ঢাকা, শুক্রবার, ৭ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২২ নভেম্বর ২০২৪, ২০ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

জলবায়ু ও পরিবেশ

এবার উত্তরাঞ্চলে বন্যা পরিস্থিতি অবনতির শঙ্কা

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৯৩৩ ঘণ্টা, আগস্ট ২৪, ২০২১
এবার উত্তরাঞ্চলে বন্যা পরিস্থিতি অবনতির শঙ্কা

ঢাকা: প্রায় এক সপ্তাহ ধরে দেশের মধ্যাঞ্চলে বন্যা পরিস্থিতির অবনতির পর বর্তমানে কিছুটা স্থিতিশীল হয়েছে। তবে এবার উত্তরাঞ্চলের বন্যা পরিস্থিতি অবনতির শঙ্কা দেখা দিয়েছে।

পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) বন্যা পূর্বাভাস ও সতর্কীকরণ কেন্দ্র জানিয়েছে, উত্তর ও উত্তর-পূর্বাঞ্চলের নদ-নদীর পানি এখন বাড়ছে। অতি বন্যাপ্রবণ তিস্তা ও ব্রহ্মপুত্রের পানি বিপৎসীমা অতিক্রমের আভাস রয়েছে। ফলে আগামী সপ্তাহ নাগাদ দেশের উত্তরাঞ্চলের বন্যা পরিস্থিতির অবনতি হতে পারে।

পূর্বাভাস সঠিক হলে ব্রহ্মপুত্র-তিস্তার পানি নিচে নেমে মধ্যাঞ্চলের বন্যা পরিস্থিতি আরও দীর্ঘায়িত হবে। বর্তমানে পদ্মা, মেঘনা, যমুনাসহ ছয় নদীর পানি নয় স্থানে বিপৎসীমা অতিক্রম করেছে। পদ্মার পানি গোয়ালন্দে বিপৎসীমার ৫৩ সেন্টিমিন্টার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। আগের দিনের চেয়ে যা ৩ সেন্টিমিটার বেশি। প্রতিদিনই রাজবাড়ীর এই পয়েন্টে কয়েক সেন্টিমিটার করে পানির সমতল বাড়ছে। শরীয়তপুরের সুরেশ্বর পয়েন্টে পদ্মার পানি প্রবাহিত হচ্ছে বিপৎসীমার ২৮ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে, যা আগের দিনের চেয়ে ১২ সেন্টিমিটার বেশি। এছাড়া ভাগ্যকূলে এই নদীর পানি বিপৎসীমার ৬ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।

অপরদিকে আত্রাইয়ের পানি সিরাজগঞ্জের বাঘাবাড়িতে বিপৎসীমার ২০ সেন্টিমিটার, গড়াই নদীর পানি কুষ্টিয়ার কামারখালীতে ৮ সেন্টিমিটার, পাবনার মথুরায় যমুনার পানি ৩ সেন্টিমিটার, ধলেশ্বরীর পানি টাঙ্গাইলের এলাসিনে ১৬ সেন্টিমিটার,বং যমুনার পানি মানিকগঞ্জের আরিচায় ৫ সেন্টিমিটার এবং মেঘনার পানি চাঁদপুরে ১৯ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।

পাউবো জানিয়েছে, ব্রহ্মপুত্র-যমুনা নদ-নদীসমূহের পানি সমতল স্থিতিশীল আছে। যদিও বুধবার (২৫ আগস্ট) নাগাদ ব্রহ্মপুত্রের পানি সমতল বাড়তে পারে। তবে,  যমুনা নদীর পানির সমতল স্থিতিশীল থাকতে পারে। সেসঙ্গে গঙ্গা নদীর পানির সমতল হ্রাস পাচ্ছে ও পদ্মা নদীর পানির সমতল স্থিতিশীল আছে, যা অব্যাহত থাকতে পারে।  

পূর্বাভাসে আরও বলা হয়েছে দেশের উত্তর-পূর্বাঞ্চলের প্রধান নদীসমূহের পানির সমতল বৃদ্ধি পাচ্ছে, যা আগামী বৃহস্পতিবার (২৫ আগস্ট) পর্যন্ত অব্যাহত থাকতে পারে। বুধবারের (২৪ আগস্ট) মধ্যে পাবনা, মানিকগঞ্জ, রাজবাড়ী, ফরিদপুর ও শরিয়তপুর জেলার নিম্নাঞ্চলের বন্যা পরিস্থিতি স্থিতিশীল থাকতে পারে। আর বৃহস্পতিবারের মধ্যে তিস্তা নদী ডালিয়া পয়েন্টে এবং সুরমা নদী কানাইঘাট পয়েন্টে বিপৎসীমা অতিক্রম করতে পারে।

বন্যা পূর্বাভাস ও সতর্কীকরণ কেন্দ্রের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. আরিফুজ্জামান ভূঁইয়া জানিয়েছেন, বাংলাদেশ ও ভারতের আবহাওয়া অধিদপ্তরের গাণিতিক মডেলের তথ্যানুযায়ী, আগামী শুক্রবার নাগাদ দেশের উত্তরাঞ্চল, উত্তর-পূর্বাঞ্চল এবং তৎসংলগ্ন ভারতের হিমালয় পাদদেশীয় পশ্চিমবঙ্গ, আসাম ও মেঘালয় প্রদেশের বিভিন্ন স্থানে মাঝারি থেকে ভারী বৃষ্টিপাতের সম্ভাবনা আছে। এর ফলে এসব অঞ্চলের তিস্তা, ধরলা, দুধকুমার, ব্রহ্মপুত্র এবং আপার মেঘনা অববাহিকার প্রধান নদীসমূহে পানি সমতল সময় বিশেষে দ্রুত বাড়তে পারে।

পাউবো জানিয়েছে, বিভিন্ন নদ-নদীতে তাদের পর্যবেক্ষণাধীন ১০৯টি স্টেশনের মধ্যে মঙ্গলবার (২৪ আগস্ট) পানির সমতল বেড়েছে ৬৮টিতে স্টেশনে, কমেছে ৩৮টিতে। আর অপরিবর্তিতত আছে তিনটিতে। সেই সঙ্গে বিপৎসীমার ওপর আছে নয়টি স্টেশনের পানির সমতল।

বাংলাদেশ সময়: ১৯৩২ ঘণ্টা, আগস্ট ২৪, ২০২১
ইইউডি/এএটি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।