রাজশাহী: নৌপরিবহন প্রতিমন্ত্রী খালিদ মাহমুদ চৌধুরী বলেছেন, বাংলাদেশকে বাঁচাতে হলে নদী বাঁচাতে হবে। আর দেশের নদ-নদী, নালা, খাল-বিল রক্ষায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার চেয়ে অগ্রগামী আর কেউ নেই।
মঙ্গলবার (২২ নভেম্বর) দুপুরে রাজশাহী বিভাগীয় কমিশনারের কার্যালয়ের সম্মেলনকক্ষে ‘আত্রাই, ইছামতি, বড়াল, মহানন্দা ও পুনর্ভবা নদীর সমীক্ষা’ শীর্ষক প্রকল্পের বিভাগীয় কর্মশালায় প্রধান অতিথির বক্তৃতাকালে তিনি এ কথা বলেন।
নৌপরিবহন মন্ত্রণালয়ের আওতাধীন জাতীয় নদী রক্ষা কমিশনের ৪৮টি নদী সমীক্ষা প্রকল্প ও রাজশাহী বিভাগীয় নদী রক্ষা কমিটি এ কর্মশালার আয়োজন করে।
১৯৯৯ সালে শেখ হাসিনা প্রথম নদ-নদীগুলোকে দূষণমুক্ত রাখার উদ্যোগ গ্রহণ করেন উল্লেখ করে কর্মশালায় প্রতিমন্ত্রী বলেন, আগে আমাদের দেশে নদী নিয়ে তেমন কোনো আলোচনাই ছিল না। বঙ্গবন্ধু বলেছিলেন নদীর নাব্যতা কমে গেছে, ফিরিয়ে আনতে হবে। বঙ্গবন্ধুই ১৯৭৪ সালে নদীর নাব্যতা বাড়াতে আটটি ড্রেজার সংগ্রহ করেছিলেন। কিন্তু দুঃখের বিষয় ২০০৮ সাল পর্যন্ত ওই সংখ্যাটা ৯-এ পৌঁছায় নাই। আর এখন আমাদের ড্রেজার সংখ্যা ৮০টি। এগুলো দৃশ্যমান না। তাই এ ধরনের উন্নয়নগুলো কেউ দেখতে পায় না।
নদ-নদীগুলো মানবদেহের শিরা-উপশিরার মতো উল্লেখ করে খালিদ মাহমুদ চৌধুরী বলেন, একজন মানুষকে সুস্থ-সবলভাবে বেঁচে থাকতে হলে যেমন শিরা-উপশিরায় রক্ত সঞ্চালন প্রয়োজন, তেমনি একটি দেশের বাঁচার জন্য দূষণমুক্ত ও নাব্য নদ-নদী দরকার। নদীকে রক্ষা করতে না পারলে দেশকে বাঁচানো যাবে না। বাংলাদেশ নদীমাতৃক দেশ তাই আমাদের দেশের নদ-নদী, নালা, খাল-বিল রক্ষা করতে হবে। এগুলোকে কাজে লাগাতে হবে।
নদীগুলোকে দখল ও দূষণের হাত থেকে রক্ষা করতে সরকার পদক্ষেপ নিচ্ছে জানিয়ে প্রতিমন্ত্রী বলেন, নদীগুলোকে রক্ষা করতে নৌপরিবহন ও পানিসম্পদ মন্ত্রণালয় এবং জাতীয় নদী রক্ষা কমিশন কাজ করছে। আমরা চাই নদী রক্ষায় সবাই এগিয়ে আসুক। এ জন্য জনসচেতনতা দরকার।
তিনি বলেন, নদী খনন, খাল খনন এগুলো নিয়ে আগে কাজ হয় নাই বরং রাজনীতি হয়েছে। এখন খননের কারণে আমরা নদীগুলোতে নাব্যতা পাচ্ছি আরেকদিকে প্রচুর মাছও পাচ্ছি। এতে সামগ্রিক উন্নয়ন হচ্ছে।
কর্মশালার শুরুতে ৪৮টি নদী সমীক্ষা প্রকল্পের এনভায়রনমেন্ট অ্যান্ড ক্লাইমেট চেঞ্জ স্পেশালিস্ট মো. মনির হোসেন চৌধুরী দেশের নদীগুলোর বর্তমান অবস্থা ডকুমেন্টারি প্রদর্শনীতে তুলে ধরেন। পরে তিনি পাওয়ার পয়েন্ট উপস্থাপনার মাধ্যমে আত্রাই, ইছামতি, বড়াল, মহানন্দা ও পুনর্ভবা নদীর উৎপত্তি ও পতিতস্থল, দৈর্ঘ্য, গতিপথ, তীরবর্তী স্থাপনা, দূষণ উৎস, ভাঙন সংখ্যা ও পরিমাণ, নাব্যতার ধরন, নদীগুলোর সঙ্গে সংযোগনদী, উপনদী, শাখানদী, খাল ও বিলের তথ্য এবং নদী রক্ষায় করণীয় উপস্থাপন করেন।
রাজশাহী বিভাগীয় কমিশনার ও বিভাগীয় নদী রক্ষা কমিটির আহ্বায়ক জি এস এম জাফরউল্লাহর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন সংসদ সদস্য আয়েন উদ্দিন, রাজশাহী রেঞ্জের উপ-মহাপুলিশ পরিদর্শক আব্দুল বাতেন, আরএমপির কমিশনার আবু কালাম সিদ্দিক, ৪৮টি নদী সমীক্ষা প্রকল্পের পরিচালক ইকরামুল হক ও পানি উন্নয়ন বোর্ডের অতিরিক্ত প্রধান প্রকৌশলী জহিরুল ইসলাম।
কর্মশালায় রাজশাহী বিভাগের জেলা প্রশাসকরা, উপজেলা চেয়ারম্যানগণ, উপজেলা নির্বাহী অফিসাররা, বিভিন্ন সরকারি-বেসরকারি দপ্তর ও সংস্থার প্রধানরা, রাজনৈতিক, বীর মুক্তিযোদ্ধা, বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের প্রধানরা অংশ নেন।
বাংলাদেশ সময়: ১৭২৮ ঘণ্টা, নভেম্বর ২২, ২০২২
এসএস/এএটি