ঢাকা: বাংলাদেশের পরিবেশ বিষয়ক ৪র্থ আন্তর্জাতিক সম্মেলন (আইসিবিএন-৪) শীর্ষক তিন দিনব্যাপী ভার্চ্যুয়াল সম্মেলন শুরু হয়েছে।
শনিবার (২৬ ডিসেম্বর) সন্ধ্যা ৬টার দিকে বাংলাদেশ পরিবেশ আন্দোলন (বাপা) ও বাংলাদেশ পরিবেশ নেটওয়ার্ক (বেন) এর যৌথ উদ্যোগে পরিবেশ বিষয়ক এ সম্মলেন শুরু হয়।
সম্মেলনের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বিশিষ্ট অর্থনীতিবিদ অধ্যাপক রেহমান সোবহান। সম্মেলনে সভাপতিত্ব করেন বাপার সভাপতি অ্যাডভোকেট সুলতানা কামাল।
সম্মেলনের ‘প্রথম সম্মিলিত সাধারণ অধিবেশনে’ প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন- পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত স্থায়ী কমিটির সভাপতি সাবের হোসেন চৌধুরী।
তিনি বলেন, পরিবেশ পরিপন্থি কোন কাজ সরকারের স্থায়ী কমিটি সমর্থন করে না। পরিবেশ আগে যে পর্যায়ে ছিল এখন তার চেয়ে অনেক ভালো অবস্থায় আছে। আমরা এসডিজির দিকে তাকালে দেখবো ২৪১টি নির্দেশনার মধ্যে ২৫টিই পরিবেশের ওপর। পরিবেশ নিয়ে আন্দোলনে যাওয়ার আগে বাপার উচিত হবে পরিবেশের বিষয়ে দেশের যুব সমাজকে সচেতন করা। বাপা যদি এসডিজির ২৫টি দিক নির্দেশনা নিয়ে কাজ করে তবে বাপা ও সরকারের মধ্যে নীতিগত কোন পার্থক্য থাকবে না।
‘২০ বছর’ পূর্তিতে এ অধিবেশনের মূল বক্তব্য যৌথভাবে উপস্থাপন করেন বেনের প্রতিষ্ঠাতা ও বাপার সহ-সভাপতি ড. নজরুল ইসলাম এবং বাপার নির্বাহী সহ-সভাপতি ও সম্মেলন প্রস্তুতি কমিটির সদস্য সচিব ডা. মো. আব্দুল মতিন। এতে আরও বক্তব্য রাখেন, যুক্তরাজ্যের গ্রিনপার্টির সদস্য জেন লেমবার্ড, সিপিবি সভাপতি মুজাহিদুল ইসলাম সেলিম, তেল-গ্যাস-খনজি সম্পদ ও বিদ্যুৎ-বন্দর রক্ষা জাতীয় কমটির সদস্য সচিব অধ্যাপক আনু মুহাম্মাদ প্রমুখ।
এই সম্মেলনে ১১টি দেশ থেকে ৪০জন পরিবেশ ও সমাজকর্মীসহ দেশি-বিদেশি বিশেষজ্ঞ, বিজ্ঞানী, গবেষক, পেশাজীবী, অর্থনীতিবিদ, শিক্ষক, সাংবাদিক, বুদ্ধিজীবী, সমাজবিজ্ঞানী, উন্নয়ন-কর্মী, জন-প্রতিনিধি, সরকারি কর্মকর্তা, উন্নয়ন-পরিবেশ ও সামাজিক সংগঠনের নেতা ও বাপার সদস্যরা, তরুণ-যুবা ও ছাত্র-ছাত্রীরা অংশ নিবেন।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে অধ্যাপক রেহমান সোবহান বলেন, আমাদের দক্ষতা ব্যবহার করে পরিবেশ আন্দোলনকে বেগবান করতে হবে। বাপা-বেন সম্মেলনের মাধ্যমে জ্ঞান ও বাস্তবতাকে একত্রিত করেছে। এ আন্দোলন সরকারের ওপর ব্যাপক প্রভাব ফেলেছে। বর্তমানে সরকার বুড়িগঙ্গাসহ দেশের অন্যান্য নদীগুলোকে উদ্ধারের চেষ্টা করছে। পরিবেশ রক্ষার আন্দোলনে যুবদের সম্পৃক্ত করতে হবে এবং তাদের মধ্যে পরিবেশের গুরুত্ব ব্যাপকভাবে ছড়িয়ে দিতে হবে।
সভাপতির বক্তব্যে সুলতানা কামাল বলেন, পরিবেশ আন্দোলন শুধুই পরিবেশকে রক্ষার আন্দোলন নয়। এ আন্দোলন মানুষের জীবন জীবিকার উন্নয়নের আন্দোলন। আমাদের এ আন্দোলন মানুষকে তাদের বসবাসযোগ্য পৃথিবী উপহার দেওয়া।
তিনি আরও বলেন, পরিবেশকে রক্ষা না করতে পারলে এর চরম মূল্য দিতে হবে। প্রকৃতির সম্পদ আহরণ করে বাঁচতে হলে প্রকৃতিকে ঠিক রাখতে হবে। বাপা-বেন শুধু পরিবেশকে রক্ষার জন্যই আন্দোলন করছে না, বরং পরিবেশ রক্ষার আন্দোলনের মাধ্যমে সাংবিধানিক অধিকার রক্ষার আন্দোলনও করে যাচ্ছে।
অধ্যাপক আনু মুহাম্মদ বলেন, দেশে ভোট এবং বাক-স্বাধীনতার অধিকার না থাকলে পরিবেশ রক্ষা করা সম্ভব নয়।
বাংলাদশে সময়: ০২০৬ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ২৭, ২০২০
আরকেআর/এমআরএ