ঢাকা, শুক্রবার, ১৪ চৈত্র ১৪৩০, ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৮ রমজান ১৪৪৫

জলবায়ু ও পরিবেশ

ঘূর্ণিঝড় ‘ইয়াস’ মোকাবিলায় পটুয়াখালীতে সর্বোচ্চ প্রস্তুতি

ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৬৫০ ঘণ্টা, মে ২৪, ২০২১
ঘূর্ণিঝড় ‘ইয়াস’ মোকাবিলায় পটুয়াখালীতে সর্বোচ্চ প্রস্তুতি ফাইল ছবি

পটুয়াখালী: বঙ্গোপসাগরে সৃষ্ট ঘূর্ণিঝড় ‘ইয়াস’ মোকাবিলায় উপকূলীয় জেলা পটুয়াখালীতে সর্বোচ্চ প্রস্তুতি নিয়ে মাঠে নেমেছে জেলা প্রশাসন, সরকারি দপ্তর ও স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা। জেলায় এ পর্যন্ত ৭০২টি আশ্রয়কেন্দ্র ও দুর্যোগের সময় মানুষদের চিকিৎসা সেবায় ৮৬টি মেডিক্যাল টিম প্রস্তুত রাখা হয়েছে।

 

সোমবার (২৪ মে) সকালে জেলা দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ পূনর্বাসন কর্মকর্তা রনজিৎ কুমার সরকার বাংলানিউজকে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন। ইতোমধ্যে সাইক্লোন শেল্টারে কাজ শুরু করেছে উপজেলা প্রশাসন ও স্থানীয় জনপ্রতিনিধিরা।  

পটুয়াখালীর সিভিল সার্জন ডা. মোহাম্মদ জাহাঙ্গীর আলম শিপন বাংলানিউজকে জানান, ঘূর্ণিঝড় ইয়াস মোকাবিলায় পটুয়াখালীতে ৮৬টি মেডিক্যাল টিম প্রস্তুত রয়েছে। যারা ঘূর্ণিঝড়ের সময় মাঠ পর্যায়ে মানুষকে সেবা দেবে।  

পটুয়াখালী আবহাওয়া অফিসের ইনচার্জ মো. মাসুদ রানা বাংলানিউজকে জানান, বঙ্গোপসাগরে অবস্থানরত গভীর নিম্নচাপটি ঘূর্ণিঝড় ইয়াসে পরিণত হয়েছে। ঘূর্ণিঝড়টি সোমবার সকাল ৬টার দিকে পায়রা সমুদ্র বন্দর থেকে ৬০৫ কিলোমিটার দক্ষিণে অবস্থান করছিল। এটি আরও ঘনীভূত হয়ে উত্তর-উত্তর পশ্চিম দিকে অগ্রসর হতে পারে। পায়রা সমুদ্র বন্দর সমূহকে এক নম্বর সর্তকতা সংকেত নামিয়ে দুই নম্বর দূরবর্তী হুঁশিয়ারি সংকেত দেখাতে বলা হয়েছে।

তিনি আরও জানান, সকাল থেকে পটুয়াখালীতে প্রচণ্ড রৌদ্র রয়েছে। এখনও আওয়ারলি শুরু হয়নি। দুপুর ১২টার দিকে অবজারভেশনে রৌদ্রের তাপমাত্রার সঠিক তথ্য বলা যাবে।  

ঘূর্ণিঝড় ইয়াস মোকাবিলায় আরও নতুন নতুন আশ্রয় কেন্দ্র প্রস্তুত ও ঘোষণার কাজ চলমান। এসব আশ্রয়কেন্দ্রে ৬-৭ লাখ মানুষ আশ্রয় নিতে পারবেন। ঘূর্ণিঝড় আশ্রয় কেন্দ্রে পর্যাপ্ত বিশুদ্ধ পানি ও প্রয়োজনীয় সরঞ্জাম রাখতে বলা হয়েছে। শুকনো খাবারের ব্যবস্থা রেখেছে প্রশাসন।  

জেলা ও উপজেলায় ঘূর্ণিঝড় বিষয়ক কন্ট্রোল রুম খোলা হয়েছে। পটুয়াখালী জেলাসহ সব উপজেলায় দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা কমিটিকে এসওডি অনুযায়ী জরুরি সভা করার নির্দেশনা করেছে। চর ও দ্বীপ সমূহের ঝুঁকিপূর্ণ এলাকায় বিপদ সংকেত দেখানোর জন্য সাংকেতিক পতাকা টাঙানো ব্যবস্থা করা হয়েছে।  

এদিকে জেলা প্রশাসনের পাশাপাশি জেলা স্বাস্থ্য বিভাগের পক্ষ থেকে সাইক্লোন শেল্টারগুলোতে নিরাপদ শারীরিক দূরত্ব নিশ্চিত এবং স্বাস্থ্য সুরক্ষার জন্য প্রয়োজনীয় জনবল ও সরঞ্জামাদি সরবরাহের ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে।  

এছাড়াও দুর্যোগের আগে ও পরে জনগণের জানমালের নিরাপত্তা ও সাইক্লোন শেল্টারে নারী ও শিশুদের সুরক্ষায় কঠোর নির্দেশনা দিয়েছে পটুয়াখালীর পুলিশ সুপার (এসপি)।
সকালে পায়রা সমুদ্র বন্দরসহ পটুয়াখালী জেলায় ২ নম্বর সংকেত ঘোষণা করায় দুর্যোগ মোকাবিলার নিজেদের মধ্য যোগাযোগ ও প্রস্ততি নিচ্ছে, সিপিপি, রেড ক্রিসিন্ট, ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স এবং ফায়ার সার্ভিসের কমিউনিটি ভলান্টিয়ার টিমের সদস্যরা।

সাগরে টানা ৬৫ দিনের জন্য মাছ ধরায় নিষেধাজ্ঞা জারি থাকায় গভীর সাগরে অবস্থানরত সব মাছ ধরা নৌকা এবং ট্রলারগুলোকে আগেই নিরাপদে ফিরিয়ে আনা হচ্ছে এবং দুর্যোগ মুহূর্তে আশ্রয়কেন্দ্রে আশ্রয় নেওয়ার মানুষের খাদ্য সরবরাহের জন্য চিড়া, গুড়, বিশুদ্ধ পানিসহ মোমবাতি ও দিয়াশলাই মজুদ রাখার কাজ শুরু করেছে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা অধিদপ্তর।

বাংলাদেশ সময়: ১৬৪৫ ঘণ্টা, মে ২৪, ২০২১
এসআরএস

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।