ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ১১ পৌষ ১৪৩১, ২৬ ডিসেম্বর ২০২৪, ২৩ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

জলবায়ু ও পরিবেশ

বুধবার ভোরে ‘মহাবিপদ’ সংকেত

স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৬১৬ ঘণ্টা, মে ১৯, ২০২০
বুধবার ভোরে ‘মহাবিপদ’ সংকেত আম্পানের প্রভাবে উত্তাল বঙ্গোপসাগর। ছবি: সোহেল সরওয়ার

ঢাকা: বাংলাদেশের উপকূলের দিকে ধেয়ে আসা সুপার সাইক্লোন আম্পানের কারণে বুধবার (২০ মে) ভোর ৬টা থেকে মহাবিপদ সংকেত দেখানো হবে বলে জানিয়েছেন দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ প্রতিমন্ত্রী ডা. এনামুর রহমান।

মঙ্গলবার (১৯ মে) বিকেলে সচিবালয়ে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়ে ভিডিও কনফারেন্সে যুক্ত হয়ে সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ কথা জানান।

প্রতিমন্ত্রী এনামুর রহমান বলেন, ২০ মে (বুধবার) ভোর ৬টায় বাংলাদেশ উপকূল দিয়ে ঘূর্ণিঝড়টি প্রবেশ করবে।

ওই সময়ে আর কাউকে আশ্রয়কেন্দ্রে নেওয়া সম্ভব হবে না।

তিনি বলেন, আমরা সব প্রস্তুতি সম্পন্ন করেছি। কোন জেলায় কতজনকে আশ্রয়কেন্দ্রে নেওয়া হয়েছে তার জন্য কন্ট্রোল রুম থেকে জানছি। রাত ৮টার মধ্যে সবাইকে আশ্রয়কেন্দ্রে নিয়ে আসা সম্ভব হবে বলে আশা করেন প্রতিমন্ত্রী।

তিনি আরও বলেন, একদিকে করোনা আরেক দিকে ঘূর্ণিঝড় আম্পান। আপনারা জানেন, বাংলাদেশ প্রাকৃতিক দুর্যোগ মোকাবিলায় রোল মডেল। এসওডি অনুযায়ী আন্তঃমন্ত্রণালয় মিটিং করেছি।

প্রতিমন্ত্রী বলেন, ঘূর্ণিঝড়টি চট্টগ্রাম সমুদ্রবন্দর থেকে ৮১০ কিলোমিটার, কক্সবাজার থেকে ৭৬৫ কিলোমিটার, মোংলা থেকে ৬৯৫ কিলোমিটার এবং পায়রাবন্দর থেকে ৬৯০ কিলোমিটার দূরে অবস্থান করছে। বাতাসের সর্বোচ্চ গতি এখন ২৪৫ কিলোমিটার প্রতি ঘণ্টায়, এ কারণে সুপার সাইক্লোন বলা হয়েছে।

তিনি বলেন, এখন আমাদের প্রধান লক্ষ্য হলো উপকূলবাসী যারা ঝুঁকিপূর্ণ ঘরবাড়িতে অবস্থান করছেন তাদের আশ্রয়কেন্দ্রে নিয়ে আসা। সোমবার (১৮ মে) থেকে এ কাজ শুরু হয়েছে। রাতের মধ্যে উপকূলবাসীদের আশ্রয়কেন্দ্রে নিয়ে আসার জন্য নির্দেশনা দিয়েছি। ২০ মে ভোর ৬টায় মহাবিপদ সংকেত দেখানো হবে। এ মহাবিপদ সংকেত দেখানোর পরে আর লোকজনকে বাড়িঘর থেকে আশ্রয়কেন্দ্রে আনার কোনো সুযোগ থাকবে না। ‘ঘূর্ণিঝড়টি বুধবার সন্ধ্যা ৬টার দিকে বাংলাদেশ উপকূলে আঘাত হানবে এবং বাংলাদেশ ভূ-খণ্ডের ওপর দিয়ে অতিক্রম করবে। ’

সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয় কর্মকর্তাদের মাঠে থাকতে প্রয়োজনীয় নির্দেশনা দিয়েছে জানিয়ে প্রতিমন্ত্রী বলেন, ঝড় পরবর্তী দ্রুত ক্ষয়ক্ষতি কাটিয়ে উঠতে সব মন্ত্রণালয় পরিকল্পনা গ্রহণ করা হয়েছে। মোট আশ্রয়কেন্দ্র ১২ হাজার ৭৮টি।  এতে ৫১ লাখ ৯০ হাজার ১৪৪ জন থাকতে পারবেন। তবে করোনার কারণে ২০ থেকে ২২ লাখ মানুষকে সরিয়ে আনার সিদ্ধান্ত নিয়েছি।  মাস্ক ব্যবহারের নির্দেশনা দিয়েছি।

ঘূর্ণিঝড় ‘ফণি’তে ১৮ লাখ ও বুলবুলের সময়ে ২২ লাখ মানুষকে আশ্রয়কেন্দ্রে নিয়ে আসা হয়েছিল বলেও জানান প্রতিমন্ত্রী।

মহাবিপদ সংকেতের কী অর্থ

ঝড়ের সময় আবহাওয়া অধিদপ্তরের দেওয়া সমুদ্রের ক্ষেত্রে ১১ ও নদীবন্দরের ক্ষেত্রে চারটি সংকেত নির্ধারিত আছে। এ সংকেতগুলো সমুদ্রবন্দর ও নদীবন্দরের ক্ষেত্রে ভিন্ন বার্তা বহন করে।

ঝড়ের তীব্রতা অনুযায়ী সমুদ্রবন্দরের জন্য ৮ থেকে ১০ নম্বর পর্যন্ত মহাবিপদ সংকেত দেখানো হয়।

৮ নম্বর মহাবিপদ সংকেতের অর্থ- বন্দর প্রচণ্ড বা সর্বোচ্চ তীব্রতার ঝঞ্জাবিক্ষুব্ধ ঘূর্ণিঝড়ের কবলে পড়তে পারে। ঝড়ো বাতাসের একটানা গতিবেগ ঘণ্টায় ৮৯ কিলোমিটার বা তার ঊর্ধ্বে হতে পারে। প্রচণ্ড ঝড়টি বন্দরকে বাম দিকে রেখে উপকূল অতিক্রম করবে।

৯ নম্বর মহাবিপদ সংকেতের মানে হলো- বন্দর প্রচণ্ড বা সর্বোচ্চ তীব্রতার ঝঞ্ঝাবিক্ষুব্ধ ঘূর্ণিঝড়ের কবলে পড়তে পারে। ঝড়ো বাতাসের একটানা গতিবেগ ঘণ্টায় ৮৯ কিলোমিটার বা তার ঊর্ধ্বে হতে পারে। প্রচণ্ড ঝড়টি বন্দরকে ডান দিকে রেখে উপকূল অতিক্রম করবে।

আর ১০ নম্বর মহাবিপদ সংকেতের অর্থ হলো- বন্দর প্রচণ্ড বা সর্বোচ্চ তীব্রতার ঝঞ্ঝাবিক্ষুব্ধ ঘূর্ণিঝড়ের কবলে পড়তে পারে। ঝড়ো বাতাসের একটানা গতিবেগ ঘণ্টায় ৮৯ কিলোমিটার বা তার ঊর্ধ্বে হতে পারে। প্রচণ্ড ঝড়টি বন্দরের উপর বা নিকট দিয়ে উপকূল অতিক্রম করবে।

এরপর দেখানো হয় ১১ নম্বর যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন সংকেত। এর অর্থ হলো- আবহাওয়া বিপদ সংকেত প্রদানকারী কেন্দ্রের সঙ্গে সব যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে এবং স্থানীয় কর্মকর্তা আবহাওয়া অত্যন্ত দুর্যোগপূর্ণ বলে মনে করেন।

বাংলাদেশ সময়: ১৬১৫ ঘণ্টা, মে ১৯, ২০২০
এমআইএস/আরআইএস

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।