বরগুনা: বরগুনার তালতলীতে আইনের তোয়াক্কা না করে ও পরিবেশগত ছাড়পত্র ছাড়া ফসলি জমিতে গড়ে তোলা হয়েছে ইটভাটা। এতে স্বাস্থ্য ঝুঁকির পাশাপাশি চরম ক্ষতির সম্মুখীন হচ্ছে পরিবেশ।
উপজেলার কড়ইবাড়ীয়া ইউনিয়নের দক্ষিণ ঝাড়াখালী গ্রামে ইটভাটায় পুড়ছে হাজার হাজার মণ কাঠ। ফলে উজাড় হচ্ছে বিপুল পরিমাণ ফলজ, ঔষধিসহ নানা প্রজাতির গাছ। লোকালয়ে এবং শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের কাছাকাছি ঝাড়ালালী গ্রামের ফসলি জমির বড় একটি অংশের উপর নির্মিত হোসেন ব্রিকস (এইচবিএ) ভাটায় ইট পোড়ানো হচ্ছে পুরোদমে।
ইট প্রস্তুত ও ভাটা স্থাপন নিয়ন্ত্রণ আইন ২০১৩ তে বলা আছে, 'আবাসিক এলাকা, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান, হাট-বাজার ও ফসলি জমির এক কিলোমিটারের মধ্যে ইটভাটা স্থাপন করা যাবে না। ' কিন্তু কাগজের নিয়মনীতির সঙ্গে বাস্তবের চিত্রের মিল পাওয়া যায়নি।
কড়ইবাড়ীয়া ইউনিয়নের ঝাড়াখালী গ্রামে দেখা গেছে, এলজিইডির রাস্তার পাশেই বিশাল ফসলি জমি দখল করে গড়ে উঠেছে হোসেন ব্রিকস (এইচবিএ) নামের ইটভাটা। সকাল-বিকেল দেদারছে চলছে ইট পোড়ানোর কাজ। ভাটাটিতে প্রায় শতাধিক শ্রমিক কাজ করছেন।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে ওই এলাকার কয়েক জন কৃষক বলেন, এই অবৈধ ইটভাটার কারণে এ এলাকার ফসলি জমি ব্যাপক হুমকির মুখে পড়েছে আশপাশের বসতবাড়ির গাছপালা মরে যাচ্ছে। এলাকায় শিশু থেকে বৃদ্ধ প্রায় মানুষের মধ্যে শ্বাসকষ্ট রোগ দেখা দিয়েছে। কিন্তু ভাটার মালিক মো. হোসেন খুব প্রভাবশালী হওয়ায় কেউ প্রতিবাদ করতে পারছেন না।
তাছাড়া এর আগেও কয়েকবার ভাটা মালিককে নামমাত্র জরিমানা করেই দায় সেরেছেন প্রশাসন।
এসব বিষয়ে ইটভাটার মালিক মো. হোসেনের সঙ্গে কথা বলতে চাইলে তিনি কোনো মন্তব্য করতে রাজি হননি।
তালতলী উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা আরিফুল ইসলাম জানান, দক্ষিণ ঝাড়াখালী গ্রামে ইটভাটার কারণে ফসলি জমি হুমকির মুখে পড়েছে। ওই এলাকার কৃষকরা তাদের জমিতে বছরে একবার ফসল চাষ করে। কিন্তু ইটভাটা বন্ধ হলে দুই বা তিন ফসলি জমিতে রূপান্তরিত করা সম্ভব এছাড়া এই ইটভাটার কারণে স্থানীয় কৃষকরা বিপাকে পড়েছেন।
তালতলী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) কায়সার হোসেন জানান, এ বিষয়ে জেলা প্রশাসক ও পরিবেশ অধিদপ্তরের সঙ্গে কথা হয়েছে তারা আসবে এবং যদি অবৈধ হয় তাহলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
এ বিষয়ে জেলা প্রশাসক হাবিবুর রহমান জানান, দ্রুতই মোবাইল কোর্টের মাধ্যমে অভিযান চালিয়ে ইটভাটাটি বন্ধ করে দেওয়া হবে।
বাংলাদেশ সময়: ০৭০০ ঘণ্টা, এপ্রিল ০১, ২০২১
আরএ