ঢাকা, শুক্রবার, ১৫ চৈত্র ১৪৩০, ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৮ রমজান ১৪৪৫

আদালত

‘উকিল জালাল ছয় মাস মামলা পরিচালনা করতে পারবেন না’

স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৪০৫ ঘণ্টা, মে ২৮, ২০১৮
‘উকিল জালাল ছয় মাস মামলা পরিচালনা করতে পারবেন না’

ঢাকা: অন্য আইনজীবীর ভুয়া আইডি ব্যবহার করে এবং জাল তথ্য দিয়ে দুটি ধর্ষণ মামলার আসামিকে জামিন করানোর অভিযোগে সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী জালাল উদ্দিনকে দেশের সব আদালতে ছয় মাস মামলা পরিচালনা করতে পারবে না বলে আদেশ দিয়েছেন হইকোর্ট।

একই সঙ্গে তাকে আইন পেশায় কেন বারিত (নিষিদ্ধ) করা হবে না তাও জানতে চেয়ে রুল জারি করেছেন আদালত। সোমবার (২৮ মে) বিচারপতি মো. শওকত হোসেন ও বিচারপতি মো. নজরুল ইসলাম তালুকদারের বেঞ্চ এ আদেশ দেন।


 
এ আদেশের পাশপাশি ‘ভুয়া উকিল জামাল উদ্দিনে’র স্বাক্ষরের সঙ্গে আইনজীবী জালাল উদ্দিনের সইয়ের কোনো মিল আছে কী-না, এ জালিয়াতির ঘটনায় কে কে জড়িত এসব ব্যাপারে সিআইডিকে তদন্ত করে প্রতিবেদন জমা দিতে নির্দেশ দিয়েছেন আদালত। এ বিষয়ে পরবর্তী আদেশের জন্য ২০ জুলাই দিন নির্ধারণ করা হয়েছে। উল্লেখ্য, জালাল উদ্দিন কখনও নিজেকে জামাল উদ্দিন হিসেবেও পরিচয় দেন বলে জানা গেছে।  
 
আদালতে রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল কে এম জাহিদ সরওয়ার কাজল। জামিন জালিয়াতির গল্প তুলে ধরে তিনি  বলেন, সম্প্রতি গাজীপুরের দুটি ধর্ষণের ঘটনায় করা মামলায় জাল তথ্য সরবরাহ করে আসামিরা জামিন নেন। বিষয়টি ধরা পড়ার পর দেখা যায়, আসামিদের জামিন আবেদনকারী আইনজীবী হিসেবে নাম ছিল জামাল উদ্দিনের। আর আইনজীবী সমিতির যে আইডি ব্যবহার করেছেন, সেই আইডির আসল আইনজীবী হারুন-অর রশিদ। এ দুটি মামলার তদবিরকারক হিসেবে ছিলেন গাজীপুর সদরের রাজেন্দ্রপুর ক্যান্টনমেন্ট এলাকার নয়নপুর গ্রামের ফিরোজ মিয়ার ছেলে মো. রবিউল ইসলাম।
 
‘এ অবস্থায় আইনজীবী জামাল উদ্দিনের খোঁজ শুরু করি। কিন্তু ভুয়া আইডি হওয়ায় কোনো হদিস পাইনি। অবশেষে আরেকটি মামলায় মো. আরাফাত নামের এক আসামির মামলার তদবিরকারক হিসেবে রবিউল ইসলামের নাম পাওয়া যায়। ভুয়া তথ্য দিয়ে জামিন করানো দুটি ধর্ষণ মামলার তদবিরকারক এবং আরাফাতের তদবিরকারক ব্যক্তি একই। তবে আরাফাতের জামিন আবেদন দাখিলকারী আইনজীবীর নাম জালাল উদ্দিন। কিন্তু অন্য দুটি মামলায় জামাল উদ্দিন হিসেবে থাকা ওই ভুয়া আইনজীবী আর জালাল উদ্দিনের স্বাক্ষরের ভেতরে শব্দগত মিল পাওয়া যায়। আইনজীবী সমিতিতে জালাল উদ্দিনের আইডি নম্বর ৫৪৪০। এ অবস্থায় আদালত জালাল উদ্দিনকে তদবিরকারকসহ তলব করেন। ’
 
জাহিদ সরওয়ার বলেন, তলবে জালাল উদ্দিন হাজির হলেও তদবিরকারক অনুপস্থিত ছিলেন। জালাল উদ্দিন হাজির হয়ে ঘটনার কথা অস্বীকার করেননি। তবে তিনি বলেছেন-সব কাগজপত্র দিয়েছে তদবিরকারক। তিনি কিছু জানেন না। এরপর আদালত রুলসহ আদেশ দেন।  

‘আদেশে ছয় মাসের জন্য সারা দেশের আদালতে মামলা পরিচালনা করতে পারবেন না জালাল উদ্দিন। এছাড়া তার বিরুদ্ধে রুলও জারি করেছেন। রুলে তাকে আইন পেশায় কেন বারিত করা হবে না তা জানতে চেয়েছেন হাইকোর্ট। পাশাপাশি সিআইডিকে ঘটনা তদন্তের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। এ বিষয়ে পরবর্তী আদেশে জন্য ২০ জুলাই দিন নির্ধারণ করা হয়েছে,’ বলেন তিনি।  
 
বাংলাদেশ সময়: ১৯৫৬ ঘণ্টা, মে ২৮, ২০১৮
ইএস/এমএ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।