ঢাকা: বিশ্বের সর্ববৃহৎ ট্রেড শো ‘চায়না আমদানি ও রপ্তানি মেলা’ বা ক্যান্টন ফেয়ারে বৈশ্বিক ক্রেতাদের কাছে ব্যাপক সাড়া ফেলেছে বাংলাদেশি ইলেকট্রনিক্স জায়ান্ট ওয়ালটনের প্রযুক্তিপণ্য। ‘মেড ইন বাংলাদেশ’ ট্যাগযুক্ত ওয়ালটন পণ্যের সর্বাধুনিক প্রযুক্তি, ফিচার, নিখুঁত ফিনিশিং, আন্তর্জাতিক মানসম্পন্ন ও সাশ্রয়ী মূল্য দেখে অত্যন্ত মুগ্ধ ও অভিভূত বিদেশি ক্রেতারা।
ওয়ালটনের গ্লোবাল বিজনেস ইউনিটের ভাইস-প্রেসিডেন্ট ও ক্যান্টন ফেয়ারের প্রধান সমন্বয়ক আব্দুর রউফ জানান, মেলায় এশিয়া, মধ্যপ্রাচ্য, আফ্রিকা, ইউরোপ, উত্তর ও দক্ষিণ আমেরিকার বিভিন্ন দেশ থেকে আগত ব্যবসায়ী প্রতিষ্ঠানের প্রতিনিধিরা ওয়ালটন থেকে ৩২ মিলিয়ন মার্কিন ডলার সমমূল্যের ফ্রিজ, এসি ও ইলেকট্রিক্যাল অ্যাপ্লায়েন্স আমদানির প্রবল আগ্রহ দেখিয়েছে। এরই পরিপ্রেক্ষিতে ব্রাজিল, আর্জেন্টিনাসহ বিশ্বের বেশ কয়েকটি নতুন দেশে ওয়ালটন পণ্যের রপ্তানি বাজার সম্প্রসারণের বিশাল সম্ভাবনা তৈরি হয়েছে।
সার্বিকভাবে ক্যান্টন ফেয়ারে অংশ নেওয়া একমাত্র বাংলাদেশি ব্র্যান্ড ওয়ালটন শতভাগ সফল হয়েছে বলে মনে করেন তিনি।
ওয়ালটন রেফ্রিজারেটরের চিফ বিজনেস অফিসার (সিবিও) তোফায়েল আহমেদ বলেন, ক্যান্টন ফেয়ারে বৈশ্বিক ক্রেতাদের থেকে প্রত্যাশার চেয়ে বেশি সাড়া পেয়েছি। মেলার শুরু থেকে প্রতিদিনই অন্যান্য প্যাভিলিয়নের চেয়ে অনেক বেশি ক্রেতা সমাগম হয়েছে ওয়ালটন প্যাভিলিয়নে। মেলায় ব্রাজিল, আর্জেন্টিনা, আমেরিকা, জার্মানি, স্পেন, ইটালি, আফ্রিকা, শ্রীলঙ্কা ও ভারত থেকে আগত ব্যবসায়ীরা ওয়ালটন থেকে বিশাল অঙ্কের ফ্রিজ আমদানির আশ্বাস দিয়েছেন। যার পরিমাণ ৩০ মিলিয়ন মার্কিন ডলারের বেশি।
ওয়ালটন এসির সিবিও মো. তানভীর রহমান জানান, ক্যান্টন ফেয়ারে আশাতীত সাড়া ফেলেছে ওয়ালটনের ব্যাপক বিদ্যুৎ সাশ্রয়ী, টেকসই, পরিবেশবান্ধব ও উচ্চ ক্ষমতাসম্পন্ন স্মার্ট স্প্লিট ও ভিআরএফ এসি। বিশেষ করে বিদেশি ক্রেতাদের আগ্রহের কেন্দ্রে ছিল ওয়ালটনের আইওটি বেজড ইনভার্টার প্রযুক্তির অফলাইন ভয়েস কন্ট্রোল এসি। এই এসি বিশ্বের যেকোনো দেশের ভাষায় পরিচালনা সম্ভব। যা বৈশ্বিক ক্রেতাদের নজর কেড়েছে।
