শিকারীর আক্রমণসহ কয়েকটি কারণে কোনো না কোনো পাখিকে হারাতে হয় একটি পা। এরপর এক পায়েই ভর করে শুরু হয় তার জীবন চলার পথ।
এমনই এক-পেয়ে একটি ভাত শালিকের জীবনসংগ্রাম দেখেছেন অর্থ মন্ত্রণালয়ের স্কিল্ডস ফর অ্যামপ্লোয়মেন্ট ইনভেস্টমেন্ট প্রোগ্রামের নির্বাহী পরিচালক এবং পাখি আলোকচিত্রী জালাল আহমেদ। সে গল্প তিনি করছিলেন বাংলানিউজের সঙ্গে।
জালাল বলেন, এই জীবনযোদ্ধার সঙ্গে আমার দেখা ঢাকার পূর্বাচলে। সেখান থেকেই ছবিগুলো তোলা। প্রথম ছবিতে পাখিটির বসার ভঙ্গি ছিলো অস্বাভাবিক, সন্দেহ হচ্ছিলো। যখন নিচে নামলো তখন দেখলাম যে একটি পা নেই। পূর্ণবয়স্ক এই ভাত শালিক জীবনযুদ্ধে টিকে আছে ভালোভাবেই। ভাত শালিক এর ইংরেজি নাম Common Myna। আলোকচিত্রী জালাল আহমেদ বলেন, এই পাখিগুলো এক পা নিয়ে শিকারীর হাত থেকে নিজেকে রক্ষা করে প্রকৃতিতে টিকে রয়েছে। কোনো অসুস্থ বা দুর্বল প্রাণী প্রকৃতিতে টিকে থাকতে পারে না। কেউ না কেউ তাকে খাবেই। কারণ, দুর্বল হলেই সে ধরা পড়বে। প্রকৃতি বা জঙ্গলে যে প্রাণীরা থাকবে তাকে সুস্থ-সবল থাকতে হবে।
জঙ্গলের নিয়ম হলো- যে উপযুক্ত সে-ই বেঁচে থাকবে। দুর্বলরা বেঁচে থাকতে পারবে না। এগুলোর মাঝে এই শালিক পাখিটা কিন্তু ব্যতিক্রম। এক পা হারিয়েও এই শালিকটা কিন্তু বেশ সুস্থ-সবল। অসুস্থ বা দুর্বল মনে হচ্ছে না তাকে- বলেন জালাল আহমেদ।
পাখিটিকে প্রথম দেখার বিষয়ে তিনি বলেন, গাড়ি থেকে পাখিটির উপর চোখ পড়তেই দেখলাম সে গুটিয়ে বসে রয়েছে। এভাবে বসে থাকার মানে তার শারীরিক দুর্বলতা বা অস্বাভাবিকতা রয়েছে। আমি গাড়িতে বসেই এই ছবি দু’টো তুলেছি। পাখিটি রাস্তার পাশে লাউমাচায় বসেছিলো। তারপর সে নিচে নামলো এবং ছবি তুললাম।
এমন পাখিদের এক পা কাটা যাওয়ার কারণ হলো হয়তো তার পায়ে কামড় দিয়ে ধরেছিল বেজি বা অন্য কোনো প্রাণী। তখন সে নিজেকে ছুটিয়ে ফেলেছে। কিন্তু তার পা-টা ছিঁড়ে গেছে। আবার তার পায়ে মানুষের মাথার চুল বেঁধে গিয়ে ধীরে ধীরে সেই পা-টা কেটে যেতে পারে।
বাংলাদেশ সময়: ১২৫৩ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ০৮, ২০১৮
বিবিবি/এএটি