চট্টগ্রাম জহুর আহম্মেদ স্টেডিয়াম থেকে: গন্তব্য একটাই- হাজার হাজার মানুষের স্টেডিয়াম অভিমুখে যাত্রা। হাতে টিকিট থাকুক আর নাই বা থাকুক বাংলাদেশ দলকে স্বাগত জানাতে স্টেডিয়াম ঘিরে জনস্রোত।
পথে পথে ক্রিকেট পাগলের শেষ নেই। ক্রিকেট পাগল হতে কারও আপত্তি নেই। একেক ঢংয়ে একেক রংয়ে গ্যালারী মাতোনোর সাজ সাজ রব। একই সঙ্গে খেলার টিকিটের হাহাকারও বেশ জোরে-শোরে উঠেছে। টি-টোয়েন্টি ধুমধাড়াক্কা চার-ছক্কার খেলা। সেই খেলার সবচেয়ে বড় বিনোদনই তো তাদেরই ঘরের ছেলে আফতাব আহমেদ-তামিম ইকবালের মারকুটে ব্যাটিং। কে না চাইবে নিজের ঘরের ছেলের ধুমধাড়াক্কা চার-ছয় ঘরের মাঠে বসে দেখতে?
চট্টগ্রামের অলংকার মোড় থেকে স্টেডিয়ামের মূল ফটক পর্যন্ত যেন বাংলাদেশের পতাকার মেলা। এর সাথে যুক্ত হয়েছে অজস্র ছোট ছোট রং-তুলির আঁচড়ে সৃষ্ট জীবন্ত বাঘ। যখন তখন গর্জে উঠতে পারে ভাবখানা এমন। প্লাকার্ড, ফেস্টুন, ব্যানার, বাংলার পতাকা আঁকা মাথার টুপি ইত্যাদি বেচা বিক্রিতেও টি-টোয়েন্টির আমেজ। স্টেডিয়াম ঘিরে নিরাপত্তার শেষ নেই, তারপরও কে কার কথা শোনে? কৌতুহলি মানুষ আর টিকিট কালোবাজারীদের দৌরাত্ম চোখে পড়ার মত। ৫০ টাকার টিকিট ৫০০ থেকে শুরু করে যার কাছে যত পারে বিক্রি সেরে নিচ্ছে।
ঢাকার মালিবাগ সিটি ডেন্টাল কলেজের ছাত্রী নেপাল প্রবাসী দুই বান্ধবী সিন্ধু সারমা ও শরমিথা সাহা এসেছেন চট্টগ্রামে নিজ দেশের খেলা দেখতে। বাংলানিউজের পরিচয় দিয়ে কথা বলতে চাইলে বেশ আগ্রহ সহকারে নিজ দেশের খেলা দেখতে আসার গল্প জানালেন। আজ রাতে ঢাকা থেকে এসেছেন। ইন্টারনেটে আগে থেকেই টিকিট কেটে রাখায় বাড়তি ভোগান্তি পোহাতে হয়নি। নেপাল দলের খেলা সম্পর্কে জানতে চাইলে একটাই প্রত্যাশা ভালো খেলার। নেপাল দলে বেশ কিছু প্রতিভাবান খেলোয়াড় রয়েছে। বাংলাদেশ অনেক ভালো দল। সাকিব তার প্রিয় খেলোয়াড়। আজ অবশ্য প্রিয় খেলোয়াড়ের প্রতি শুভ কামনা জানাতে পারছে না। পুরো চিন্তভাবনা নেপালকে নিয়ে।
কক্সবাজার থেকে আগত বিশ্বনাথ বড়–য়া পেশায় হোটেলে চাকুরী করেন। গাঁয়ে রং মেখে টাইগার সেজে স্টেডিয়ামের চারপাশে ঘুর ঘুর করছে। কিন্তু কাছে কোনো টিকিট না থাকায় মন খারাপ। তবে তার ধারণা তাকে এমনিতে মাঠে প্রবেশ করতে দেওয়া উচিৎ। হয়তো বাঘ সাজার কারণে তাকে গেটে আটকাবে না। তিনিতো বাংলাদেশকে জিতাতে এসেছেন।
টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের আগে সদ্য সমাপ্ত শ্রীলঙ্কা সিরিজ, এশিয়া কাপে বাংলাদেশ দলের বাজে পারফরমেন্স, দল নির্বাচন নিয়ে নানা গুজব, অভ্যন্তরীণ কোন্দল, অধিনায়কের সঙ্গে প্রধান নির্বাচকের মনোমালিন্য সবই এখন পুরানো স্মৃতি। ১৬ মার্চ সব জবাব এক সাথে দিয়েছে মুশফিক বাহিনী। আফগানিস্তানের সঙ্গে বিশাল জয় নতুন আশার সঞ্চার করেছে। এখন শুধু অপেক্ষা টেস্ট প্লেয়িং কান্ট্রি হয়ে বাছাই পর্ব খেলার কষ্ট ভুলে চূড়ান্তপর্ব মাতানো। এর থেকে রাজসীক প্রত্যাবর্তন আর কি হতে পারে বাংলাদেশ ক্রিকেট দলের জন্য।
বাংলাদেশ সময়: ১৯৫৩ ঘণ্টা, ১৮ মার্চ ২০১৪