এই দুই বিশেষ পাখির নাম ‘ফুলঝুরি’ (Flowerpecker) ও ‘মৌটুসি’ (Sunbird)। এই দুই প্রজাতিই আকার-আকৃতিতে প্রায় সমান।
পাখি দু’টিকে আমাদের চারপাশে খুব একটা দেখা যায় না; দু’চারটি প্রজাতির ছাড়া। এ প্রজাতির পাখিরা আমাদের চারপাশের গাছগাছালিসহ বনজঙ্গলের গাছের উপর ঘুরে বেড়ায়। বিশেষ করে নির্জনবনের উঁচু গাছের উপর বিচরণের সময় বিভিন্ন বুনো ফল খেলে এদের বীজ গাছে ফেলে দেয়। সেই বীজ থেকেই ফের গাছ জন্মায়। তৈরি হয় গাছের উপরে গাছ। কেউ কেউ একে ‘আগাছা’ বলে থাকেন। এই গাছগুলোর মধ্যে নিহিত রয়েছে ফুলঝুরি আর মৌটুসিদের জীবনবৃত্তান্ত। অথবা ফুলঝুরি আর মৌটুসিদের মমতার পরশ রয়েছে সেই চিরসবুজ বনের গাছের উপরের গাছগুলোতে।
বাংলাদেশ বার্ড ক্লাবের প্রাক্তন ভাইস প্রেসিডেন্ট এবং পাখি গবেষক তারেক অণু বাংলানিউজকে বলেন, ফুলঝুরি আর মৌটুসিরা ছোট পাখি। অনেকেই এদের দেখতে পায় না। এর কারণ হলো এরা কম ঘনবসতি এলাকায় খুব বেশি আসে না। বাংলাদেশে প্রায় ৬ প্রজাতির ফুলঝুরি আর ৭ প্রজাতির মৌটুসি পাওয়া যায়।
তিনি আরো বলেন, লাউয়াছড়ায় এদের গাছের উপরে বেশি দেখা যায়। ওরা কখনো নিচে নামে না। গাছের উপরে এক প্রকারের গাছ বা আগাছা ওরা তৈরি করেছে। এ পাখিগুলো ওই গাছের উপরেই খায়; গাছের উপরেই ঘুমায়। শিশির থেকে পানি সংগ্রহ করে খেয়ে থাকে।
‘গাছের উপরে যে গাছ জন্মলাভ করেছে তা এই পাখিগুলোর জন্য। এটা অনেকটা বাগানের মতো। এই বাগানের ফুলের মধু খেয়ে তারা উপকৃত হয়; আবার এই ফুলগুলো তারাই ছড়ায়। ’
এটা দারুণ ব্যাপার যে- একটি ছোট পাখি তার প্রকৃতির প্রতিও দারুণ দায়বদ্ধতা পালন করছে। সে কেবল ফুলের মধু খেয়ে চলে যাচ্ছে না; প্রকৃতি সম্প্রসারণ ও প্রতিবেশ ব্যবস্থা বিস্তারে দারুণ একটি ভূমিকা পালন করে চলেছে, বলেন বাংলাদেশ বার্ড ক্লাবের প্রাক্তন ভাইস প্রেসিডেন্ট এবং পাখি গবেষক তারেক অণু।
বাংলাদেশ সময়: ০৯০৮ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ১৩, ২০১৯
বিবিবি/জেডএস