প্রতি বছরের মতো এবারও প্রথম রোজার আগের রাত থেকে এ মাদ্রাসায় খতম তারাবি শুরু হবে। এখানে বিগত আট বছর ধরে একই পদ্ধতিতে তারাবিহ নামাজ পড়ানোর ধারা চলে আসছে।
অপরদিকে মাদ্রাসার তালাবওয়ালা জামে মসজিদে (পুরাতন তাবলিগ মসজিদ) রমজানজুড়ে (পবিত্র লায়লাতুল কদরের রাত অর্থাৎ ২৭ রমজান) কোরআন তেলওয়াতের মাধ্যমে তারাবির নামাজ পড়ানো হয়। ৬ দিনের তারাবিতে প্রায় ১ হাজার মুসল্লি নামাজ আদায় করেন। এদের মধ্যে বেশিরভাগই বিভিন্ন মার্কেটের ব্যবসায়ী।
মহানগরীর মুসলমানপাড়ায় অবস্থিত জামিআ ইসলামিয়া আরাবিয়া দারুল উলুম মাদ্রাসার তালাবওয়ালা জামে মসজিদের প্রধান গেইটকে বলা হয় ‘তালাবওয়ালা শাহী গেইট’। মসজিদ ও মাদ্রাসার প্রতিষ্ঠাতা এ অঞ্চলের বিখ্যাত দানবীর মরহুম আব্দুল হাকীম জোমাদ্দার। খুলনার জামি’আর জামে মসজিদ ইসলামের সৌন্দর্যবোধ ও সৌকর্য অনুসরণ করে নির্মাণ করা হয়। বিগত আট বছরের ৬ বছরই হাফেজ মাওলানা মুফতি ওমর ফারুক নামের এক ইমাম এ তারাবির নামাজ পড়ান। তিনি বাগেরহাটের দশ গম্বুজ মসজিদের ইমাম ও খতিব এবং দশ গম্বুজ মাদ্রাসার মুহতামিম।
মুফতি ওমর ফারুক বাংলানিউজকে বলেন, দারুল উলুম মাদ্রাসার ২য়, ৩য় ও ৪র্থ তলায় ৬দিনের তারাবি পড়ানো হয়। প্রতিদিন হাজারেরও বেশি মুসল্লি এতে অংশ নেন। প্রতিদিন ৫ পারা কোরআন তিন ঘণ্টায় পাড়ানো হয়। তিন ঘণ্টার মধ্যে ১০ মিনিট বিরতি দেওয়া হয়। প্রতিদিন ৮টা ৪৫ মিনিটে জামাত শুরু হয়।
তিনি আরো জানান, পবিত্র রমজানে এখানে দুই ধরনের তারাবির নামাজ হয়। মাদ্রাসায় ৬ দিনে খতম তারাবি ও আর মসজিদে ২৭ দিনে খতম তারাবি। ৬ দিনের খতম তারাবির মুসল্লিদের মধ্যে বেশির ভাগ ব্যবসায়ী।
৬ দিনের এ তারাবিতে প্রতি বছর অংশ নেওয়া মহানগরীর মুসলমান পাড়ার বাসিন্দা আলীপাকবাজ জুয়েল বাংলানিউজকে বলেন, ২৭ দিনের খতম তারাবি অনেক সময় নানা কারণে ছুটে যায়। এতে তারাবিতে ৩০ পারা কোরআনের খতম করা সম্ভব হয় না। ৬ দিনের এ খতম তারাবিতে নামাজ আদায় করে সে সুযোগ পাওয়া যায়।
একটু কষ্ট হলেও ছয়দিনের মধ্যে কোরআন শরিফ তেলওয়াতের মাধ্যমে তারাবিহ নামাজ পড়ার সুযোগ পাওয়ায় তিনি খুশি প্রকাশ করেন। মুসল্লি জুয়েলের মতো নগরীর বিভিন্ন স্থান থেকে ৬দিনের এ তারাবি পড়তে অনেকেই ছুটে আসেন এ মাদ্রাসায়।
মহানগরীর প্রাণকেন্দ্রে ১৯৬৭ সালে প্রতিষ্ঠিত হয় ‘জামিআ ইসলামিয়া আরাবিয়া দারুল উলুম মাদ্রাসা’। মাদ্রাসা মসজিদটির নাম তালাবওয়ালা জামে মসজিদ (পুরাতন তাবলিম মসজিদ)। আর এ মসজিদটিতে রয়েছে খুলনা বিভাগের সর্বোচ্চ সুউচ্চ মিনার। মিনারটির উচ্চতা ২শ’ ২৬ ফুট। মসজিদ ও মিনারটির পুরোটাই সাদা টাইলস দিয়ে তৈরি।
দূর-দূরান্ত থেকে এ মিনার দেখতে দর্শনার্থীরা এখানে আসেন। মসজিদের তিন পাশের রাস্তা দিয়ে যাওয়ার সময় সর্বোচ্চ এবং অন্যতম সুন্দর মিনার দেখে মুগ্ধ হন সবাই। মসজিদটিতে ৪টি গম্বুজ ও একটি মিনারও রয়েছে।
রাতে তালাবওয়ালা শাহী গেইট দিয়ে প্রবেশ করতে বর্ণিল আলোকচ্ছটার ও দীপ্ত-কিরণ মুসল্লিদের নজর কাড়ে। রাতের আধারে আলোর রৌশনিতে জামিআর জামে মসজিদের চারপাশ এক মোহনীয় পরিবেশ তৈরি করে।
রমজানবিষয়ক যেকোনো ধরনের লেখা আপনিও দিতে পারেন। লেখা পাঠাতে মেইল করুন: [email protected]
বাংলাদেশ সময়: ১৬১৪ ঘণ্টা, মে ০৬, ২০১৯
এমআরএম/এমএমইউ