বরিশাল: বরিশালসহ দক্ষিণাঞ্চলের বিভিন্ন নদীর পানি বিপৎসীমার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হয়েছে।
আগের ২৪ ঘণ্টায় বিপৎসীমার ওপরে যতটুকু ছিল সর্বশেষ ২৪ ঘণ্টায় অনেক নদীর পানি তারও অধিক উচ্চতায় বেড়েছে।
বরিশাল পানি উন্নয়ন বোর্ডের জলানুসন্ধান বিভাগের উপ-সহকারী প্রকৌশলী মো. মাসুম জানান, বরিশাল জেলার কীর্তনখোলা নদীর পানি বিপৎসীমার ১৭ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে, ভোলা খেয়াঘাট এলাকার তেঁতুলিয়া নদীর পানি ২৫ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে, দৌলতখান উপজেলার সুরমা ও মেঘনা নদীর পানি বিপৎসীমার ৮৩ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে, তজুমদ্দিন উপজেলার সুরমা ও মেঘনা নদীর পানি ১ দশমিক ৭ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে, ঝালকাঠির বিশখালী নদীর পানি ১৭ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে, পটুয়াখালীর মির্জাগঞ্জ উপজেলার বুড়িশ্বর/পায়রা নদীর পানি ২৪ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে, বরগুনার বিশখালী নদীর পানি ৪০ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে, পাথরঘাটা উপজেলার বিশখালী নদীর পানি ৮৭ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে, পিরোজপুরের বলেশ্বর নদীর পানি ৬ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে ও উমেদপুরের কঁচা নদীর পানি ১৮ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।
এদিকে বরিশালে গত ২৪ ঘণ্টায় মাঝারি ও ভারী বৃষ্টিপাত হয়েছে। এতে জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হয়েছে বিভিন্ন এলাকায়। পাশাপাশি নদ নদীর পানি বিপৎসীমা অতিক্রম করায় নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়েছে।
বৃহস্পতিবার (১১ আগস্ট) বিকেলে বরিশাল আবহাওয়া অধিদপ্তরের জ্যেষ্ঠ পর্যবেক্ষক মাসুদ রানা রুবেল বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
তিনি বলেন, বিকেল ৩টা পর্যন্ত বরিশালে ৪৫ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে। যা ভারী বৃষ্টি হিসেবে ধরা হয়। ২৩ থেকে ৪৩ মিলিমিটার পর্যন্ত মাঝারি বৃষ্টিপাত, যেটা গত বুধবার (১০ আগস্ট) রেকর্ড করা হয়েছিল। এছাড়া গত ২৪ ঘণ্টায় ১৫ থেকে ২০ নটিক্যাল মাইল বাতাসের গতিবেগ ছিল, যা ৩০ থেকে ৪০ নটিক্যাল মাইল পর্যন্ত বাড়তে পারে। এছাড়া নদীবন্দরে ২ নম্বর হুঁশিয়ারি সংকেত ও সমুদ্র বন্দরে ৩ নম্বর স্থানীয় সতর্কতা সংকেত জারি করা হয়েছে।
মাসুদ রানা বলেন, আগামী ৭২ ঘণ্টা বৃষ্টিপাত থাকবে। দক্ষিণাঞ্চলের নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়েছে অস্বাভাবিক জোয়ারের কারণে। এছাড়া উপকূলীয় এলাকায় ২ থেকে ৪ ফুটের অধিক জলোচ্ছ্বাস হতে পারে।
বঙ্গোপসাগরে সৃষ্ট লঘুচাপ স্থলভাগে ওঠে গেছে। বায়ুচাপের তারতম্য ও মৌসুমি বায়ু সক্রিয় থাকায় এমন আবহাওয়ার সৃষ্টি হয়েছে বলে জানান আবহাওয়া অধিদপ্তরের জ্যেষ্ঠ্য পর্যবেক্ষক।
অপরদিকে কীর্তনখোলা নদীর পানি বিপৎসীমা অতিক্রম করায় বরিশাল নগরের বিভিন্ন এলাকা পানিতে তলিয়ে গেছে। হাঁটু সমান পানি নিয়ে চলাচল করতে হচ্ছে নগরবাসীকে। খাল ও ড্রেন দিয়ে নদীর পানি ওঠছে সড়কগুলোতে। পানিবন্দি হয়ে পড়েছে কয়েক হাজার মানুষ।
নগরের ভাটিখানা, পলাশপুর, সাংবাদিক মাইনুল হাসান সড়ক, কবি জীবনানন্দ দাশ সড়ক, আমানতগঞ্জ, রসূলপুর, বেলতলা ও সদর উপজেলার চরবাড়িয়া এলাকায় এমন চিত্র দেখা গেছে। অনেক এলাকায় টানা বৃষ্টিপাতের কারণে জলাবদ্ধতার চিত্রও দেখা গেছে।
বাংলাদেশ সময়: ১৯৪০ ঘণ্টা, আগস্ট ১১, ২০২২
এমএস/আরবি