বাফুফে সভাপতি কাজী সালাউদ্দিনের পদত্যাগ দাবিতে বেশ কিছুদিন থেকেই বিক্ষোভ করে আসছে দেশের ফুটবলের সবচেয়ে বড় সমর্থক গোষ্ঠী বাংলাদেশ ফুটবল আলট্রাস। তাদের দাবি ছিল কাজী সালাউদ্দিন, জ্যেষ্ঠ সহ-সভাপতি আব্দুস সালাম মূর্শেদী এবং নারী উইংয়ের চেয়ারম্যান মাহফুজা আক্তার কিরণের পদত্যাগ।
সালাম মূর্শেদী ব্যক্তিগত কারণ দেখিয়ে পদত্যাগ করেছেন। বাকি দুই শীর্ষ কর্মকর্তা এখনো কোনও সিদ্ধান্ত নেননি। তাদের পদত্যাগের দাবিতে আজ বাফুফে ভবনের সামনে জড়ো হয়েছিল ফুটবল সমর্থকরা। বেশ কয়েক ঘন্টা তারা সেখানে অবস্থান করেন, স্লোগান দেন। তবে ভবনে আসেননি কোনও কর্মকর্তা। পরে বাফেুফে সাধারণ সম্পাদক ইমরান হোসেন তুষার তাদের সঙ্গে আলোচনা করলে সমর্থকরা ফিরে যান।
তিন দিন আগেই 'লং মার্চ টু বাফুফে' নামক কর্মসূচি ঘোষণা করে আলট্রাস। এর আগে তারা বাফুফে ভবনের সামনে তিন কর্মকর্তার পদত্যাগের দাবি নিয়ে যায়। ২৫ ঘণ্টার আল্টিমেটাম দিয়ে ফিরে আসে। এরপর বাফুফে সভাপতির কাছে পদত্যাগের কথা জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘আলট্রাস কে? আমি তো ওদের চিনি না। ফুটবলে ওদের কী অবদান আছে?’ এমন মন্তব্যের পর ফুঁসে ওঠে ফুটবল সমর্থকরা। ফুটবলের প্রাণ তার সমর্থকরাই। বাফুফে ভবনের উপরের তলায় নারী ফুবলারদের ক্যাম্প রয়েছে। নারী ফুটবলারদের নিরাপত্তার কথা বিবেচনায় নিয়ে বাফুফে সভাপতিকে তিন দিনের সময় দিয়ে 'লং মার্চ টু বাফুফে' কর্মসূচি ঘোষণা করে আলট্রাস। ইতোমধ্যেই নারী ফুটবলারদের দশ দিনের ছুটি দিয়েছে বাফুফে। আগামীকাল থেকে তারা ছুটিতে যাবেন।
আজ সকালে বাফুফে ভবনের সামনে এক দফ এক দাবি নিয়ে হাজির হয় বাংলাদেশ ফুটবল আলট্রাসের সমর্থকরা। আলট্রাসের সাধারণ সম্পাদক মেহেদি হাসান অভি বলেন, ‘আমরা বাফুফে সভাপতি কাজী সালাউদ্দিনের পদত্যাগ চাই। সংগঠক হিসেবে তার সক্ষমতা সকল ক্ষেত্রেই প্রশ্নবিদ্ধ। এছাড়া কিরণ আপার অধীনে নারী ফুটবলের উন্নতির বদলে অবনতিই হচ্ছে। তাই আমরা তাদের পদত্যাগ চাই। তারা যেন আগামীতে নির্বাচন না করে এমনটাই দাবি আমাদের। ’
‘খোলোয়াড় সালাউদ্দিনকে আমরা সম্মান করি এবং ভালোবাসি। খেলোয়াড় হিসেবে দেশের ফুটবলে তার অবদান রয়েছে। তবে সংগঠক হিসেবে তিনি ব্যর্থ। তাই তাকে আমরা আর চাই না। তার প্রতি সম্মান রেখেই আমরা তাকে স্বেচ্ছায় পদত্যাগের সুযোগ দিয়েছিলাম। তবে তিনি আমাদের আন্দোলন করার জন্য বাধ্য করেছেন,’ যোগ করেন তিনি।
আন্দোলনের এক পর্যায়ে বাফুফে সাধারণ সম্পাদক ইমরান হোসেন তুষার আলট্রাস সদস্যদের সঙ্গে কথা বলেন। তিনি বাফুফে সভাপতির সঙ্গে কথা বলবেন বলে জানিয়েছেন। তুষার বলেন, ‘আমি আলট্রাসের আন্দোলনকারীদের সঙ্গে কথা বলেছি। তারা তাদের দাবি জানিয়েছেন। আমি এটা সভাপতিকে জানাবো। এরপরে সিদ্ধান্ত তার একান্ত ব্যক্তিগত বিষয়। এটা নিয়ে আমার কিছু বলার নেই। ’
বাফুফে ভবনের সামনে আজ বিক্ষোভ কর্মসূচি পালিত হবে। এমন অবস্থায় বাফুফে ভবনে ছিল না কোনও বাড়তি নিরাপত্তা। তুষার বলেন, ‘আমি বিশ্বাস করি আলট্রাস ফুটবলকে ভালোবাসে। ফুটবলের কোনও ক্ষতি হয় এমন কোনও পদক্ষেপ তারা নেবে না। বাফুফে ভবনে ভাঙচুর হলে তো ফুটবলই পিছিয়ে যাবে। আমরা ফিফার জরিমানার মুখে পড়বো। তাই আমরা কোনও বাড়তি নিরাপত্তা রাখিনি। ’
ফিফার নিয়ম অনুযায়ী কোনও তৃতীয় পক্ষ বাফুফেতে হস্তক্ষেপ করতে পারবে না। কিংবা বাফুফে ঘিরে কোনও সহিংসতা সংঘটিত হলে তারা হস্তক্ষেপ করবে। আলট্রাস এখন পর্যন্ত যে ধরনের কর্মসূচি পালন করে আসছে তাতে নিয়মানুযায়ী ফিফার হস্তক্ষেপের শঙ্কা তেমন একটা নেই। তবে এই আন্দোলনে সহিংসতা হলেই হতে পারে ফিফার হস্তক্ষেপ। আসতে পারে নিষেধাজ্ঞা। এই বিষয়ে সতর্ক আন্দোলনকারীরাও।
বাংলাদেশ সময়: ১৮৪৫ ঘণ্টা, আগস্ট ১১, ২০২৪
এআর/এমএইচএম