তাই পার্কের এসব নতুন অতিথিদের দেখতে এবারের ঈদের ছুটিতে যেতে পারেন বঙ্গবন্ধু সাফারি পার্কে। সবকিছু মিলিয়ে পর্যটক-দর্শনার্থীদের ভ্রমণে নতুন মাত্রা যোগ করবে এমন আশা করা যায়।
দর্শনার্থীদের কাছে পার্কের আকর্ষণ বাড়াতে অতি সম্প্রতি এখানে আনা হয়েছে ১০টি ময়ূর, আফ্রিকান গ্রে-প্যারাট, এশিয়াটিক ভাল্লুকের দু’টি ছানা, দীর্ঘ ১৬ ফুট লম্বা সোনালী অজগর ও একটি চিত্রা হরিণ। এসব নতুন অতিথি ছাড়াও পার্কে আছে দেশি-বিদেশি বন্যপ্রাণীর সমাহার।
পার্ক কর্তৃপক্ষ জানায়, প্রাকৃতিকভাবে সৃজিত প্রায় ৯শ হেক্টর বনভূমি নিয়ে দেশের প্রথম বঙ্গবন্ধু সাফারি পার্কটি আগে থেকেই অনেক সমৃদ্ধ। এখানে রয়েছে দেশের প্রথম প্রকৃতি বীক্ষণকেন্দ্র, নয়নাভিরাম দীর্ঘ লেক, কুমিরের বেষ্টনী। এছাড়াও রয়েছে বাঘ, সিংহ, জেব্রা, উল্টালেজী বানর, ঈগল পাখি, জলহস্তি, ওয়াইল্ডবিষ্ট, ভল্লুক, কালো শিয়াল, বিভিন্ন প্রজাতির হরিণ, বানর, লামচিতা, হাতি, তমগরুসহ (গয়াল) কয়েকশ প্রজাতির বন্যপ্রাণী ও পশু-পাখি। এসবের পাশাপাশি এবারের ঈদ উপলক্ষে পার্কে প্রায় ১৫টি দেশি বিদেশি বন্যপ্রাণী ও পশুপাখি নতুন করে যোগ হয়েছে।
সাফারি পার্কের বন্যপ্রাণী পরিচারক ড্রেসার দিদারুল ইসলাম বাংলানিউজকে বলেন, ঈদে আগত দর্শনার্থীদের বাড়তি আনন্দ দেবে পার্কের বন্যপ্রাণী ও পশু-পাখিগুলো। সেজন্য নতুন করে এসব প্রাণীর বেষ্টনীগুলোকে নতুন করে সাজানোর কাজ করছি আমরা।
স্থানীয় সংগীত শিল্পী সন্তোষ কুমার সুশীল বাংলানিউজকে বলেন, পার্কটির প্রাকৃতিক সৌন্দর্য অসাধারণ। আমরা আশা করছি এবারের ঈদে এসব নতুন অতিথি দর্শনার্থীদের কাছে বাড়তি বিনোদন যোগাবে।
তিনি বলেন, চকরিয়ায় বিনোদনকেন্দ্র বলতে এই একটিই। এখানে সাফারি পার্কটি ছাড়া বিনোদনের আর কোনো ব্যবস্থাই নেই। তাই এই পার্কটির প্রতি কর্তৃপক্ষের আরো বেশি নজর দেওয়া উচিত।
কলেজশিক্ষক ও সংগীতশিল্পী রাহগীর মাহমুদ বলেন, প্রতিদিন হাজার হাজার পর্যটক কক্সবাজার সমুদ্রসৈকত ভ্রমণে আসেন। এবারের ঈদেও কক্সবাজারে লাখো পর্যটকের সমাগম হবে। কক্সবাজার ভ্রমণে আসা পর্যটকেরা চাইলেই কিন্তু এ পার্কটি ঘুরে যেতে পারেন। সমুদ্র ভ্রমণের পাশাপাশি বন্যপ্রাণী ও পশুপাখি দেখার আনন্দ কম নয়। বিশেষ করে শিশুদের জন্য পার্কটি একটি আকর্ষণ।
বঙ্গবন্ধু সাফারি পার্কের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (তত্ত্বাবধায়ক) মো. মাজহারুল ইসলাম চৌধুরী বাংলানিউজকে বলেন, মূলত ঈদকে সামনে রেখে, দর্শনার্থী ও পর্যটকদের বাড়তি আনন্দ দিতে এসব নতুন প্রাণীগুলো আনা হয়েছে। আশা করছি, এবারের ঈদে পার্কে দর্শনার্থীদের ভ্রমণ আগের বছরের চেয়ে অনেক আনন্দদায়ক হবে। এজন্য পার্কটির অবকাঠামো পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতার পাশাপাশি পার্কটিকে নতুন করে সাজানোর কাজ আমরা সম্পন্ন করছি।
এমনকি দীর্ঘ একবছর পর্যন্ত সাফারি পার্কের গেট পাবলিক প্রতিষ্ঠানকে ইজারা দেওয়া বন্ধ থাকলেও সরকারি নিয়ম-কানুন এবং শর্তাবলী মেনে রিজভী এন্টারপ্রাইজ নামে একটি প্রতিষ্ঠানকেই নতুন ইজারাদারা নিয়োগ করা হয়েছে বলে যোগ করেন তিনি।
সাফারি পার্কের প্রকল্প পরিচালক এবং চট্টগ্রাম বন্যপ্রানী ও প্রকৃতি সংরক্ষণ বিভাগ চট্টগ্রাম অঞ্চলের বিভাগীয় বনকর্মকর্তা (ডিএফও) আবু নাছের মো. ইয়াছিন নেওয়াজ বাংলানিউজকে বলেন, পার্কটিকে ঢেলে সাজানোর পাশাপাশি প্রতিবছরই যেন দর্শনার্থীরা নতুন কিছু দেখতে পান, সেই চেষ্টা আমাদের থাকে। পার্কে আগত পর্যটক ও দর্শনার্থীদের বাড়তি আনন্দ দিতে নতুন নতুন বন্যপ্রাণী ও পশু-পাখির সমাহার ঘটানো হয়েছে।
ঢাকা-চট্টগ্রামসহ দেশের যেকোনো স্থান থেকে এসি-নন এসি বাসে করে চকরিয়া ডুলাহাজারা বঙ্গবন্ধু সাফারি পার্কে আসা যায়। আবার কক্সবাজার থেকেও মাইক্রোবাস, বাস, সিএনজিচালিত অটোরিকশায় করে আপনি সাফারি পার্ক ভ্রমণে আসতে পারেন। কক্সবাজার হয়ে এলে ঢাকা-চট্টগ্রাম কিংবা দেশের অন্যান্যস্থান থেকে বিমানেও আসা যায়। তবে এক্ষেত্রে রাত্রিযাপন কক্সবাজার করলেই ভালো হয়।
বাংলাদেশ সময়: ১০৪৫ ঘণ্টা, জুন ০৩, ২০১৯
এসবি/এএটি