ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ১৮ পৌষ ১৪৩১, ০২ জানুয়ারি ২০২৫, ০১ রজব ১৪৪৬

ক্রিকেট

সৈকতের সিদ্ধান্ত ‘মেনে’ প্রযুক্তিকে দুষলেন রোহিত

স্পোর্টস ডেস্ক | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৬০৮ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ৩০, ২০২৪
সৈকতের সিদ্ধান্ত ‘মেনে’ প্রযুক্তিকে দুষলেন রোহিত

স্নিকোমিটারে বল ব্যাটের ধারে লেগেছে বা গ্লাভসে ছুঁয়েছে কি না, এর কোনো প্রমাণ মেলেনি। কিন্তু খালি চোখে তৃতীয় আম্পায়ার শরফুদ্দৌলা ইবনে শহীদ সৈকত যা দেখলেন, তা কোনোভাবেই এড়িয়ে যেতে পারেননি তিনি।

তাই প্রযুক্তিকে বুড়ো আঙুল দেখিয়ে জায়ান্ট স্ক্রিনে আউটের সিদ্ধান্ত দেন এই আম্পায়ার।

সেই অস্বাভাবিক আউটের শিকার যশস্বী জয়সওয়াল। বলা যায় ম্যাচ বাঁচাতে তখন ভারতের একমাত্র নির্ভরতা ছিলেন তিনি। ব্যাট করছিলেন ৮৪ রানে। কিন্তু প্যাট কামিন্সের বলে হুক করতে গিয়ে ক্যাচ দেন উইকেটরক্ষক অ্যালেক্স ক্যারির হাতে। স্নিকোমিটারে কিছু না বোঝা গেলেও স্পষ্টতই দেখা যায় জয়সওয়ালের ব্যাটে লেগে বলের গতিপথ পরিবর্তন হয়েছে। তবে সাজঘরের ফেরার আগে অনফিল্ড আম্পায়ারদের সঙ্গে তর্ক করেন জয়সওয়াল।

ভারতের অধিনায়ক রোহিত শর্মাও বিশ্বাস করেন বল জয়সওয়ালের ব্যাটে কিংবা গ্লাভসে লেগেছে। কিন্তু দিনশেষে তিনি দুষলেন প্রযুক্তিকেই।  

বাংলাদেশি আম্পায়ারের সিদ্ধান্ত নিয়ে ভারতীয় অধিনায়ক বলেন, ‘আমি জানি না কীভাবে এর ব্যাখ্যা করব। কারণ প্রযুক্তিতে কিছুই ধরা পড়েনি, তবে খালি চোখে দেখলে মনে হবে সে (জয়সওয়াল) বল স্পর্শ করেছে। আমি জানি না, আম্পায়াররা কীভাবে প্রযুক্তি ব্যবহার করতে চান, কিন্তু ন্যায্যতার কথা ভাবলে, আমি মনে করি বল তার (ব্যাটে) লেগেছে। ’

‘আমরা জানি, প্রযুক্তি শতভাগ নির্ভুল নয়। তবে বেশিরভাগ সময় আমরাই এর ভুল দিকে পড়ে যাই। এটাই আমাদের দুর্ভাগ্য। ’

রোহিত আউটের সিদ্ধান্তটি মানলেও তা হজম হয়নি সুনীল গাভাস্কারের। কিংবদন্তি এই ভারতীয় ব্যাটার মনে করেন, যেহেতু প্রযুক্তিতে কিছুই ধরা পড়েনি, তার মানে আউট নয়।

বাংলাদেশি আম্পায়ার সৈকতের সিদ্ধান্তকে ভুল দাবি করে তিনি বলেন, ‘আমরা অনেকবার দেখেছি বল ব্যাটের কিনারার কাছাকাছি এসে সুইং করে। এমনটা অনেকবার দেখেছি আমরা, তাই না? বল কিনারায় লাগেনি, তবে সিমে হিট করার পর কাছাকাছি যেয়ে সুইং করে। দূর থেকে দেখলে মনে বল ব্যাটের ধারে লেগেছে। আমি ফরোয়ার্ড ডিফেন্সের কথা বলছি, হুক শটের কথা নয়। ’ 

‘দৃষ্টিভ্রমের কারণে মনে হবে বল ব্যাটের কানায় লেগেছে। সেই দৃষ্টিভ্রমের ওপর ভিত্তি করেই এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। যদি প্রযুক্তি প্রমাণ করে এটি আউট নয়, তাহলে কোনোভাবেই তা আউট দেওয়া যায় না। ’  

বল যে ব্যাটে লেগেছে, সেটা বুঝতে পেরেছেন জয়সওয়ালও। এমনটাই দাবি করেছেন প্যাট কামিন্স। ম্যাচশেষে সংবাদ সম্মেলনে অজি অধিনায়ক বলেন, ‘এটা পরিষ্কার যে বল তার ব্যাটে লেগেছে, আওয়াজও শোনা গেছে। বলের বাক নেওয়াটাও ছিল স্পষ্ট। তাই একদমই নিশ্চিত ছিলাম যে বল তার ব্যাটে লেগেছে। যখন আমরা রিভিউ নিলাম, তাকে মাথা নিচু করতে দেখা যায় এবং এতেই ইঙ্গিত মিলে সে হিট করেছে বল। স্ক্রিনেও তা দেখা গেছে। আল্ট্রা এজ নিয়ে মনে হয় না কারোরই পুরোপুরি আস্থা রয়েছে এবং তেমন কিছু দেখাও যায়নি। তবে এটা যে আউট তা দেখানোর জন্য সৌভাগ্যবশত অন্যান্য প্রমাণগুলো যথেষ্ট ছিল। ’

নিশ্চিত প্রমাণ থাকার কারণে সৈকত আউটের সিদ্ধান্ত দিয়েছেন বলে মনে করেন টান পাঁচবারের বর্ষসেরা আম্পায়ার সাইমন টফেল। চ্যানেল সেভেনকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে তিনি বলেন, ‘আমার দৃষ্টিতে তা আউট ছিল। দিনশেষে থার্ড আম্পায়ার সঠিক সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। প্রযুক্তিগত পদ্ধতিতে আমাদের একটি পুনরাবৃত্তির স্তর রয়েছে। ’ 

‘যখন আম্পায়ার পরিষ্কারভাবে বলের বাক দেখতে পেলেন, তখন এটি প্রমাণের জন্য আর কোনো প্রযুক্তি ব্যবহারের প্রয়োজন নেই। বলের গতিপথের স্পষ্ট পরিবর্তনই এর চূড়ান্ত প্রমাণ। ’

বাংলাদেশ সময়: ১৫৫৩ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ৩০, ২০২৪
এএইচএস

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।