রমজান এলে বিশ্বের মুসলিম উম্মাহ এক মোহনায় মিলিত হন। এক ধরনের উৎসব আমেজের মধ্যে দিয়ে যায় পুরো মাস।
ইফতার নিয়ে যত বিশ্বরেকর্ড রয়েছে, সংক্ষেপে সেগুলোর বর্ণনা-
দুবাই
বিশ্বের সর্ববৃহৎ ইফতার আয়োজনের জন্য গ্রিনেস বুকে সর্বশেষ নাম লেখায় সংযুক্ত আরব আমিরাতের গুরুত্বপূর্ণ শহর দুবাই। ২০১৮ সালে রমজানে দুবাই পুলিশের আড়াইশত কর্মকর্তার অর্থায়নে স্থানীয় কয়েকটি রেস্টুরেন্টের সহযোগীতায় ১৮ হাজার শ্রমিকদের ইফতারের আয়োজন করে। প্রায় ৬ কিলোমিটার দীর্ঘ সারিতে ইফতার করানো হয়। মূলত বিশ্বের সবচেয়ে দীর্ঘ ইফতারের টেবিল হিসেবে এই রেকর্ডকে স্বীকৃতি দেয় গিনেজ কর্তৃপক্ষ।
লেবানন
এর আগের বছর ২০১৭ সালের রমজানের প্রথম শুক্রবার লেবানের রাজধানী বৈরুত এর ওয়াটারফ্রন্টে পাঁচ হাজার মানুষের সমাগমে দীর্ঘ সারিবদ্ধ ইফতারের রেকর্ড করে আজিয়াউন নামের একটি সংস্থা। আজিয়াউনের চেয়ারপার্সন লিনা জাইম আল-দাদা সংবাদ মাধ্যমকে সেসময় জানান, ইফতারটি বিশ্ব রেকর্ড ভেঙে দেওয়ার উদ্দেশ্যে নয়, বরং ইসলামের প্রকৃত চিত্রকে চিত্রিত করার উদ্দেশ্যে এই আয়োজন।
ওমান
২০১৭ সালে একইভাবে আরেকটি বিশ্বরেকর্ড করে মধ্যপ্রাচ্যের দেশ ওমান। ফ্রান্স কুইসিন’র আয়োজনে আল সিব সমুদ্র সৈকতে এই আয়োজনে ২২০০মিটার লম্বা কার্পেটিং করে মুসল্লিদিরে ইফতার করানো হয়। ফ্রান্স সুইসিন একটি ওমানী কর্পোরেশন যা ক্যাটারিং সার্ভিসের সাথে সম্পর্কিত।
মিশর
মিশরের আলেকজান্দ্রিয়া শহরে ২০১৫ সালে রাস্তার পাশে পৃথিবীর দীর্ঘ সারিবদ্ধ ইফতার আয়োজন করে। মাওদাদ আল রাহমানি’র আয়োজনে এই ইফতার আয়োজন মিশরের একটি বড় অর্জন হিসেবে দেখা হয়। এই সংগঠনটি মুলত রোজাদারদের নিয়মিত ইফতার করায়। তবে ঘটা করে এমন আয়োজন তাঁরা সেবারই প্রথম করেছিলো।
সৌদি আরব
প্রায় দেড় কিলোমিটার লম্বা ও ৬৪০ টি টেবিলে বিনামূল্যে ইফতারের আয়োজন করে জেদ্দার বালাদ জেলার একটি বেসরকারি জনবান্ধব প্রকল্প ‘রামদানান কিদা’। আল-জাফালি মসজিদের কাছে স্থাপিত টেবিলে সৌদি কর্মকর্তাদের উপস্থিতিতে এবং গিনেজ বুক অফ রেকর্ডসের প্রতিনিধিদের সঙ্গে যোগ দেওয়ার জন্য জেদ্দায় হাজার হাজার লোক একত্রিত হয়ে ইফতার করেন। অনুষ্ঠানটি জেদ্দায় গভর্নোরেট, জেদ্দা চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রি এবং “রামদানানা কিদা” উৎসবের সংগঠন কমিটির সমন্বয়ে গঠিত হয়েছিল।
তবে এসব রেকর্ড সবচেয়ে বেশি দুবাই’র। বিশ্বজ্ঞানকোষের তথ্য অনুযায়ী তারা ইতোমধ্যে ৬/৭ টি রেকর্ড করেছে। গিনেজ বুক অব ওয়ার্ল্ড রেকর্ডে সর্বশেষ রেকর্ডটিও তাদের। তবে গিনেজ বুক অব ওয়ার্ল্ড রেকর্ড কতৃপক্ষ বলছে এই রেকর্ড ভাঙতে পারবে অন্য যে কেউ। এবারের রমজানে যেকোনো দেশ এই প্রতিযোগিতায় এগিয়ে আসবে কিনা সেটাই দেখার বিষয়।
গিনেজ কতৃপক্ষ তাদের ওয়েবসাইটে লিখেছে, এই রেকর্ডটি সন্ধ্যাবেলা বিভিন্ন স্থানে আয়োজিত অনুষ্ঠানে ইফতারে অংশগ্রহণকারী সর্বাধিক সংখ্যক ব্যক্তির জন্য লিপিবদ্ধ হয়। রেকর্ড একটি একক প্রতিষ্ঠান দ্বারা চেষ্টা করা হয়। এই রেকর্ডটি একাধিক স্থান জুড়ে ডিনারে উপস্থিত ব্যক্তিদের মোট সংখ্যা দ্বারা পরিমাপ করা হয়।
তবে ঘটা করে এসব ইফতারের আয়োজনে খাবার নষ্ট ও অপচয়ের জন্য দেশ বিদেশে সমালোচনাও কম হয়নি। একটি মুসলিম দেশে খাবারের এমন অপচয় করাকে ধর্মীয় ও সামাজিক দৃষ্টিভঙ্গি থেকে ভালোভাবে নিতে পারেননি অনেকে। সে জন্য সর্বশেষ দুবাই এরকম আয়োজন শেষে উচ্ছিষ্ট খাবার স্থানীয় শ্রমিকপাড়ায় পাঠিয়ে দেয় এবং কিছু খাবার রেডক্রিসেন্ট’র কাছে জমা রাখে।
রমজানবিষয়ক যেকোনো ধরনের লেখা আপনিও দিতে পারেন। লেখা পাঠাতে মেইল করুন: [email protected]
বাংলাদেশ সময়: ১৮০০ ঘণ্টা, মে ০৯, ২০১৯
এমএমইউ