আয়ারল্যান্ডের প্রথম ইনিংসে অনেকটা দেরিতে বল হাতে নিয়েছিলেন সাকিব আল হাসান। এ নিয়ে সমালোচনাও সইতে হয়েছে তাকে।
সফরকারীদের বিপক্ষে ১৫৫ রানের লিড নিয়ে ফের ফিল্ডিং করছে বাংলাদেশ। শুরুটাও হলো দারুণভাবে। আইরিশদের দ্বিতীয় ইনিংসের প্রথম ওভারেই আঘাত হানলেন সাকিব। তার করা চতুর্থ বলেই আইরিশ ওপেনার জেমস ম্যাককলামের বিপক্ষে হলো লেগ বিফোরের আবেদন। কিন্তু আম্পায়ার আলীম দার মাথা নাড়িয়ে নাকচ করে দিলেন। সঙ্গে সঙ্গে রিভিও নিলেন সাকিব। তার সিদ্ধান্ত যে সঠিক তা রিপ্লেতেই প্রমাণিত হলো। গোল্ডেন ডাক মেরে ফিরলেন ম্যাককলাম।
সাকিবের পর আসরে নামলেন তাইজুল ইসলাম। নিজের প্রথম ওভারটা করলেন মেডেন। এরপর সাকিবের নিয়ন্ত্রিত ওভারের পর ফের আক্রমণে তাইজুল। ওই ওভারের চতুর্থ বলে তার বলের লাইন বুঝতে ভুল করলেন আইরিশ ব্যাটার মারে কামিন্স। বল পায়ে লাগতেই লেগ বিফোরের আবেদন, আম্পায়ার আউটের সিদ্ধান্ত দিলেও রিভিও নিলেন মারে। কিন্তু রিপ্লে দেখে আউটের সিদ্ধান্তই এলো।
নিজের পরের ওভারে ফের আঘাত হানলেন তাইজুল। এবার তার বলে বোল্ড হয়ে ফিরলেন আইরিশ অধিনায়ক অ্যান্ড্রু বলবার্নি (৩)। পরের ওভারে ফের আঘাত হানেন সাকিব। এবার তার বলে উইকেটকিপার লিটন দাসের হাতে ক্যাচ দিয়ে ফেরেন কুর্তিস ক্যাম্ফার (১)। এবার ব্যাটার নিজেই রিভিও নিয়েছিলেন। কিন্তু কাজ হয়নি। মাত্র ১৩ রানেই ৪ উইকেট হারিয়ে বিপাকে পড়ে যায় আইরিশরা।
মিরপুরের শেরে বাংলা জাতীয় ক্রিকেট স্টেডিয়ামে একমাত্র টেস্টে আয়ারল্যান্ডকে ২১৪ রানে অলআউট করে টাইগারদের ব্যাটিংয়ে শুরুটা ভালো হয়নি ততটা। তবে আজ দ্বিতীয় দিনে মুশফিকুর রহিমের সেঞ্চুরি ও সাকিব আল হাসান, মেহেদী হাসান মিরাজের ফিফটিতে বড় সংগ্রহই দাঁড় করিয়েছে স্বাগতিকরা।
২ উইকেটে ৩৪ রান হারানো বাংলাদেশ দল দ্বিতীয় দিনে ব্যাটিংয়ে নামে। অপরাজিত মুমিনুল হকের সঙ্গী হন মুশফিকুর রহিম। কিন্তু মুমিনুল বেশি দূর টানতে পারেননি দলকে। অ্যাডাইয়ারের বলে লেগ স্টাম্প ছেড়ে দেন তিনি, হন বোল্ড। ৩৪ বলে ১৭ রান করে সাজঘরে ফেরত যেতে হয় তাকে।
ক্রিজে এসে প্রথম বলেই বাউন্ডারি হাঁকান সাকিব। সেই আক্রমণের ঝাঁজ তিনি বয়ে নিয়েছেন পরেও। ৪৫ বলে হাফ সেঞ্চুরি হাঁকান, মারেন নয় বাউন্ডারি। এই ব্যাটার ছুটছিলেন সেঞ্চুরির পথেও। ১৭০ রান নিয়ে লাঞ্চে যায় বাংলাদেশ।
বিরতি থেকে ফিরে আক্ষেপে পুড়তে হয় সাকিবকে। সেঞ্চুরি থেকে ১৩ রান দূরে থাকতে ম্যাকবির্নির বলে সুইপ করতে গিয়ে উইকেটরক্ষক লরকান টাকারের হাতে ক্যাচ দেন তিনি। ১৪ চারে ৯৪ বলে ৮৭ রান করেন সাকিব।
সঙ্গী হারালেও ছয়ে নামা লিটন দাসকে নিয়ে রান তোলার গতি ঠিক রাখেন মুশফিক। মুশফিক পেয়ে যান টেস্ট ক্যারিয়ারের দশম সেঞ্চুরিও। অ্যাডায়ের বল কিপার ও স্লিপের মাঝ দিয়ে বাউন্ডারি হাঁকিয়ে সেঞ্চুরি তুলে নেন এই ব্যাটার। দুই ম্যাচ পরই সেঞ্চুরির দেখা পাওয়া মুশফিক শুকরিয়া জানিয়ে সেজদা দিয়ে উদযাপন করেন।
এক পাশে মুশফিক মাইলফলকে পৌঁছালে লিটনও ছুটছিলেন হাফ সেঞ্চুরির পথে। কিন্তু সামনে এগিয়ে মারতে গিয়ে ৪৩ রানে ক্যাচ আউট হন তিনি, আগের বলেই টাকারের ভুলে বেঁচে গিয়েছিলেন নিশ্চিত রান আউট থেকে। এরপর মেহেদি হাসান মিরাজকে নিয়ে চা বিরতিতে যান মুশফিক।
বিরতির পর নেমে আক্রমণাত্মক হতে গিয়ে ১৬৬ বলে ১৫ চার ও ১ ছক্কায় ১২৬ রানে ক্যাচ আউট হন মুশফিক। মিরাজ একপ্রান্তে লড়াই চালিয়ে গেলেও নিচের সারির ব্যাটাররা স্থায়ী হতে পারেননি। শেষ ব্যাটার হিসেবে ৮০ বলে ৫৫ রান করে আউট হন মিরাজ। ম্যাকব্রিনির ঘূর্ণিতে ৩৬৯ রানে শেষ পর্যন্ত অলআউট হয়েছে বাংলাদেশ।
বল হাতে আয়ারল্যান্ডের স্পিনার ম্যাকব্রিনি একাই নেন ৬ উইকেট। আয়ারল্যান্ডের টেস্ট ইতিহাসে প্রথম বোলার হিসেবে ফাইফারের দেখা পেয়েছেন তিনি। এছাড়া ২টি করে উইকেট নিয়েছেন অ্যাডায়ার ও বেঞ্জামিন হোয়াইট।
বাংলাদেশ সময়: ১৬৫৬ ঘণ্টা, এপ্রিল ০৫, ২০২৩
এমএইচএম