সোমবার (০৩ ফেব্রুয়ারি) পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে ঢাকা ও এর চারপাশের বায়ুদূষণ রোধ ও হ্রাস করার লক্ষ্যে নীতিমালা প্রণয়নের লক্ষ্যে গঠিত উচ্চ ক্ষমতাসম্পন্ন কমিটির সভায় এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন সচিব জিয়াউল হাসানের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সভায় প্রণীত খসড়া নীতিমালা এবং ঢাকা শহরের চারপাশের বায়ুদূষণ হ্রাসে করণীয় বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।
ঢাকা শহরের চারপাশের বায়ুদূষণ হ্রাস করার লক্ষ্যে পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়ের সচিবকে জরুরি ভিত্তিতে কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণ করার লক্ষ্যে একটি উচ্চ ক্ষমতাসম্পন্ন কমিটি গঠন করার জন্য হাইকোর্ট গত ২৬ নভেম্বর নির্দেশনা দেন।
সভা সূত্রে জানা গেছে, পরিবেশ দূষণের জন্য অন্যতম দায়ী ইটভাটার সংখ্যা হ্রাসের লক্ষ্যে ইটের পরিবর্তে ব্লকের ব্যবহারের সরকারি টেন্ডার শিডিউলে অন্তর্ভুক্ত করা; রাস্তা, বিভিন্ন ইউটিলিটি সার্ভিস ও ভবন নির্মাণ, পুনর্নির্মাণ ও মেরামত কার্যক্রম চলাকালে অস্থায়ী বেষ্টনী দিয়ে নির্মাণ সামগ্রী ঢেকে রাখতে হবে এবং নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে এসব কাজ সমন্বয়ের মাধ্যমে বাস্তবায়ন করতে হবে; দ্রুততম সময়ে ক্ষতিগ্রস্ত রাস্তা মেরামত, নির্মাণ চলাকালে পর্যাপ্ত পানি ছিটানোর বিষয়টি প্রকল্প প্রস্তাবে অন্তর্ভুক্ত করা; ট্রাক বা লরিতে উন্মুক্ত অবস্থায় বালু, মাটি, সিমেন্টসহ অন্যান্য নির্মাণ সামগ্রী পরিবহনের মাধ্যমে পরিবেশ দূষণকারীদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ; রাস্তার পাশে পৌরবর্জ্য সংরক্ষণ ও পোড়ানো কঠোরভাবে নিয়ন্ত্রণ করার ব্যবস্থাও নীতিমালায় অন্তর্ভুক্ত করতে হবে।
আরো জানা যায়, ইটভাটাসহ পরিবেশ দূষণকারী ধোয়া নিঃসরণকারী যানবাহন বন্ধে নিয়মিত মোবাইল কোর্ট পরিচালনা; অধিক পুরাতন এবং তুলনামূলক বেশি নিঃসরণকারী যানবাহনের বিরুদ্ধে নিঃসরণ কর আরোপ; রাজউকের মাধ্যমে ভবনের নকশা অনুমোদনের সময় বায়ুদূষণ রোধে শর্তারোপ; হাতে ঝাড়ু দিয়ে রাস্তা পরিষ্কারের পরিবর্তে ভ্যাকুয়াম সুইপিং ট্রাক ব্যবহার করতে হবে।
এছাড়া বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ও কলোনির ময়লা ও বর্জ্য রাস্তায় ফেলানো ও পোড়ানো বন্ধ করা এবং চিকিৎসা বর্জ্য (ব্যবস্থাপনা ও প্রক্রিয়াজাতকরণ) বিধিমালা, ২০০৮ কঠোরভাবে প্রয়োগ করার বিষয়টি নীতিমালায় অন্তর্ভুক্ত করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।
এবিষয়ে সচিব জিয়াউল হাসান বলেন, সংশ্লিষ্ট সব মন্ত্রণালয়, বিভাগ ও সংস্থা সর্বোপরি জনগণের স্বতঃস্ফূর্ত ও কার্যকরী অংশগ্রহণ ছাড়া বায়ুদূষণ রোধ করা কষ্টসাধ্য। বর্তমান ও ভবিষ্যৎ প্রজন্মকে একটি দূষণমুক্ত এবং বাসযোগ্য পরিবেশ উপহার দিতে সংশ্লিষ্ট সবাইকে আন্তরিকভাবে কাজ করার আহ্বান জানান তিনি।
সভায় অন্যদের মধ্যে পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব (পরিবেশ) মাহমুদ হাসান, অতিরিক্ত সচিব (জলবায়ু পরিবর্তন) মিজানুল হক চৌধুরী, ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা শাহ্ মো. ইমদাদুল হক, পরিবেশ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক ড. এ,কে,এম রফিক আহাম্মদসহ উচ্চ ক্ষমতাসম্পন্ন কমিটির সদস্য হিসেবে বিভিন্ন দপ্তর/সংস্থার প্রতিনিধিরা উপস্থিত ছিলেন।
বাংলাদেশ সময়: ২০৫৭ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ০৩, ২০২০
জিসিজি/জেডএস