স্থানীয়দের অভিযোগ, প্রতিদিনই আবাসিক এলাকা, পাড়া-মহল্লাসহ শিল্প-কারখানার বর্জ্য ট্রাক, পিকআপ ভ্যান ও ভ্যানগাড়ি করে ওই মহাড়কগুলোর পাশে ফেলা হচ্ছে। ঢাকার খুব কাছে সাভার প্রথম শ্রেণীর পৌরসভা হওয়া সত্ত্বেও ময়লা ফেলার নির্দিষ্ট ডাম্পিং ব্যবস্থা না থাকায় এমনটা হচ্ছে।
রোববার (৩০ জুন) সাভার ও আশুলিয়া মহাসড়কগুলো ঘুরে দেখা যায়, ঢাকা-আরিচা মহাসড়কের সাভারের রাজখাল, ওলাইল, জোরপোল ব্রিজ, রেডিও কলোনি, গেন্ডা, প্রান্তিক, নবীনগর-চন্দ্রা মহাসড়কের পলাশবাড়ী, বাইপাইল বাসস্ট্যান্ডের পাশে শ্রীপুর, চক্রবর্তী, বারইপাড়া এবং টঙ্গী-আশুলিয়া-ইপিজেড সড়কের আশুলিয়া ব্রিজ, জিরাবোসহ বিভিন্ন স্থানে ময়লার স্তুপ। যা দেখে মনে হবে- ছোটো খাটো পাহাড়। যত দিন বাড়ছে তত বেড়েই চলছে যেখানে-সেখানে ময়লার স্তুপ। এতে বাতাসে দুর্গন্ধ ছড়িয়ে নষ্ট হচ্ছে পরিবেশ। চরম হুমকির মুখে পড়ছে জনস্বাস্থ্য।
নবীনগর-চন্দ্রা মহাসড়কের পলাশবাড়ী সড়কের পাশ দিয়ে প্রতিদিন হেঁটে স্কুলে যাতায়াত করে হাসিব। বাংলানিউজকে সে বলে, এ সড়কের পাশে ময়লার স্তুপ থাকায় প্রতিদিনই স্কুলে যাতায়াতের সময় নাক চেপে ধরে কয়েক মিনিটের পথ যেতে হয়। দুর্গন্ধে দম বন্ধ হয়ে যাওয়ার মতো অবস্থা হয়।
চক্রবর্তীর একটি পোশাক কারখানার শ্রমিক শেফালী। তার বাসা নবী টেক্সটাইল এলাকায়। প্রতিদিনই তাকে ময়লার স্তুপের পাশ দিয়ে হেঁটে যাতায়াত করতে হয়। বাংলানিউজকে শেফালী বলেন, প্রতিদিনই বাসা থেকে বেড়িয়ে কর্মস্থলে যাতায়াতের পথে ময়লার স্তুপের পাশ দিয়ে নাক চেপে ধরে যেতে হয়। নিঃশ্বাস আটকাইয়া রাখতে রাখতে দমই বন্ধ হইয়া যাইতে চায়। কিছুদিন আগে দুর্গন্ধে অসুস্থও হয়ে পরছিলাম।
ওয়েলকাম পরিবহনের বাসের চালক আরিফ বাংলানিউজকে বলেন, এমনিতে সড়কের পাশে ময়লা ফেলায় প্রচুর গন্ধ। এছাড়া ময়লার স্তুপে দেয়া হয় আগুন। পুরো রাস্তা তখন ধোয়ায় অন্ধকার হয়ে যায়, দেখা যায় না কিছুই। মাঝে মধ্যে এমন অন্ধকার হয় যে, বাস অন্য গাড়ির ওপর উঠে যাওয়ার উপক্রম হয়। এতে যেকোনো সময় বড় দুর্ঘটনা ঘটার সম্ভাবনা থাকে। কোনো কোনো সময় ময়লা সড়কের ওপরেই ফেলে রাখা হয়। ফলে সড়কের প্রশস্ততা কমে যায়। ময়লা পচে রাস্তা পিচ্ছিল হয়ে থাকায় দুর্ঘটনার আশঙ্কা থাকে।
সাভার উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) পারভেজুর রহমান বাংলানিউজকে বলেন, একটি নিরাপদ, সুস্থ ও সুন্দর পরিবেশ নিশ্চিত করতে যেখানে-সেখানে ময়লা ফেলা বন্ধ করতে হবে। দুর্গন্ধে মানুষ অতিষ্ঠ হয়ে উঠছে। আশা করছি, মহাসড়কের পাশে ময়লা না ফেলানোর জন্য দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
সাভার পৌরসভার মেয়র আব্দুল হাজী গণি বাংলানিউজকে বলেন, আমার পৌর এলাকার কোনো ময়লা সড়কের পাশে ফেলা হয় না। সাভারের কমলাপুরে ডাম্পিং ব্যবস্থা থাকায় সেখানে ময়লা পাঠানো হয়। মহাসড়কের পাশে রাতের আঁধারে বাসা বাড়ির ময়লাসহ দোকানেরও ময়লা ফেলা হয়। এরই মধ্যে আমরা সড়কের বিভিন্ন স্থানে ময়লা না ফেলার জন্য সাইনবোর্ড টানিয়ে দিয়েছি। তাছাড়া সড়কের পাশে যেনো ময়লা ফেলা না হয়, সে জন্য চিঠিও দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু কোনো কাজ হয়নি।
মানিকগঞ্জ সড়ক ও জনপথ (সওজ) বিভাগের আশুলিয়ার নয়ারহাট শাখার নির্বাহী প্রকৌশলী আতিকুল ভূঁইয়া বাংলানিউজকে বলেন, সড়কের বিভিন্ন জায়গায় ময়লা ফেলায় ওই সব এলাকায় যানবাহন চলাচলে সমস্যা হচ্ছে। সড়কের পাশে ময়লা না ফেলার অনুরোধ করে সাইনবোর্ড লাগিয়ে দেওয়া হয়েছে। শিগগিরই এ সমস্যার সমাধান হবে বলে তিনি আশাবাদ ব্যক্ত করেন।
বাংলাদেশ সময়: ১৮২৫ ঘণ্টা, জুলাই ০১, ২০১৯
এসআরএস