ঢাকা, মঙ্গলবার, ৭ মাঘ ১৪৩১, ২১ জানুয়ারি ২০২৫, ২০ রজব ১৪৪৬

ক্রিকেট

চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফি এখন কক্সবাজারে

ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৬২৫ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ১১, ২০২৪
চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফি এখন কক্সবাজারে

গত সোমবার দুপুর দেড়টার দিকে বাংলাদেশে এসেছিল আইসিসি চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফি। নির্ধারিত সময় অনুযায়ী সেই শিরোপা এখন অবস্থান করছে বিশ্বের দীর্ঘতম সমুদ্র সৈকত কক্সবাজারে।

সমুদ্রের নীল জলরাশির পাশে সোনালী প্রলেপে মোড়ানো ট্রফিটি যেন ছাপিয়ে যাচ্ছে স্বর্গের অপরূপ সৌন্দর্য্যকেও।

বুধবার (১১ ডিসেম্বর) বেলা ১১টার দিকে রোদেলা আকাশ আর হালকা ঠাণ্ডা হাওয়ার মধ্যেই সৈকতের লাবণী পয়েন্টে ট্রফি প্রদর্শনীর আয়োজন করা হয়। বিকেল ৩টা পর্যন্ত বিনা টিকিটে ট্রফির সঙ্গে ছবি তোলার সুযোগ পান দর্শনার্থীরা।

আইসিসির এই শিরোপা দেখতে ভীড় করেন অনেক ক্রিকেটপ্রেমী দর্শনার্থী। তাদের আগমনে সৈকতে এক উৎসবমুখর পরিবেশ সৃষ্টি হয়। নানান বয়সের মানুষ, স্থানীয় বাসিন্দা এবং পর্যটকরা ট্রফি দেখার জন্য ছুটে আসেন। অনেকেই ট্রফির সামনে দাঁড়িয়ে ছবি তুলে জমিয়ে রেখেছেন স্মৃতির পাতায়।

বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি) পরিচালিত সীমান্ত সম্মেলন কেন্দ্র ‘উর্মি’র সামনে বালুতে ট্রফিটি প্রদর্শনের জন্য তৈরী করা হয় একটি বিশেষ মঞ্চ। সমুদ্রের শীতল বাতাস আর ঢেউয়ের অদ্ভূত মন মাতানো শব্দ মিশে এক অপূর্ব দৃশ্যের সৃষ্টি করে। অনেকের মতে, এই আয়োজন কক্সবাজারের পর্যটনে নতুন মাত্রা যোগ করেছে।  

এই আয়োজনের স্বার্থে কঠোর নিরাপত্তার বলয় ছিল। নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে র‍্যাব, পুলিশ, ট্যুরিস্ট পুলিশ এবং গোয়েন্দা সংস্থার বিশেষ টিম মোতায়েন ছিল। ট্রফি উন্মোচনের ঘন্টা দেড়েকের মধ্যে স্থানীয় বাসিন্দা ও পর্যটকদের ভিড়ে ‘উর্মি’র সামনের অংশ উৎসবের মঞ্চে পরিণত হলেও এক ঘণ্টা পর ভিড় কমে যায়। তবে ট্রফি দেখতে এবং ছবি তুলতে পেরে উচ্ছ্বাস প্রকাশ করেন সবাই।

ট্রফি দেখতে এসে অনেকেই উচ্ছ্বাসের সঙ্গে মতামত প্রকাশ করেছেন। এক দর্শনার্থীর ভাষ্য, ‘ট্রফিটি শুধু একটি সোনালি কাপ নয়, এটি বিশ্ব ক্রিকেটে বাংলাদেশের সফলতার স্বপ্ন। এটি আমাদের নতুন প্রজন্মকে অনুপ্রাণিত করবে। ’

আফনান, আরমান ও নয়ন নামে স্থানীয় তরুণরা জানালেন, ‘কক্সবাজার সমুদ্রসৈকতে আইসিসি ট্রফি প্রদর্শনের ব্যাপারটি আমাদের জন্য দারুণ অনুভূতি এবং অনুপ্রেরণা। এই ট্রফি দেখে মনে হয় একদিন আমরাও বাংলাদেশকে বিশ্বকাপ এনে দিতে পারব। সেই লক্ষ্যে খেলে যাওয়ার প্রেরণা পাব। ’

এই আয়োজন কেবল ক্রীড়াপ্রেমীদের জন্য নয়, কক্সবাজারের পর্যটনকেও প্রাণবন্ত করেছে বলে মনে করেন সংশ্লিষ্টরা। কক্সবাজার জেলা ক্রীড়া সংস্থার এডহক কমিটির সদস্য সচিব মাঈন উদ্দিন মিলকী বলেন, ‘সৈকতে আইসিসি ট্রফি প্রদর্শন হওয়ায় অনেকে কক্সবাজারকে গুরুত্ব সহকারে দেখছেন। ভ্রমণের জন্য ইতিবাচক জায়গা হিসেবে পর্যটকরা কক্সবাজারকে বেছে নেবেন বলে আশা রাখছি। ’

আইসিসি ট্রফি প্রদর্শন শুধুমাত্র একটি প্রদর্শনী নয়, এটি বাংলাদেশ ক্রিকেটের ভবিষ্যৎ পরিকল্পনার অংশও বটে। এই আয়োজন নতুন প্রজন্মকে ক্রীড়ার প্রতি আগ্রহী করবে এবং দেশের জন্য গৌরব বয়ে আনতে অনুপ্রাণিত করবে বলে মনে করছেন সচেতন মহল।

তবে অভিযোগও রয়েছে। আইসিসি চ্যাম্পিয়নস ট্রফি কক্সবাজারে প্রদর্শিত হবে এমন আগাম প্রচার প্রচারণা কম থাকায় প্রত্যন্ত অঞ্চল থেকে অনেক ক্রিকেটপ্রেমী তরুণ-তরুণী আসতে পারেনি বলে অনেকের অভিযোগ। একাধিক ব্যক্তি অভিযোগ করে বলেন, গ্রামের অনেকে জানে না আইসিসি ট্রফি কক্সবাজার আসবে। তাই অনেকে এটি দেখতে আসতে পারেনি।

কক্সবাজার সমুদ্রসৈকতে বৈশ্বিক এই ট্রফির উপস্থিতি সমুদ্রের ঢেউয়ের মতোই একটি স্থায়ী স্মৃতি হয়ে থাকল। ক্রিকেট আর প্রকৃতির এই অসাধারণ মেলবন্ধন বাংলাদেশকে বিশ্বদরবারে আরও একবার গর্বিত করুক।

বিশ্বভ্রমণের অংশ হিসেবে পাঁচ দিনের জন্য বাংলাদেশে এসেছে এই ট্রফি। বিসিবি জানিয়েছে, ১০ ডিসেম্বর থেকে ১৩ ডিসেম্বর পর্যন্ত ট্রফিটি প্রদর্শিত হবে। কক্সবাজারের পর এবার ঢাকার বসুন্ধরা শপিং সেন্টার ও শেরে বাংলা স্টেডিয়ামে ট্রফিটি যথাক্রমে ১২ ও ১৩ ডিসেম্বর প্রদর্শিত হবে।

বাংলাদেশ সময়: ১৬২৫ ঘন্টা, ডিসেম্বর ১১, ২০২৪
আরইউ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।