দরবনের নাংলি ক্যাম্প এলাকায় আগুন লেগে এক একর বনভূমি পুড়ে যায়। এ অগ্নিকাণ্ডের কারণ ও ক্ষয়ক্ষতি অনুসন্ধানে গঠিত তদন্ত কমিটি কঠোর গোপনীয়তার মধ্য দিয়ে ৩ এপ্রিল বিভাগীয় বন কর্মকর্তার কাছে তদন্ত প্রতিবেদন জমা দেন।

বিশেষজ্ঞদের মতে, বসন্তের শেষ ও গ্রীষ্মকাল শুরুর মৌসুমে বনে এর আগেও অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটেছে। এ মৌসুমে মৌয়ালরা মধু আহরণ করতে বনে আসেন। মৌচাক ভাঙার সময় তারা আগুন ব্যবহার করেন। সেখান থেকেও বনে আগুন লেগে থাকতে পারে।
অবশ্য বনের ভেতরে পচা পাতা থেকে তৈরি হওয়া মিথেনের স্তর জমে গেলেও বনজীবীদের ফেলা জ্বলন্ত বিড়ি-সিগারেট থেকে আগুন লাগার সুযোগ থাকে বলে জানিয়েছেন ফায়ার সার্ভিসের মোরেলগঞ্জ স্টেশন অফিসার স্বপন কুমার ভক্ত।
বিশ্বের সর্ববৃহৎ ম্যানগ্রোভ বনাঞ্চল সুন্দরবনের শরণখোলা ও চাঁদপাই রেঞ্জের উত্তর ও উত্তর-পূর্বাংশের নিচু এলাকায় এর আগেও বিভিন্ন সময়ে অগ্নিকাণ্ড ঘটেছে।

এ মৌসুমে বাতাসের তীব্রতা থাকায় আগুন নিয়ন্ত্রণ করাও কঠিন হয়। ২০১৪ সালে চাঁদপাই রেঞ্জের গুলিশাখালী ক্যাম্প সংলগ্ন পয়ষট্টিছিলা এলাকায় বনে আগুন লেগে অন্তত পাঁচ একর বনভূমি পুড়ে যায়। ২০১১ সালে ধানসাগর স্টেশনের নাংলি ক্যাম্প এলাকায় পুড়ে যায় দুই একর বনভূমি।

বাংলাদেশ সময়: ১৮৫৮ ঘণ্টা, এপ্রিল ১৩, ২০১৬

এসআই

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।