২৪ ঘণ্টার আবহাওয়ার পূর্বাভাসে বলা হয়েছে, সারাদেশে রাত ও দিনের তাপমাত্রা প্রায় অপরিবর্তিত থাকতে পারে। মেঘলা আকাশসহ সারাদেশের আবহাওয়া শুষ্ক থাকতে পারে।
রোববার (২২ ডিসেম্বর) সকাল ৮টায় রাজশাহীর সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ৯ দশমিক ৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস রেকর্ড করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন রাজশাহী আবহাওয়া অফিসের জ্যেষ্ঠ পর্যবেক্ষক আনোয়ারা বেগম।
তিনি বলেন, সকাল ৮টার পর থেকে আর তাপমাত্রা কমেনি। ফলে এটিই আজকের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা।
এক প্রশ্নের জবাবে আবহাওয়া কর্মকর্তা আনোয়ারা বেগম বলেন, গত ১৯ ডিসেম্বর থেকে রাজশাহীতে মৃদু শৈত্যপ্রবাহ শুরু হয়েছে। এর মধ্যে গত ১৯ ডিসেম্বর রাজশাহীতে সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয় ৯ দশমিক ৪ ডিগ্রি সেলসিয়াস। ২০ ডিসেম্বর সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয় ৯ দশমিক ৩ ডিগ্রি সেলসিয়াস। আর ২১ ডিসেম্বর তাপমাত্রা ২ দশমিক ৬ ডিগ্রি বেড়ে দাঁড়ায় ১১ দশমিক ৯ ডিগ্রি সেলসিয়াসে। তবে ঘন কুয়াশার কারণে শনিবার (২১ ডিসেম্বর) থেকে রাজশাহীতে সূর্যের মুখ দেখা যায়নি। ফলে শনিবার তাপমাত্রা বাড়লো শীতের প্রকোপ কমেনি। এর ওপর রোববার আবারও তাপমাত্রা এক লাফে ২ দশমিক ৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস নেমে এক অঙ্কের ঘরে অবস্থান নিয়েছে। এছাড়া রোববারও সকাল থেকে ঘন কুয়াশায় ঢাকা পড়েছে রাজশাহী। এতে কনকনে ঠাণ্ডা অনুভূত হচ্ছে বলে জানান এ আবহাওয়া কর্মকর্তা।
এক প্রশ্নের জবাবে রাজশাহী আবহাওয়া অফিসের ভারপ্রাপ্ত আবহাওয়া কর্মকর্তা আবহাওয়াবিদ কামাল উদ্দিন বলেন, এসময় কুয়াশা পড়া অনেকটায় স্বাভাবিক। সাধারণত এ কুয়াশা কাটলে শীতের তীব্রতা বাড়ে। ফলে শীত আরও বাড়বে।
ভোর থেকে ঘন কুয়াশার কারণে বর্তমানে আশপাশের কিছু দেখা যাচ্ছে না। কুয়াশাচ্ছন্ন হয়ে পড়েছে গোটা রাজশাহী শহর ও গ্রামাঞ্চল। ভোর থেকে প্রধান সড়কগুলোতে হেড লাইট জ্বালিয়ে যানবাহন চলাচল করতে দেখা যাচ্ছে।
টানা শৈত্যপ্রবাহের ও ঘন কুয়াশার কারণে সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত সূর্যের তাপ থাকছে না। তাই হাড় কাঁপানো শীতে কাবু হয়ে পড়ছেন শহরের পথে-ঘাটে থাকা ছিন্নমূল মানুষ। দিন-রাত সমানতালে বইছে হিমালয় ছুঁয়ে আসা ঠাণ্ডা বাতাস। এতে রাতে খোলা জায়গায় থাকা মানুষগুলোর জীবন দুর্বিষহ হয়ে উঠেছে। এরই মধ্যে রাজশাহী জেলা প্রশাসন কম্বল বিতরণ শুরু করলেও চাহিদার তুলনায় তা অপ্রতুল বলে জানিয়েছেন শীতার্ত মানুষরা।
এদিকে, এমন ঘন কুয়াশা দীর্ঘস্থায়ী রূপ নিলে রাজশাহীর কৃষিতে ক্ষতি হবে বলে আশঙ্কা করছেন এ অঞ্চলের কৃষকরা। এ সময়টায় এসে কুয়াশার কারণে বরাবরই বোরো বীজতলা ও রবি ফসল ক্ষতিগ্রস্ত হয়। বিশেষ করে বোরোতে কোল্ড ইনজুরি ও আলুতে লেটব্লাইট (পচন) দেখা দেয়। তবে পরস্থিতি মোকাবিলায় এবার প্রস্তুতি রয়েছে বলে জানিয়েছে কৃষি বিভাগ।
রাজশাহী কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের উপ-পরিচালক শামছুল হক বাংলানিউজকে বলেন, এ বছর শুরু থেকেই শীতের প্রকোপ কম। তবে মাঝ সময়ে এমন আবহাওয়া রবি শস্যের জন্য কাল হয়ে ওঠে। তাই কৃষি বিভাগের কর্মকর্তারা সতর্ক রয়েছেন। বর্তমানে জেলার পাশাপাশি উপজেলা ও ইউনিয়ন পর্যায়ের কৃষি কর্মকর্তারা মাঠ পরিদর্শন করছেন। ফসলকে নিরাপদ রাখতে কৃষকদের সবধরনের পরামর্শ দিচ্ছেন তারা।
এছাড়া মোবাইল অ্যাপস ও হট লাইনের মাধ্যমে ২৪ ঘণ্টাই কৃষি তথ্য সেবা নিচ্ছেন কৃষকরা।
বাংলাদেশ সময়: ১০২১ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ২২, ২০১৯
এসএস/আরবি/