ঢাকা, রবিবার, ৭ পৌষ ১৪৩১, ২২ ডিসেম্বর ২০২৪, ১৯ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

জলবায়ু ও পরিবেশ

আইন অমান্য করে চলছে ইটভাটা নির্মাণ 

| বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০৭১৭ ঘণ্টা, অক্টোবর ২৬, ২০১৭
আইন অমান্য করে চলছে ইটভাটা নির্মাণ  আইন অমান্য করে চলছে ইটভাটা নির্মাণ

দিনাজপুর : যে মাঠে এখন সবুজের সমারোহ থাকার কথা সেখানে জেলা প্রশাসকের (ডিসি) নির্দেশ অমান্য করে ইটভাটা তৈরি করছেন এক প্রভাবশালী। ভাটা তৈরির কাজ যেন থামছেই না। 

বুধবার (২৫ অক্টোবর) দুপুরে সরেজমিনে গেলে এমন চিত্রের দেখা মেলে দিনাজপুর জেলার বোচাগঞ্জ উপজেলার শতগ্রাম ইউনিয়নের মাহেরপুর ভাদুয়ারি পুকুর নামক এলাকায়।  

নির্মাণাধীন উক্ত ভাটার দক্ষিণ পাশে রয়েছে মাহেরপুর কলেজ ও উত্তর পাশে রয়েছে বনহরা হামিদিয়া দাখিল মাদ্রাসা।

ভাটার চারপাশ ঘিরে ফসলি জমি ও একাধিক বসতবাড়িও রয়েছে। ভাটা সম্মুখে একটি সড়ক রয়েছে যার উপর দিয়েই যাতায়াত করতে হয় মাদ্রাসা ও কলেজগামী শিক্ষার্থীসহ গ্রামবাসীদের।  

স্থানীয় বাসিন্দা আমিনুল ইসলাম বাংলানিউজকে জানান, ভাটা নির্মাণের শুরু থেকেই স্থানীয়রা ও দুটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান কর্তৃপক্ষ বিভিন্ন অফিসে লিখিত ও মৌখিক অভিযোগ দেন। অভিযোগ দিলেও ফসলি জমিতে বীরদর্পে ইটভাটা নির্মাণ করছেন মালিকরা।
আইন অমান্য করে চলছে ইটভাটা নির্মাণ  তিনি জানান, গত পাঁচ মাস আগে প্রায় তিন হাজার গ্রামবাসী গণ স্বাক্ষর দিয়ে প্রথমে উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা, পরে জেলা প্রশাসক বরাবর লিখিত অভিযোগ দায়ের করে অনুলিপি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাকে (ইউএনও) দেওয়া হয়। অভিযোগ দিলে জেলা প্রশাসক (ডিসি) স্থানীয় উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাকে (ইউএনও) নির্মাণাধীন ইটভাটা বন্ধে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিতে বলেন। ডিসির নির্দেশ উপেক্ষা করে তারপরও কোনো এক অদৃশ্য শক্তির বলে ফসলি জমি বিনষ্ট করে ইটভাটা নির্মাণের কাজ চলছে। ভাটা নির্মাণের শুরু থেকে বর্তমান পর্যন্ত উপজেলা প্রশাসনের ভূমিকা নিরব ও প্রশ্নবিদ্ধ।  

সরেজমিনে ইটভাটায় গেলে চোখে পড়ে কাজ চলছে ধুমধামে। ইটভাটার ম্যানেজার শহিদুর রহমানের কাছে ভাটা নির্মাণের অনুমোদন কোন দপ্তর থেকে নেওয়া হয়েছে জানতে চাইলে তিনি বাংলানিউজকে বলেন, ভাটার অনুমোদনের জন্য রংপুর বিভাগীয় অফিসে ও দিনাজপুর জেলা প্রশাসকের কাছে আবেদন করা হয়েছে। এখনো অনুমোদন মেলেনি। অত্যন্ত আত্মবিশ্বাসের সঙ্গে বলেন, তবে দ্রুত অনুমোদন পাওয়া যাবে।
আইন অমান্য করে চলছে ইটভাটা নির্মাণ  ইটভাটা মালিক ঠাকুরগাঁও জেলার পীরগঞ্জ উপজেলার বৈরচুনা ইউনিয়নের জগন্নাথপুর গ্রামের আব্দুল হামিদের ছেলে সাদেকুল ইসলামের সঙ্গে যোগাযোগ করার চেষ্টা করেও পাওয়া যায়নি।  

এব্যাপারে বোচাগঞ্জ উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা বাসুদেব রায় বাংলানিউজকে বলেন, ফসলি জমির উপর কোনো মতেই ভাটা নির্মাণ হতে পারেনা। এজন্য সরকার আইন করেছে। স্থানীদের অভিযোগ পেয়ে উপজেলা ভূমি কর্মকর্তা ও ইউএনওকে অবহিত করা হয়েছে। ভাটা উচ্ছেদের জন্য যথাযথ পদক্ষেপ গ্রহণের ব্যবস্থা নিতে বলেছি।  

এ ব্যাপারে বোচাগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. সারওয়ার মোর্শেদ বাংলানিউজকে বলেন, ভাটা স্থাপনের জন্য পরিবেশ দপ্তর ও জেলা প্রশাসকের অনুমোদন লাগবে। এই নির্মাণাধীন ভাটার কোনো অনুমোদন নেই।  জেলা প্রশাসক মহোদয় ভাটাটি বন্ধ করার নির্দেশ দিলে ভাটার মালিক পক্ষকে ডেকে বন্ধ করতে বলা হয়েছে। আমার জানামতে ভাটার নির্মাণ কাজ বন্ধ রয়েছে। তবে কাজ চললে মোবাইলকোর্ট পরিচালনা করে বন্ধ করে দেওয়া হবে।

বাংলাদেশ সময়: ১৩০৩ ঘণ্টা, অক্টোবর ২৬, ২০১৭
বিএস 
 

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।