ঢাকা, সোমবার, ৯ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৫ নভেম্বর ২০২৪, ২৩ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

জলবায়ু ও পরিবেশ

পরিবেশ বিষয়ে আইন থাকলেও প্রয়োগ হচ্ছে না: সাবের হোসেন

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০৮০৭ ঘণ্টা, জানুয়ারি ৫, ২০২০
পরিবেশ বিষয়ে আইন থাকলেও প্রয়োগ হচ্ছে না: সাবের হোসেন

ঢাকা: পরিবেশ বন ও জলবায়ু পরিবর্তন বিষয়ক সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি সাবের হোসেন চৌধুরী বলেছেন, পরিবেশ বিষয়ে আমাদের অনেক আইন থাকলেও সেগুলো ঠিক মতো প্রয়োগ করা হচ্ছে না। 

শনিবার (৪ জনুয়ারি) সন্ধ্যায় রাজধানীর ধানমন্ডিতে স্টামফোর্ড ইউনিভার্সিটির ক্যাম্পাসে পরিবেশ বিষয়ক এক সম্মেলনের সমাপনী অধিবেশনে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন সাবের হোসেন চৌধুরী।

‘বাংলাদেশ পরিবেশ আন্দোলনের রাজনৈতিক কার্যকারিতা: চ্যালেঞ্জ ও প্রতিকার’ শীর্ষক দিনব্যাপী এ সম্মেলনের আয়োজন করে বাংলাদেশ পরিবেশ আন্দোলন (বাপা) ও বাংলাদেশ পরিবেশ নেটওয়ার্ক (বেন)।

 

সম্মেলনে পরিবেশ বিষয়ক বিভিন্ন আইনের কথা উল্লেখ করে সাবের হোসেন চৌধুরী বলেন, আমাদের বড় একটা অর্জন যে, আমরা পরিবেশ বিষয়ে একটি ধারা আমাদের সংবিধানে সংযোজন করেছি। পৃথিবীর অনেক দেশের সংসদ ক্লাইমেট চেঞ্জের জরুরি অবস্থার কথা বলেছে। বাংলাদেশের সংসদই হচ্ছে পৃথিবীর একমাত্র সংসদ, যে সংসদে ক্লাইমেট এমারজেন্সি থেকেও আরো বৃহৎ আকারে পরিবেশের বিষয় অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে।  

‘পরিবেশ বিষয়ে অনেক ধরনের কার্যক্রম হচ্ছে। পরিবেশ বিষয়ে আদালতেরও ইতিবাচক দৃষ্টিভঙ্গি লক্ষ্যণীয়। অনেক সময় দেখা যাচ্ছে, পরিবেশের কোনো ইস্যুতে সরকারের যে পদক্ষেপ নেওয়া উচিৎ ছিল, তেমন পদক্ষেপ নেওয়া না হলে আদালত এগিয়ে আসছেন। বর্তমানে গণমাধ্যমও পরিবেশ বিষয়ে অনেক সোচ্চার। পরিবেশ বিষয়ে আমাদের অনেক ধরনের আইন রয়েছে, যেমন- শব্দ দূষণের ক্ষেত্রেও আইন আছে। যদিও তা কার্যকর করা যাচ্ছে না। আমাদের ভেবে দেখা দরকার আইন কার্যকর করতে কী  করা উচিৎ। ’ 

সংসদীয় স্থায়ী কমিটির এ সভাপতি বলেন, পরিবেশ বিষয়ে আমাদের দ্বৈতনীতি গ্রহণ করতে দেখা যায়। জলবায়ু পরিবর্তনের ফলে আমরা ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছি। বিশ্বের যেসব দেশ দূষণ ঘটাচ্ছে আমাদেরকে তারা ক্ষতিপূরণ দেবে। কিন্তু, যখন বাংলাদেশের ভিতরে কোনো প্রতিষ্ঠান দূষণ করছে, তাদের কিন্তু আমরা ক্ষতিপূরণের বিষয়ে বলছি না।  

‘ভ্যালুয়েশন অব ইকো সার্ভিসেস আমরা কোনো দিন নির্ণয় করি না। এটা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ একটি বিষয়।  সুন্দরবনের যে পরিমাণ কার্বন মজুদ রয়েছে তার মূল্য প্রায় ২০ হাজার কোটি টাকা। আমরা যদি আমাদের প্রাকৃতিক সম্পদগুলোর মূল্য নির্ণয় না করতে পারি তাহলে কিভাবে বুঝবো আমাদের প্রাকৃতিক সম্পদ বাড়ছে না কমছে। আমরা চেষ্টা করছি আমাদের প্রাকৃতিক সম্পদগুলোর ভ্যালুয়েশন করতে। ’ 

পরিবেশ আন্দোলন কর্মীদের উদ্দেশ্যে সাবের হোসেন বলেন, আপনারা শুধু সমস্যাগুলোকে চিহ্নিত করবেন না। পাশাপাশি সমস্যা সমাধানে আমরা কী করতে পারি সেই বিষয়টাও চিন্তা করুন। কীভাবে সমাধান করবেন সেই জবাব খুঁজতে গেলে এর সঙ্গে অনেক কিছু চলে আসবে। কোন বিষয়কে আমরা বেশি মূল্যায়ন বা অগ্রাধিকার দেবো সেটা নির্ভর করছে আমাদের পলিসির ওপর। আপনারা দেখেন নীতিমালায় কোনো ঘাটতি আছে কিনা। একটা হচ্ছে আইন, আরেকটা হচ্ছে রুলস। রুলসের মধ্যে আমরা অনেক কিছুই যুক্ত করতে পারি।  

জলবায়ু আন্দোলনে সক্রিয় সুইডিশ কিশরী গ্রেটা থানবার্গের কথা উল্লেখ করে সাবের হোসেন বলেন, মাদ্রিদে জলবায়ু সম্মেলনে গ্রেটা থানবার্গের সঙ্গে আমার কথা হয়েছে। আমি তাকে একটাই প্রশ্ন করেছি তুমি কেন এই আন্দোলন করছো? সে বলেছিল, আমি এটা করছি আমাদের ভবিষ্যতের জন্য। গ্রেটা থানবার্গের এই চিন্তা আমরা নতুন প্রজন্মের কাছে তুলে ধরতে পারি। তাদেরকে পরিবেশ বিষয়ে আরো বেশি সচেতন করতে পারি। তাদের তো আমরা কোনো আন্দোলনের জন্য নামতে বলছি না। নিজেদের ভবিষ্যৎ ও অস্তিত্ব রক্ষার জন্য নতুন প্রজন্মকে পরিবেশ বিষয়ে অংশগ্রহণ করানো দরকার।

অধিবেশনে সভাপতিত্ব করেন বাপার সহ-সভাপতি রাশেদা কে চৌধুরী। এটি পরিচালনা করেন- বাপার সাধারণ সম্পাদক শরীফ জামিল। সাবের হোসেন ছাড়াও এত বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন- ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ চ্যাপ্টারের নির্বাহী পরিচালক ইফতেখারুজ্জামান, স্টামফোর্ড ইউনিভার্সিটির উপাচার্য মোহাম্মদ আলী নকী, বাপার নির্বাহী সহ-সভাপতি মো. আব্দুল মতিন প্রমুখ।

বাংলাদেশ সময়: ০৩০৬ ঘণ্টা, জানুয়ারি ০৫, ২০২০
আরকেআর/এমএএম/এইচজে

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।