ঢাকা, মঙ্গলবার, ১৮ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ০৩ ডিসেম্বর ২০২৪, ০০ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

কর্পোরেট কর্নার

কোটি পরিবারে উপবৃত্তির হাসি নিশ্চিত করেছে নগদ

নিউজ ডেস্ক | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২০৪৪ ঘণ্টা, জানুয়ারি ৬, ২০২৩
কোটি পরিবারে উপবৃত্তির হাসি নিশ্চিত করেছে নগদ

ঢাকা: একটা সময় উপবৃত্তি বিতরণ নিয়ে নৈরাজ্য চলেছে। তবে ডাক বিভাগের মোবাইল আর্থিক সেবা নগদ-এর কাছে বিতরণের দায়িত্ব আসার পর থেকে শৃঙ্খলা ফিরেছে এ খাতে।

তাতে কমেছে ঝরে পড়ার হার। সাফল্যের এ সূত্র ধরে আবারো সরকার নগদকেই বেছে নিয়েছে প্রাথমিকের উপবৃত্তি বিতরণের জন্য।  
২০২০ সালের ডিসেম্বরে চুক্তির পর উপবৃত্তির সঙ্গে সঙ্গে সারাদেশের কোটি পরিবারের কাছে ছোট্ট ছোট্ট খুশি আর আনন্দ নিশ্চিত করেছে নগদ। এক কোটি মায়ের মোবাইলে প্রাথমিক পর্যায়ের প্রায় দেড় কোটি শিক্ষার্থীর উপবৃত্তি আর শিক্ষা উপকরণ কেনার টাকা বড় কোনো জটিলতা ছাড়াই পৌঁছে দিয়েছে অপারেটরটি।  

স্বচ্ছতার সঙ্গে হওয়ায় পুরো প্রক্রিয়া সম্পন্ন হওয়ায় সন্তুষ্টি প্রকাশ করেছেন বরিশালের গির্জা মহল্লার ইসলামিয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক ফরিদা আখতার।  

তিনি বলেন, কোনো রকম জটিলতা ছাড়াই সব শিক্ষার্থীদের ভাতা পেতে দেখছি আমরা। সবচেয়ে অবাক করা ব্যপার হলো–নিয়মিত ভাতা না পাওয়ায় একটা সময় ঝরে পড়ার হার বাড়ছিল। কিন্তু নগদকে দায়িত্ব দেওয়ার পর স্কুলে শিক্ষার্থীদের উপস্থিতির হার অনেক বেড়েছে।

ওই একই স্কুলে তৃতীয় শ্রেণিতে পড়ে সীমা বিশ্বাসের নাতনি। উপবৃত্তি পেয়ে আনন্দের সঙ্গেই নাতনি পড়াশোনা করছে বলে জানান তিনি। শুধু উপবৃত্তি পাওয়াই নয়, বাড়ির পাশে নগদ-এর উদ্যোক্তা থাকায় সহজে প্রয়োজন অনুসারে ক্যাশ-আউটও করে নিতে পেরেছেন তারা।  

সহজে এবং কোনো রকম ঝামেলা ছাড়াই উপবৃত্তির টাকা পেয়ে যাওয়ায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার প্রতি কৃতজ্ঞতা ও ধন্যবাদ জানিয়েছেন সুবিধাভোগীরা।  

প্রায় দুই দশক ধরে প্রাথমিক পর্যায়ের শিক্ষার্থীদের উপবৃত্তি দিয়ে আসছে সরকার। কিন্তু একটা সময় পুরো প্রক্রিয়াটা অ্যানালগ ছিল। শিক্ষকদের অনেকগুলো রেজিস্ট্রার ও খাতায় নিবন্ধন করতে হতো। বিভিন্ন স্কুল মিলে শিক্ষকদের বারবার মিটিং করে তালিকা তৈরি করতে হতো। তখন নগদকে এ বিষয়ে দায়িত্ব দেওয়া হয়। তারপর থেকেই বদলে যেতে থাকে পরিস্থিতি।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশনায় ২০২০ সালের ডিসেম্বরে ‘নগদ’-এর সঙ্গে উপবৃত্তি ও শিক্ষা উপকরণ বৃত্তি বিতরণ বিষয়ে প্রথম চুক্তি করে প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তর (ডিপিই)। পরে স্বয়ংক্রিয় ডেটাবেজ তৈরি করে বিতরণ শুরু করে নগদ। এ পদ্ধতিতে বিতরণের ফলে সরকারের খরচ এক-তৃতীয়াংশে নেমে এসেছে।

