বুধবার (২৪ অক্টোবর) আন্তর্জাতিক ফ্রেশওয়াটার ডলফিন দিবস উদযাপন উপলক্ষে আয়োজিত এক আলোচনা সভায় বক্তারা একথা বলেন।
বন ও জলবায়ু পরিবর্তন বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রী আনিসুল ইসলাম মাহমুদ বলেন, পরিবেশ-প্রতিবেশ সংরক্ষণের উপলব্ধি আগে আমাদের ছিল না।
‘আগে নদীতে অনেক ডলফিন ছিল। এখন সে সংখ্যা কমে গেছে। বর্তমানে ৭ হাজারের মতো ডলফিল রয়েছে। এই স্তন্যপায়ী প্রাণীটি কমে যাওয়ার অর্থই হচ্ছে নদীদূষণ হচ্ছে এবং মাছ কমে যাচ্ছে। ডলফিনের খাবার হচ্ছে চিংড়িসহ অন্য মাছ। ’
মন্ত্রী বলেন, এসব আমাদের রক্ষা করতে হবে। অন্যথায় ভবিষ্যৎ প্রজন্ম সংকটের মধ্যে পড়বে। এজন্য আইন মেনে চলতে হবে। ডলফিন কমে যাওয়ার কারণগুলোর অন্যতম হচ্ছে- মাছ মনে করে মেরে ফেলা বা জালে আটকানো, বিষ প্রয়োগে অন্য মাছ ধরা, পানিদূষণ ইত্যাদি। এসব করা যাবে না।
উপমন্ত্রী আব্দুল্লাহ আল ইসলাম জ্যাকব বলেন, ডলফিন রক্ষায় অভয়ারণ্যের আয়তন প্রয়োজনে বাড়াতে হবে। জেলেদের সচেতনতা বাড়ানো প্রয়োজন।
মন্ত্রণালয়ের সচিব আব্দুল্লাহ আল মহসীন বলেন, শুশুক তথা ডলফিন আগে অনেক নদীতে ছিল। এরা খুব উপকারী স্তন্যপায়ী প্রাণী। তাই এদের রক্ষা করতে হবে।
অধ্যাপক ড. মনিরুল ইসলাম এক গবেষণাপত্রে বলেন, ভারত, মিয়ানমার, নেপাল, কম্বোডিয়ার চেয়ে বাংলাদেশের নদীতে ডলফিনের সংখ্যা অনেক কমে গেছে। যার অন্যতম কারণ হচ্ছে ফাঁস জাল দিয়ে মাছ ধরা। এটা বন্ধ করতে হবে। আইনে আছে, ডলফিন বা তিমি হত্যা করলে সর্বোচ্চ তিন বছরের কারাদণ্ড বা তিন লাখ টাকা জরিমানা করা। একই অপরাধ পুনরায় করলে সর্বোচ্চ পাঁচ লাখ টাকা জরিমানা বা পাঁচ বছরের কারাদণ্ড।
এছাড়া এসব প্রাণীর দেহের কোনো অংশ সংগ্রহ, দখল বা কেনাবেচা বা পরিবহন করলে সর্বোচ্চ দুই বছরের কারাদণ্ড বা একলাখ টাকা জরিমানা। একই অপরাধ পুনরায় করলে চার বছরের কারাদণ্ড বা দুই লাখ টাকা জরিমানা করার বিধান আইনে রয়েছে।
আইনটির কঠোর প্রয়োগ করতে হবে।
এই অধ্যাপক বলেন, ডলফিনের তেল দিয়ে অনেক অসুখের চিকিৎসা হয়, এমন প্রচলিত ধারণা রয়েছে। কিন্তু এটি আসলে ভ্রান্ত ধারণা। এ নিয়ে সবার মধ্যে সচেতনতা বাড়ানো দরকার।
মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘর মিলনায়তনে বন বিভাগ আয়োজিত আলোচনাসভার সভাপতিত্ব করেন চিফ কনজারভেটর। এতে অন্যদের মধ্যে ইউএনডিপি'র কান্ট্রি ডিরেক্টর সুদীপ্ত মুখার্জী উপস্থিত ছিলেন।
বাংলাদেশ সময়: ২০৩৮ ঘণ্টা, অক্টোবর ২৪, ২০১৮
ইইউডি/এএ