ঢাকা, শনিবার, ৬ পৌষ ১৪৩১, ২১ ডিসেম্বর ২০২৪, ১৮ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

কর্পোরেট কর্নার

বিশ্বের বৃহত্তম পিৎজা ব্র্যান্ড ডোমিনো’জ’র ইতিকথা

নিউজ ডেস্ক | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৪৪৩ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ৮, ২০২৪
বিশ্বের বৃহত্তম পিৎজা ব্র্যান্ড ডোমিনো’জ’র ইতিকথা

ঢাকা: আগামী সোমবার (৯ ডিসেম্বর) ডোমিনো’জ পিৎজা তাদের ব্যবসার ৬৪ বছরের অসাধারণ যাত্রা উদযাপন করতে যাচ্ছে। এই উপলক্ষে বাংলাদেশের সব পিৎজাপ্রেমীদের জন্য ডোমিনো’জ পিৎজার ৩৬টি রেস্টুরেন্টে ৩৬টির বেশি পিৎজার ওপর ৩৬ শতাংশ আকর্ষণীয় ডিসকাউন্ট ঘোষণা করা হয়েছে।

ক্রেতারা এই অফার উপভোগ করতে পারবেন ডোমিনো’জ পিৎজার অ্যাপ (অ্যাপ স্টোর ও প্লে স্টোরে উপলব্ধ) বা ওয়েবসাইটের মাধ্যমে অর্ডার করে। অফারটি ডাইন - ইন, টেকঅ্যাওয়ে এবং ডেলিভারির ক্ষেত্রে প্রযোজ্য।

এই উদযাপন শুধু একটি অফারের মধ্যে সীমাবদ্ধ নয়, বরং এটি এক অসাধারণ যাত্রার ৬৪ বছরে পদার্পণ উদযাপন, যা শুরু হয়েছিল একজন ব্যক্তির স্বপ্ন দিয়ে এবং ক্রমশ একটি বৈশ্বিক ঐতিহ্যবাহী মুখরোচক খাবার, উদ্ভাবন ও গ্রাহক-সন্তুষ্টির গল্প হিসেবে গড়ে উঠেছে।

শুরুর গল্প
এই গল্প শুরু হয় ১৯৬০ সালে, যখন টম মোনাহ্যান ও তার ভাই জেমস মাত্র ৯শ ডলারে মিশিগানের সিল্যান্টিতে একটি ছোট পিৎজা রেস্টুরেন্ট, ডোমিনিক’স পিৎজা কিনে নেন। খাবারের ব্যবসায় কোনো অভিজ্ঞতা ছাড়াই এবং সামান্য কিছু মূলধন নিয়ে, টম শুরুতে অসংখ্য চ্যালেঞ্জের সম্মুখীন হন। কিছুদিন পর তার ভাই ব্যবসা ছেড়ে চলে যান এবং টম একাই রেস্টুরেন্ট চালাতে থাকেন। টম প্রায়শই দীর্ঘ সময় ধরে কঠোর পরিশ্রম করতেন এবং নিজে ডেলিভারিও দিতেন।  

এক বছরের মধ্যে টম ব্যবহৃত একটি ভক্সওয়াগন বিটল গাড়ির বিনিময়ে তার ভাইয়ের শেয়ার কিনে কোম্পানির সম্পূর্ণ মালিকানা লাভ করেন। এই গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্তই ডোমিনো’জ পিৎজার সাধারণ স্থানীয় একটি রেস্টুরেন্ট থেকে বৈশ্বিক পিৎজা সাম্রাজ্যে পরিণত হওয়ার ভিত্তি তৈরি করে।

টমের লক্ষ্য ছিল একটি পিৎজা ব্র্যান্ড তৈরি করা, যা শুধুমাত্র স্বাদের জন্য নয়, বরং সেবার জন্যও পরিচিত হবে। তিনি গরম ও ফ্রেশ পিৎজা ডেলিভারি নিশ্চিত করার দিকে জোর দেন, যা সেই সময়ে এক বিপ্লবী ধারণা ছিল। ১৯৬৫ সালে তিনি ব্যবসার নাম বদলে ‘ডোমিনো’জ পিৎজা’ রাখেন। ডোমিনো’জ’র লোগোর তিনটি ডট তখনকার তিনটি রেস্টুরেন্টকে নির্দেশ করত এবং তার পরিকল্পনা ছিল ভবিষ্যতে নতুন রেস্টুরেন্ট যোগ হলে লোগোতে একটি ডট বাড়ানো হবে। তবে দ্রুত ব্যবসা স¤প্রসারণের ফলে এটি আর সম্ভব হয়নি।

১৯৭০-এর দশকের শেষে, ডোমিনো’জ পিৎজার ২শ’টির বেশি রেস্টুরেন্ট ছিল এবং এটি পুরো বিশ্বে ফাস্ট ফুড ইন্ডাস্ট্রির শীর্ষস্থানীয় ব্রান্ডে পরিণত হয়েছিল।

ডোমিনোজ পিৎজার এই অসাধারণ যাত্রা খুব সহজ ছিল না। আর্থিক সমস্যা, প্রতিযোগিতা, এমনকি একটি রেস্টুরেন্ট পুরোপুরি আগুনে পুড়ে যায়। তবে টমের সুদৃঢ় সংকল্প ও উদ্ভাবনী চিন্তাধারা ডোমিনো'জ পিৎজার ব্যবসাকে টিকিয়ে রাখে। তিনি ৩০ মিনিটের মধ্যে ডেলিভারি গ্যারান্টির ধারণা চালু করেন, যা দ্রুত গ্রাহকদের নজর কাড়ে।

আজ, ডোমিনো'জ পিৎজা বিশ্বের ৯০টিরও বেশি দেশে প্রায় ২১,০০০ এর বেশি রেস্টুরেন্ট পরিচালনা করে এবং প্রতিদিন গ্রাহকদের নিকট লক্ষাধিক পিৎজা পরিবেশন করে। স্থানীয় স্বাদে মানিয়ে নেওয়ার ক্ষমতা ও মূল মূল্যবোধে অটল থাকার জন্য ডোমিনো'জ পিৎজা বিশ্বব্যাপী সমাদৃত।

বাংলাদেশে ডোমিনো’জ পিৎজা ডোমিনো’জ পিৎজা ২০১৯ সালের ফেব্রুয়ারিতে বাংলাদেশে যাত্রা শুরু করে। গ্রাহকদের সন্তুষ্টি অর্জন করতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ এই ব্র্যান্ড দ্রুত ব্যবসা-সম্প্রসারণ লাভ করে এবং পরিবার, বন্ধু এবং ভোজনরসিকদের পছন্দের গন্তব্যে পরিণত হয়।  

নতুন নতুন মেন্যু ও অসাধারণ গ্রাহকসেবা দেওয়ার মাধ্যমে ডোমিনো’জ পিৎজা ঢাকা, চট্টগ্রাম, খুলনা, সিলেট, কক্সবাজার এবং নারায়ণগঞ্জসহ বাংলাদেশের ছয়টি প্রধান শহরে নিজেদের ব্যবসা সম্প্রসারণ করেছে।

সম্প্রতি এটি মিরপুর সনি স্কয়ারে নিজেদের ৩৬তম রেস্টুরেন্ট খুলে ব্রাঞ্চ সংখ্যার দিক দিয়ে ঢাকার সর্ববৃহৎ রেস্টুরেন্ট চেইনে পরিণত হয়েছে।

বাংলাদেশ সময়: ১৪৪১ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ০৮, ২০২৪
এএটি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।