রাজশাহী: দেশের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে বিভাগীয় শহর রাজশাহীতে। রোববার (২৭ ডিসেম্বর) রাজশাহীর সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে ৭ দশমিক ৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস।
এটি চলতি মৌসুমের এখন পর্যন্ত জেলার সর্বনিম্ন তাপমাত্রা। এর আগে গত ১৯ ডিসেম্বর রেকর্ড করা হয়েছিল ৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস। ফলে রাজশাহীর ওপর দিয়ে আজ থেকে মাঝারি শৈত্যপ্রবাহ শুরু হয়েছে। এতে প্রচণ্ড ঠাণ্ডায় বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে স্বাভাবিক জীবনযাপন। রোববার সন্ধ্যার পর শীতের হাত থেকে পরিত্রাণ পেতে ফুটপাত ও বস্তি এলাকায় খড়কুটো জ্বালিয়ে মানুষকে আগুন পোহাতে দেখা যাচ্ছে। রিকশাসহ অন্য যানবাহন চলাচল কমে এসেছে। এ অবস্থা আরও তিন থেকে চারদিন থাকতে পারে বলে জানিয়েছে রাজশাহী আবহাওয়া অফিস।
রাজশাহী আবহাওয়া অফিসের জ্যেষ্ঠ পর্যবেক্ষক দেবল কুমার মৈত্র বাংলানিউজকে জানান, রোববার রাজশাহীতে দেশের সর্বনিম্ন ৭ দশমিক ৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে। এদিন সর্বোচ্চ তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে ২৩ দশমিক ৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস। এর আগের দিন শনিবার (২৬ নভেম্বর) রাজশাহীর সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ছিল ৯ ডিগ্রি সেলসিয়াস এবং সর্বোচ্চ ২৫ দশমিক ৯ ডিগ্রি সেলসিয়াস।
ফলে গত দু’দিন থেকে রাজশাহীতে এক অংকের তাপমাত্রা বিরাজ করছে। প্রথমদিকে মৃদু শৈত্যপ্রবাহ চললেও আজ তা মাঝারি শৈত্যপ্রবাহে রূপ নিয়েছে। এতে শীতের তীব্রতা বেড়েছে।
আবহাওয়া অধিদফতরের ওয়েবসাইটে রোববার সকাল ৯টা থেকে আবহাওয়ার ২৪ ঘণ্টার পূর্বাভাসে বলা হয়েছে, সারা দেশের আবহাওয়া প্রধানত শুষ্ক থাকতে পারে। মধ্যরাত থেকে সকাল পর্যন্ত দেশের নদী অববাহিকার কোথাও কোথাও মাঝারি থেকে ঘন কুয়াশা এবং দেশের অন্যত্র হালকা থেকে মাঝারি ধরনের কুয়াশা পড়তে পারে। সারা দেশের রাত ও দিনের তাপমাত্রা প্রায় অপরিবর্তিত থাকতে পারে।
তার মতে, ডিসেম্বরের শেষভাগে উত্তরাঞ্চলে এরকম টানা শৈত্যপ্রবাহ কোথাও না কোথাও থাকেই। উত্তরের হিমেল হাওয়া আর কুয়াশার চাদরে এমন আবহাওয়া ব্যতিক্রম নয়। এই অঞ্চলের ওপর দিয়ে বয়ে চলা মৃদু থেকে মাঝারি শৈত্যপ্রাবহ আরও কয়েকদিন অব্যাহত থাকতে পারে বলেও পূর্বাভাস রয়েছে।
এদিকে হিমেল হাওয়ার কারণে রোববার সকাল থেকে কর্মজীবী মানুষকে চরম দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে। বিশেষ করে ঠাণ্ডা বাতাসের দাপটে ছিন্নমূল মানুষ সবচেয়ে বেশি দুর্ভোগে পড়েছেন।
শীতবস্ত্রের অভাবে অনেকেই ঠাণ্ডাজনিত বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত হচ্ছেন। শিশু ও বৃদ্ধরা বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত হয়ে এখন চিকিৎসার জন্য রাজশাহী মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসার জন্য ভিড় করছেন।
রাজশাহী মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের উপ-পরিচালক ডা. সাইফুল ইসলাম ফেরদৌস বাংলানিউজকে জানান, রাজশাহীর ওপর দিয়ে শনিবার থেকে শৈত্যপ্রবাহ বয়ে যাচ্ছে। এর মধ্যে বেড়েছে নবজাতক জন্মের সংখ্যাও।
ফলে বেশিরভাগ নবজাতক শিশু নিউমোনিয়াসহ ঠাণ্ডাজনিত বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত হচ্ছে। এছাড়া হাসপাতালের ইনডোর ও আউটডোর শ্বাসকষ্ট, হৃদরোগ ও কোল্ড ডায়রিয়াসহ ঠাণ্ডাজনিত বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত হয়ে রোগীরা চিকিৎসা নিতে আসছেন। তবে হাসপাতালে করোনা রোগীর সংখ্যা এখনো অনেক কম রয়েছে বলেও উল্লেখ করেন- হাসপাতালের উপ-পরিচালক।
বাংলাদেশ সময়: ১৮৫০ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ২৭, ২০২০
এসএস/এএ