বন্ধ হয়েছে ভুতুড়ে সুবিধাভোগীর অভিযোগ
দায়িত্ব পাওয়ার পরপরই সব শিক্ষার্থীর নাম, জন্ম নিবন্ধন সনদসহ শিক্ষার্থীর মা অথবা অন্য কোনো অভিভাবকের মোবাইল নম্বরের সঙ্গে মিলিয়ে একটি ডেটাবেজ তৈরি করেছে ‘নগদ’। ফলে তালিকা থেকে বাদ পড়েছে ভুয়া সুবিধাভোগীর নাম ও স্বচ্ছতা নিশ্চিত হয়েছে। এতে জাতীয় রাজস্বেরও অপচয় রোধ হয়েছে।

সরকারের খরচ কমেছে ৭০ শতাংশ
কয়েক বছর ধরে একটি মোবাইল ফাইন্যান্সিয়াল সার্ভিসের মাধ্যমে ভাতা বিতরণ করত সরকার। সারাদেশে এজেন্ট না থাকা, ক্যাশ-আউটের বাড়তি খরচ, সঠিক ব্যক্তির কাছে উপবৃত্তি না পৌঁছানো, সরকারের বাড়তি খরচসহ নানা অনিয়ম ও বিতর্কের পর ‘নগদ’কে দায়িত্ব দেয় সরকার।

এর আগে প্রতি হাজার টাকার উপবৃত্তি বিতরণ করতে সরকারের কাছ থেকে সাড়ে ২১ টাকা করে সার্ভিস চার্জ ও ক্যাশ-আউট চার্জ নিত অপারেটরটি। কিন্তু সেখানে ‘নগদ’ সব মিলে সরকারের কাছ থেকে নিচ্ছে হাজারে মাত্র সাত টাকা। সুবিধাভোগী মূল টাকার সঙ্গে সঙ্গে ক্যাশ-আউটের খরচও পেয়ে যাচ্ছেন, ফলে গ্রাহককে বাড়তি কোনো অর্থ খরচ করত হচ্ছে না। শুধু ভাতা বিতরণে এ প্রক্রিয়ায় সরকারের অন্তত অর্ধশত কোটি টাকার সাশ্রয় হয়েছে।

সচেতনতা বাড়াতে ‘নগদ’-এর আইভিআর কল
নানা সময় সহজ-সরল সুবিধাভোগীর কাছ থেকে নানান অপকৌশলে অর্থ হাতিয়ে নিয়েছে কিছু কুচক্র। একই ঘটনা প্রতিরোধে সচেতনতা বাড়াতে প্রতিটি সুবিধাভোগীর মোবাইলে সচেতনতার বার্তা দিয়ে কল করা হয়েছে। এসএমএস পাঠালে অনেক ক্ষেত্রে সুবিধাভোগীরা সেটি নাও পড়তে পারেন সে কারণে আইভিআর কলের মাধ্যমে তাদের জানানো হচ্ছে যে, কোনো অবস্থাতেই নগদ অ্যাকাউন্টের পিন, ওটিপি বা পাসওয়ার্ড কাউকে দেওয়া যাবে না।  

উপবৃত্তি বিতরণের সাফল্য বিসয়ে নগদ-এর চিফ সেলস অফিসার মো. শিহাবউদ্দিন চৌধুরী বলেন, সময়োচিত সিদ্ধান্তের কারণেই লকডাউনের সময়টাতেও প্রান্তিক মানুষের হাতে সরকারের আর্থিক সহায়তা তুলে দিতে পেরেছে নগদ। সে সময় সামান্য এ টাকাটাও মানুষের যেভাবে কাজে লেগেছে সেটা দেখে আনন্দ হয়েছে বলে জানান তিনি।

‘আমার ভাবতেই ভালো লাগছে যে, আগামীর বাংলাদেশকে নেতৃত্ব দেওয়া নাগরিক তৈরির প্রক্রিয়ায় সামান্য হলেও আমরা ভূমিকা রাখতে পারছি। ছোট্ট ছোট্ট বাচ্চাদের পড়ালেখার খরচ নগদ-এর মাধ্যমে কোটি পরিবারের কাছে পৌঁছে যাচ্ছে এটি আমার কাছে খুবই আনন্দের একটি ছবি বলেন- শিহাব।

বাংলাদেশ সময়: ২০৪৩ ঘণ্টা, জানুয়ারি ০৬, ২০২২
আরবি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।