তিনি বলেন, বাংলাদেশের বাজারে এখন একচেটিয়া আধিপত্য ওয়ালটনের। দেশের চাহিদা মিটানোর পাশাপাশি বিশ্বের ৪০টিরও বেশি দেশে রপ্তানি হচ্ছে ওয়ালটন পণ্য। এবার টার্গেট হলো- ২০৩০ সালের মধ্যে ওয়ালটনকে বিশ্বের অন্যতম সেরা গ্লোবাল ব্র্যান্ডে পরিণত করা। সেই লক্ষ্য অর্জনের পথে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে চীনের ক্যান্টন ফেয়ার।
ওয়ালটন গ্লোবাল বিজনেস ইউনিটের সূত্রমতে, ক্যান্টন ফেয়ারে আমেরিকা, ব্রাজিল, আর্জেন্টিনা, জর্ডান, সৌদি আরব, উরুগুয়ে, আলজেরিয়া, গ্রিস, মধ্য প্রাচ্য, পোল্যান্ড, ফিলিস্তিন, ইরাক, মেক্সিকো, জার্মানি, স্পেন, ইটালি, গ্যাবন, পানামা, ডমিনিকান রিপাবলিক, পেরু, ইয়েমেন, লেবানন, ওমান, মিয়ানমার, ভারত, শ্রীলঙ্কা ইত্যাদি দেশের ইলেকট্রনিক্স পণ্যের আমদানিকারক ও ব্যবসায়ী প্রতিষ্ঠানের প্রতিনিধি ওয়ালটন প্যাভিলিয়ন পরিদর্শন করেন। তারা ওয়ালটনের সর্বাধুনিক প্রযুক্তি আইওটি বেজড স্মার্ট ফ্রিজ ও এসির আন্তর্জাতিকমান ও অভিজাত ডিজাইন দেখে অত্যন্ত মুগ্ধ হন। বিশেষ করে ওয়ালটনের তৈরি বিশ্বের প্রথম আইওটি বেজড 9in1 কনভার্টিবল মোডের ফ্রেঞ্চ ডোর মডেল, 8in1 কনভার্টিবল মোডের সাইড বাই সাইড ডোর মডেল, কম্বি মডেল ও সিঙ্গেল ডোর মডেলের রেফ্রিজারেটর, অফলাইন ভয়েস কন্ট্রোল স্মার্ট এসি ও ভিআরএফ এসি বৈশ্বিক ক্রেতাদের কাছে ব্যাপকভাবে প্রশংসিত হয়েছে।
প্রসঙ্গত, চীনের গুয়াংজু শহরে চায়না ইমপোর্ট অ্যান্ড এক্সপোর্ট ফেয়ার কমপ্লেক্সে ১৫ থেকে ১৯ অক্টোবর, পর্যন্ত অনুষ্ঠিত হয়েছে ১৩৪তম শরৎকালীন ক্যান্টন ফেয়ারের প্রথম ধাপ। এতে ইলেকট্রনিক্স অ্যান্ড হাউসহোল্ড ইলেকট্রিক্যাল অ্যাপ্লায়েন্সেস ক্যাটাগরিতে তৃতীয়বারের মতো অংশ নিয়েছে একমাত্র বাংলাদেশি ব্র্যান্ড ওয়ালটন। বিদ্যুৎ সাশ্রয়ী, টেকসই ও পরিবেশবান্ধব ইলেট্রনিক্স ও ইলেকট্রিক্যাল পণ্য উৎপাদন শিল্পে বাংলাদেশের প্রযুক্তিগত উৎকর্ষতা ও সক্ষমতা বিশ্ব দরবারে তুলে ধরেছে।
বাংলাদেশ সময়: ১৭৪৫ ঘণ্টা, অক্টোবর ২১, ২০২৩
আরআইএস