ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ১১ পৌষ ১৪৩১, ২৬ ডিসেম্বর ২০২৪, ২৩ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

জলবায়ু ও পরিবেশ

‘ফণী’ ৭শ কিমি দূরে, এগোচ্ছে ২৭ কিমি গতিতে

স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২০০৮ ঘণ্টা, মে ২, ২০১৯
‘ফণী’ ৭শ কিমি দূরে, এগোচ্ছে ২৭ কিমি গতিতে বিসিজেএফ নেতাদের সঙ্গে মতবিনিময় সভায় দুর্যোগ ও ত্রাণ প্রতিমন্ত্রী ডা. মো. এনামুর রহমান/ছবি: বাংলানিউজ

ঢাকা: ঘূর্ণিঝড় ‘ফণী’র ভিতরের গতি ঘণ্টায় ১৮০ কিলোমিটার এবং তা ২৭ কিলোমিটার গতিতে উপকূলের দিকে এগোচ্ছে বলে জানিয়েছেন দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী ডা. মো. এনামুর রহমান।

বৃহস্পতিবার (২ মে) সচিবালয়ে বিভিন্ন দুর্যোগে গণমাধ্যমের করণীয় বিষয়ে বাংলাদেশ ক্লাইমেট চেঞ্জ জার্নালিস্ট ফোরামের (বিসিজেএফ) নেতাদের সঙ্গে মতবিনিময় সভায় একথা জানান প্রতিমন্ত্রী।
 
বিকেল ৩টার দিকে প্রতিমন্ত্রী সাংবাদিকদের বলেন, ফণী বাংলাদেশ উপকূল থেকে ৭শ কিলোমিটার দূরে রয়েছে।

বর্তমানে এটি উত্তর-পশ্চিম দিকে ধাবিত হচ্ছে, যদি এভাবে অগ্রসর হতে থাকে তাহলে পশ্চিমবঙ্গে আঘাত করার প্যাটার্ন দুর্বল হয়ে যাবে।
 
‘এটি এখন ঘণ্টায় ২৭ কিলোমিটার গতিতে এগিয়ে আসছে। ঘূর্ণিঝড়ের ভিতরের বাতাসের গতিবেগ ১৮০ কিলোমিটার। আবহাওয়া দপ্তরের তথ্য অনুয়ায়ী, এটি বাংলাদেশের খুলনা ও সাতক্ষীরা অঞ্চলে শুক্রবার সন্ধ্যা ৬টার মধ্যে আঘাত হানবে। ’
 
প্রতিমন্ত্রী বলেন, যদি আমাদের খুলনা ও সাতক্ষীরা উপকূলে আঘাতও করে তারপরেও ক্ষতির পরিমাণ কম হবে। কিন্তু আশঙ্কা করা হচ্ছে এটি দিক পরিবর্তন করে উত্তর অথবা উত্তর-পূর্ব দিকে টার্ন নিতে পারে। যদি সেটা হয় তাহলে আমাদের উপকূলীয় অঞ্চল ক্ষতিগ্রস্ত হবে।
 
তবে যেভাবে অগ্রসর হচ্ছে এটি চট্টগ্রামে আক্রান্ত হলেও কক্সবাজারে আক্রান্ত হওয়ার কোনো সম্ভাবনা নেই বলে জানান প্রতিমন্ত্রী।
 
কক্সবাজারের রোহিঙ্গাদের জন্য প্রস্তুতি আছে কিনা- জানতে চাইলে প্রতিমন্ত্রী বলেন, উখিয়াতে যে আমাদের সাইক্লোন সেল্টারগুলো আছে সেখানে তাদের পাঠানো হবে। যেহেতু বেশিরভাগ বসতি পাহাড়ের উপরে এবং উপকূল থেকে বেশ দূরে, তাদের ঝুঁকিটা অনেক কম।
 
সরকারের প্রস্তুতি নিয়ে প্রতিমন্ত্রী বলেন, আমরা এটি মোকাবিলার জন্য মন্ত্রণালয়, অধিদপ্তর ও জেলা-উপজেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে ছুটি বাতিল করেছি। সবাইকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে ২৪ ঘণ্টা কন্ট্রোলরুমে থাকার জন্য। আমরা ৫৬ হাজার সিপিবি ভলান্টিয়ারকে মাঠে নামিয়েছি, তারা মাইকিং করছে। তাদের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে মহাবিপদ সংকেত দেওয়ার সঙ্গে সঙ্গে জনগণকে আশ্রয়কেন্দ্রে নিয়ে যাওয়ার জন্য কাজ করবে।

‘চার হাজার ৭১টি আশ্রয়কেন্দ্র বসবাসের জন্য প্রস্তুত করা হয়েছে। সোলার কানেকশন ও সুপেয় পানির জন্য ৩০টি ট্রাক সরবরাহ করা হয়েছে। প্রত্যেক জেলায় ২শ টন করে চাল ও ২ হাজার প্যাকেট করে শুকনা খাবার এবং জেলা প্রশাসকের কাছে ৫ লাখ টাকা নগদ দেওয়া হয়েছে। ’  
 
আর্মড ফোর্সের ডিভিশন, ফায়ার সার্ভিস ও রেড ক্রিসেন্ট প্রস্তুত রয়েছে। উপকূলীয় এলাকায় নৌবাহিনী ও কোস্টগার্ড প্রস্তুত রয়েছে। আশ্রয়কেন্দ্রগুলো এতোটাই প্রটেক্টেড যে এখানে আসলে প্রাণহানি হয় না।
 
‘আমাদের যে প্রস্তুতি রয়েছে তাতে প্রাণহাণির ক্ষতির সুযোগ নেই। কিন্তু ঝড়ের গতিবেগ যদি ১৮০-২০০ কিলোমিটার হয় তাহলে ঘরবাড়ি অবশ্যই বিধ্বস্ত ও ফসলের ক্ষতি হবে। সেগুলো প্রতিরোধের সামর্থ্য কোনো দেশেরই নেই। ’
 
সিনিয়র সচিব শাহ্‌ কামাল বলেন, মোংলা ও পায়রাবন্দর, বিশেষ করে বরিশাল এবং খুলনা বিভাগের মধ্যে ৭ নম্বর বিপদ সংকেত দিয়েছি। এরপরের সংকেত আসবে মহাবিপদ সংকেত। আমরা মহাবিপদ সংকেতের সামনে এসেছি।
 
বিপদ সংকেত না মহাবিপদ সংকেত থাকবে তা নির্ধারণ করা হবে বিকেলের আরেকটি সভায়। মহাবিপদ সংকেত দেওয়া হলে যেসব সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে সেগুলো রিভিউ করা হবে বলে জানান প্রতিমন্ত্রী।
 
বাংলাদেশ সময়: ১৬০৫ ঘণ্টা, মে ০২, ২০১৯
এমআইএইচ/এএ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।