ঢাকা, রবিবার, ৮ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৪ নভেম্বর ২০২৪, ২২ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

জলবায়ু ও পরিবেশ

বড় বন্যার শঙ্কা নেই

ইকরাম-উদ দৌলা, সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২২৪৫ ঘণ্টা, জুলাই ৫, ২০১৯
বড় বন্যার শঙ্কা নেই আবহাওয়া অধিদফতর

ঢাকা: দেশের বিভিন্ন স্থানে বৃষ্টিপাতের ধারণ অনুযায়ী, এবারের বর্ষায় বড় ধরনের বন্যার শঙ্কা দেখছে না আবহাওয়া কার্যালয়। তবে মৌসুমী বৃষ্টিপাতের কারণে চলতি মাসের মধ্যভাগ ও শেষার্ধে দেশের উত্তরাঞ্চল ও উত্তর-পূর্বাঞ্চলে মাঝারি আকারের বন্যা হতে পারে।

আবহাওয়া অধিদফতর এমন পূর্বাভাস দিয়ে জানাচ্ছে, জুলাই মাসে সারাদেশে স্বাভাবিক বৃষ্টিপাত হবে। আর দক্ষিণাঞ্চলে স্বাভাবিক অপেক্ষা বেশি বৃষ্টিপাত হবে।

বঙ্গোপসাগরে ২ থেকে ৩টি বর্ষাকালীন লঘুচাপ সৃষ্টি হতে পারে। এর অন্তত একটি নিম্নচাপে পরিণত হবে।

দৈনিক গড় বাষ্পীভবন ৩ দশমিক ২৫ মিলিমিটার থেকে ৪ দশমিক ২৫ মিলিমিটার এবং গড় উজ্জ্বল সূর্যকিরণ দেবে ৫ দশমিক ৫ ঘণ্টা থেকে ৬ দশমিক ৫ ঘণ্টা।

অপরদিকে আগস্টের পূর্বাভাসে সংস্থাটি জানাচ্ছে, দেশব্যাপী স্বাভাবিক বৃষ্টিপাত হবে। তবে বঙ্গোপসাগরে ১ থেকে ২টি নিম্নচাপ সৃষ্টি হতে পারে।

আবহাওয়া অধিদফতরের পরিচালক সামছুদ্দিন আহমেদের তৈরি এ পূর্বাভাসটি ইতোমধ্যে কৃষি মন্ত্রণালয়সহ সংশ্লিষ্ট সব মন্ত্রণালয় ও দফতরে পাঠানো হয়েছে।

বর্তমানে মৌসুমী বায়ু বাংলাদেশের ওপর মোটামুটি সক্রিয় এবং উত্তর বঙ্গোপসাগরে মাঝারি অবস্থায় আছে। এ অবস্থায় সোমবার (০৮ জুলাই) পর্যন্ত বৃষ্টিপাত একটু বাড়তে পারে বলে জানায় ওই সংস্থা।

বাংলাদেশ পানি উন্নয়ন বোর্ডে (বাপাউবো) বন্যা পূর্বাভাস ও সতর্কীকরণ কেন্দ্র বলছে, দেশের উত্তরাঞ্চল ও উত্তর-পূর্বাঞ্চলের বর্তমানে বন্যা হওয়ার কোনো সুযোগ নেই। তবে উত্তর-পূর্বাঞ্চলের সুরমা ও কুশিয়ারা নদীর পানি বাড়ছে। কমছে ব্রহ্মপুত্র, যমুনা, গঙ্গা-পদ্মার পানি।  এছাড়া দেশের কোনো নদীর পানি বিপদসীমার ওপরে নেই।

দেশের নদ-নদীগুলোর ৯৪ পর্যবেক্ষণ স্টেশনের মধ্যে বাপাউবো ৬১টি পয়েন্টে পানি হ্রাস পাচ্ছে আর বাড়ছে ২৫টি পয়েন্টে। অপরিবর্তিত আছে ৬টি পয়েন্টের পানি, দু’টি স্টেশন বন্ধ আছে।

পানি বাড়ার ও হ্রাসের যে পরিসংখ্যান দেখা গেছে, তাতে সুরমা ও কুশিয়ারার পানি বাড়লেও বিপদসীমার বেশ নিচে রয়েছে। আগামী পাঁচদিনের পূর্বাভাসে বলা হয়েছে, এই সময়ে দেশের কোনো নদ-নদীর পানিই বিপদসীমার ওপরে যাবে না। বরং ভয়ঙ্কর হয়ে ওঠা নদ-নদীগুলোর পানিও বিপদসীমার অনেক নিচে থাকবে।

ব্রহ্মপুত্রের পানি ময়মনসিংহ, জামালপুর, চিলমারীতে যথাক্রমে বিপদসীমার ৪৬২ সেন্টিমিটার, ৩৫২ সেন্টিমিটার. ও ১২৮ সে.মি. নিচে থাকবে। যমুনার পানি আরিচা, পোড়াবাড়ী, সিরাজগঞ্জ, কাজীপুর, সারিয়াকান্দি ও বাহাদুরাবাদে যথাক্রমে বিপদসীমার ১৯০ সে.মি. ১৭৭ সে.মি. ১৩৩ সে.মি. ১২৫ সে.মি. ১০৯ সে.মি ও ৮৯ সে.মিটারের নিচে থাকবে। এছাড়া তিস্তা, ঘাঘট, করতোয়া, পদ্মা, মেঘনা, সুরমা ও কুশিয়ারার পানিও বিপদসীমার অন্তত ১০০ সেন্টিমিটার নিচে থাকবে। এই ‍অবস্থাই বিরাজ থাকবে জুলাইয়ের মধ্যভাগ পর্যন্ত।

পানির সমতলের উচ্চতা বিপদসীমার ৫০ সেন্টিমিটারের মধ্যে চলে এলে, সেই অবস্থাকে সতর্ক হিসেবে ধরে নেয় বন্যা পূর্বাভাস ও সতর্কীকরণ কেন্দ্র।

তবে জুলাইয়ের মধ্য ও শেষভাগে মৌসুমী বায়ু বাংলাদেশের ওপর প্রবলভাবে সক্রিয় হলে বৃষ্টিপাত বাড়ার সম্ভাবনা রয়েছে। একই কারণে ভারতের আসাম, মেঘালয়ে বৃষ্টিপাত বাড়লে পাহাড়ি ঢলে দেশের উত্তর ও উত্তর-পূর্বাঞ্চলের নদ-নদীর পানি বাড়বে। এজন্যই শেষার্ধে দেশের উত্তর-পূর্বাঞ্চলে মধ্যমেয়াদি বন্যার আভাস দেখছেন আবহাওয়াবিদরা।

বাংলাদেশ সময়: ১৮৩২ ঘণ্টা, জুলাই ০৫, ২০১৯
ইইউডি/এএটি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।