ঢাকা: বঙ্গোপসাগরের লঘুচাপটি নিম্নচাপে রূপ নিয়ে বর্তমানে তা স্থলভাগে ওঠে এসেছে। ফলে ঝড়-বৃষ্টির আশঙ্কা থাকা দেশের সব সমুদ্র ও নদীবন্দরে সতর্কতা সংকেত বহাল রাখা হয়েছে।
রোববার (১৪ আগস্ট) সন্ধ্যায় এমন পূর্বাভাস দিয়েছে আবহাওয়া অফিস।
আবহাওয়াবিদ ড. মুহাম্মদ আবুল কালাম মল্লিক জানিয়েছেন- উত্তর বঙ্গোপসাগরে অবস্থানরত লঘুচাপটি প্রথমে সুস্পষ্ট লঘুচাপ এবং পরে উড়িষ্যা-পশ্চিমবঙ্গ উপকূলের অদূরে উত্তরপশ্চিম বঙ্গোপসাগর ও তৎসংলগ্ন এলাকায় নিম্নচাপে পরিণত হয়। এরপর এটি পশ্চিম-উত্তরপশ্চিম দিকে অগ্রসর হয়ে স্থল নিম্নচাপ আকারে সন্ধ্যা ৬টায় ভারতের উড়িষ্যা ও তৎসংলগ্ন এলাকায় অবস্থান করছিল। এটি আরও উত্তরপশ্চিম দিকে অগ্রসর হতে পারে।
উত্তর বঙ্গোপসাগরে বায়ুচাপ পার্থক্যের আধিক্য বিরাজ করছে। মৌসুমি বায়ুর অক্ষ রাজস্থান, উত্তর প্রদেশ, মধ্য প্রদেশ, বিহার, নিম্নচাপের কেন্দ্রস্থল ও বাংলাদেশের মধ্যাঞ্চল হয়ে আসাম পর্যন্ত বিস্তৃত রয়েছে। মৌসুমি বায়ু দেশের দক্ষিণাঞ্চলে অত্যন্ত সক্রিয় এবং দেশের অন্যত্র তা সক্রিয় রয়েছে। মৌসুমি বায়ু উত্তর বঙ্গোপসাগরে প্রবল অবস্থায় রয়েছে।
এ অবস্থায় আগামী সোমবার (১৫ আগস্ট) সন্ধ্যা পর্যন্ত খুলনা, বরিশাল ও চট্টগ্রাম বিভাগের অধিকাংশ জায়গায়, ঢাকা, রাজশাহী ও সিলেট বিভাগের অনেক জায়গায় এবং রংপুর ও ময়মনসিংহ বিভাগের কিছু কিছু জায়গায় অস্থায়ীভাবে দমকা/ঝড়ো হাওয়াসহ হালকা থেকে মাঝারি ধরনের বৃষ্টি/বজ্রসহ বৃষ্টি হতে পারে। সেইসঙ্গে খুলনা, বরিশাল, ঢাকা ও রাজশাহী বিভাগের কোথাও কোথাও মাঝারি ধরনের ভারী থেকে ভারী বর্ষণ হতে পারে।
নিম্নচাপের প্রভাবে সমুদ্রবন্দরসমূহ, উত্তর বঙ্গোপসাগর ও বাংলাদেশের উপকূলীয় এলাকায় ঝড়ো হাওয়া বয়ে যেতে পারে। তাই চট্টগ্রাম, কক্সবাজার, মোংলা ও পায়রা সমুদ্রবন্দরসমূহকে তিন নম্বর স্থানীয় সতর্কতা সংকেত দেখিয়ে যেতে বলা হয়েছে।
পূর্ণিমা ও বায়ুচাপ পার্থক্যের আধিক্যের প্রভাবে উপকূলীয় জেলা সাতক্ষীরা, খুলনা, বাগেরহাট, ঝালকাঠি, পিরোজপুর, বরগুনা, পটুয়াখালী, ভোলা, বরিশাল, লক্ষ্মীপুর, চাঁদপুর, নোয়াখালী, ফেনী, চট্টগ্রাম ও কক্সবাজার এবং তাদের অদূরবর্তী দ্বীপ ও চরসমূহের নিম্নাঞ্চল স্বাভাবিক জোয়ারের চেয়ে দুই থেকে চার ফুটের অধিক উচ্চতার বায়ুতাড়িত জলোচ্ছ্বাসে প্লাবিত হওয়ার আশঙ্কাও রয়েছে।
সাগর উত্তাল থাকায় উত্তর বঙ্গোপসাগরে অবস্থানরত মাছ ধরার নৌকা ও ট্রলারসমূহকে পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত উপকূলের কাছাকাছি থেকে সাবধানে চলাচল করতে বলা হয়েছে।
এদিকে অন্য এক পূর্বাভাসে বলা হয়েছে- রাজশাহী, বগুড়া, পাবনা, টাঙ্গাইল, ঢাকা, ফরিদপুর, মাদারীপুর, যশোর, কুষ্টিয়া, খুলনা, বরিশাল, পটুয়াখালী, নোয়াখালী, কুমিল্লা, চট্টগ্রাম এবং কক্সবাজার অঞ্চলসমূহের ওপর দিয়ে দক্ষিণ/দক্ষিণ-পূর্বদিক থেকে ঘণ্টায় ৬০-৮০ কিলোমিটার বেগে বৃষ্টি/বজ্রবৃষ্টিসহ অস্থায়ীভাবে ঝড়ো হাওয়া বয়ে যেতে পারে। এসব এলাকার নদীবন্দরসমূহকে দুই নম্বর সতর্কতা সংকেত দেখাতে বলা হয়েছে।
এছাড়া দেশের অন্যত্র অঞ্চলসমূহের ওপর দিয়ে দক্ষিণ/দক্ষিণ-পূর্বদিক থেকে ঘণ্টায় ৪৫-৬০ কিলোমিটার বেগে অস্থায়ীভাবে দমকা/ঝড়ো হাওয়াসহ বৃষ্টি/বজ্রসহ বৃষ্টি হতে পারে। এসব এলাকার নদীবন্দরসমূহকে এক নম্বর সতর্কতা সংকেত দেখাতে বলা হয়েছে।
রোববার দেশে সর্বোচ্চ বৃষ্টিপাত হয়েছে বরিশাল ও পটুয়াখালীতে ৭৭ মিলিমিটার। সর্বোচ্চ তামপাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে সিলেটে ৩৫ দশমিক ৪ ডিগ্রি সেলসিয়াস। ঢাকায় ৩১ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত হয়েছে আর সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ছিল ৩১ দশমিক ৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস।
বাংলাদেশ সময়: ২০৪৭ ঘণ্টা, আগস্ট ১৪, ২০২২
ইইউডি/আরবি