নাঈম শেখ ও নাজমুল হোসেন শান্তর দ্রুত বিদায়ে চাপে পড়ে গিয়েছিল বাংলাদেশ। তবে সাকিব আল হাসান ও লিটন দাসের ব্যাটে সহজ জয়ের পথে ছুটছে স্বাগতিকরা।
এই প্রতিবেদন লেখা পর্যন্ত ১৬ ওভারে টাইগারদের সংগ্রহ ২ উইকেটে ৮২ রান। সাকিব ও লিটন দুজনেই ত্রিশোর্ধ্ব রান নিয়ে অপরাজিত রয়েছেন।
আফগানদের ছুড়ে দেওয়া লক্ষ্য তাড়ায় নেমে শুরুটা ভালো হয়নি স্বাগতিকদের। দুই ওপেনার মোহাম্মদ নাঈম ও লিটন দাস রান তুলতে হিমশিম খাচ্ছিলেন। এর মধ্যে নাঈম তো ৮ বল মোকাবিলা করলেও রানের খাতাই খুলতে পারেননি। বোল্ড বিদায় নিয়েছেন আফগান পেসার ফজলহক ফারুকির বলে। এর আগের ম্যাচেও ব্যাট হাতে ব্যর্থ হয়েছিলেন নাঈম, করেছিলেন মাত্র ৯ রান।
নাঈমের পর ব্যর্থ হয়েছেন নাজমুল হোসেন শান্তও। সিরিজের প্রথম ম্যাচে ১২ রান করার পর দ্বিতীয় ম্যাচে ১ রান করেছিলেন তিনি। এবার ফিরেছেন ১১ রান করে, ফারুকির দ্বিতীয় শিকার হয়ে। শান্তকেও বোল্ড করে বিদায় করেছেন ফারুকি। এরপর অবশ্য ম্যাচ বাংলাদেশের দিকে হেলে পড়ে। উইকেট পতন ঠেকিয়ে সাকিব ও লিটন দারুণভাবে রানের চাকা সচল রাখেন।
এর আগে ধবলধোলাই এড়ানোর ম্যাচে আফগান ব্যাটিং লাইনআপকে অল্পতেই গুঁড়িয়ে দিয়েছে টাইগাররা। দুর্দান্ত বোলিংয়ে একাই ৪ উইকেট শিকার করেছেন শরিফুল ইসলাম। এছাড়া বাকি বোলাররাও সহযোগিতা করেছেন দারুণভাবে। শেষ ওয়ানডেতে তাই জয়ের জন্য ১২৭ রানের সহজ লক্ষ্য পেয়েছে বাংলাদেশ।
চট্টগ্রামের জহুর আহমেদ চৌধুরী স্টেডিয়ামে তিন ম্যাচ ওয়ানডে সিরিজের শেষ ম্যাচে টস জিতে ব্যাটিংয়ের সিদ্ধান্ত নিয়েছেন আফগানিস্তানের অধিনায়ক হাশমতউল্লাহ শহীদি। আজমতউল্লাহ ওমরজাই ছাড়া আর কোনো ব্যাটারই থিতু হতে পারেননি। ৭১ বলে ১ চার ও ৩ ছক্কায় সর্বোচ্চ ৫৬ রান করেন ওমরজাই। এটাই তার ক্যারিয়ারের প্রথম ফিফটি।
আগে ফিল্ডিংয়ে নেমে শুরুতেই সাফল্য পায় বাংলাদেশ। নিজের প্রথম ওভারে এক রান দেওয়া শরিফুল উইকেটের দেখা পান দ্বিতীয় ওভারে। প্রথম বলেই তার বল খেলতে গিয়ে উইকেটের পেছনে ক্যাচ তুলে দেন ইবরাহিম। ১ রানে বিদায় নেন তিনি। ওভারের পঞ্চম বলে একই কাজ করেন ব্যাট করতে নামা রহমত শাহ। বল তালুবন্দি করতে ভুল করেননি মুশফিকুর রহিম। শূন্য রানেই বিদায় নেন আফগান ব্যাটার।
৩ রানেই ২ উইকেট হারিয়ে বিপাকে পড়ে যাওয়া আফগানরা বড় ধাক্কা খায় ষষ্ঠ ওভারেই। এরপর তাসকিনের শিকার হয়ে ফেরেন আগের ম্যাচে সেঞ্চুরি হাঁকিয়ে সফরকারীদের ম্যাচ জেতানো গুরবাজ। তাসকিনের লাফিয়ে উঠা বল তার ব্যাটের কানায় লেগে জমা হয় উইকেটরক্ষক মুশফিকুর রহিমের গ্লাভসে। আউট হওয়ার আগে ২২ বলে ৬ রান করেছেন গুরবাজ।
অষ্টম ওভারে আবার আঘাত হানেন শরিফুল। এবার এলবিডব্লিউর ফাঁদে ফেলেন অভিজ্ঞ অলরাউন্ডার মোহাম্মদ নবিকে। তার গুড লেংথের বল শাফল করতে গিয়ে ব্যাটে লাগাতে পারেননি নবি। বল সোজা গিয়ে আঘাত হানে তার প্যাডে। ফলে ১ রানেই ফিরতে হয় তাকে। মাত্র ১৫ রানেই ৪ উইকেট হারিয়ে ফেলা আফগানরা লজ্জার এক রেকর্ডও গড়ে। নিজেদের ওয়ানডে ইতিহাসে এতো কম রানে কখনোই চার উইকেট হারায়নি তারা। ২০১৮ সালে বেলফাস্টে আয়ারল্যান্ডের বিপক্ষে ৪ উইকেট হারিয়েছিল ১৬ রানে।
১০ ওভারের পর দুই প্রান্ত দিয়েই স্পিন আক্রমণ করে বাংলাদেশ। ১৬তম ওভারে গিয়ে উইকেটের দেখা পান সাকিব আল হাসান। তার লেংথ বলে এলবিডব্লিউর শিকার হন ১০ রান করা নাজিবউল্লাহ জাদরান। এরপর তাইজুলের বলে ২২ রানে ফেরেন শহীদি।
দ্বিতীয় স্পেলে এসে আবার উইকেটের দেখা পান শরিফুল। ৯ ওভারে ২১ রান দিয়ে ৪ উইকেট নিয়েছেন তিনি। বাঁহাতি এই পেসারের এটাই ক্যারিয়ারসেরা বোলিং। এছাড়া জিয়াকে নিজের দ্বিতীয় শিকারে পরিণত করেন তাইজুল। এরপর আফগানদের শতরান পার করান ওমরজাই। দারুণ খেলতে থাকা এই ব্যাটার শেষ পর্যন্ত কাটা পড়েন তাসকিনের বোলিংয়ে। ইনিংসের শেষ ব্যাটার হিসেবে আউট হন তিনি। তাইজুলের মতো তাসকিনও শিকার করেন দুটি উইকেট। এছাড়া একটি করে পেয়েছেন মেহেদী হাসান মিরাজ ও সাকিব।
বাংলাদেশ সময়: ১৯০১ ঘণ্টা, জুলাই ১১, ২০২৩
এমএইচএম