ঢাকা: বসুন্ধরা সিমেন্ট পাঁচ ম্যাচের ওয়ানডে সিরিজের চতুর্থ ম্যাচেও জয় পেয়ে ধারাবাহিকতা ধরে রেখেছে স্বাগতিক বাংলাদেশ। তবে সিরিজের প্রথম তিনটি ম্যাচের মতো দাপুটে ছিল না এ জয়।
পুরোন চেহারায় স্বাগতিকদের টপ অর্ডার
টসে জিতে ব্যাটিং বেছে নেন অধিনায়ক মাশরাফি মুর্তজা। কিন্তু এদিন পুরোপুরি ব্যর্থ টপ অর্ডার। একমাত্র এনামুল হক বিজয় ছাড়া উইকেট বিলিয়ে এসেছেন তামিম ইকবাল,ইমরুল কায়েস, সাকিব আল হাসান। ফলে স্কোর বোর্ডে ৩২ রান তুলতেই স্বাগতিকদের নেই চার উইকেট।
মাহমুদুল্লাহ-মুশফিকের ঘুরে দাড়ানো
পুরো সিরিজে প্রথমবারের মতো টাইগারদের বাগে পেল জিম্বাবুয়ে। কিন্তু পঞ্চম উইকেটে ১৩৪ রানের পার্টনারশিপ গড়ে ঘুরে দাড়ালেন মাহমুদুল্লাহ ও মুশফিক জুটি। তবে মুশফিক ছিলেন বেশি আক্রমণাত্মক। আট চারে ৭৮ বলে ৭৭ রান করেন মুশফিক। অন্যদিকে মাহমুদুল্লাহর ঠাণ্ডা মাথার ব্যাটিংয়ে দিশেহারা হয়ে পড়ে জিম্বাবুয়ের বোলাররা। তবে লেগ স্পিনার কামুনগুজির বলে মুশফিক কাভারে দাড়িয়ে থাকা চিগাম্বুরার হাতে ক্যাচ দিলে ১৬৬ রানে পঞ্চম উইকেট হারায় বাংলাদেশ।
মাশরাফির ঝড়
মুশফিকের বিদায়ের পর দ্রুতই সাব্বির এবং আবুল হাসান আউট হয়ে গেলে স্বাগতিকদের স্কোর দুইশ পেরেবো কি না- তা নিয়ে দেখা দেয় শঙ্কা দেখা দিয়েছিল। কিন্তু মাশরাফির চারটি চার এবং দুই ছক্কায় ২৫ বলে ৩৯ রানের ঝড়ো ইনিংসের সুবাদে বাংলাদেশের স্কোর আড়াশ পেরোয়। শেষ পর্যন্ত মাহমুদুল্লাহ ৮২ রানে নট আউট থাকেন।
জিম্বাবুয়ের ওপেনারদের চোখ রাঙ্গানো
২৫৭ রানের টার্গেটে ব্যাট করতে নেমে ভালোই শুরু করেছিলেন সফরকারীদের দুই ওপেনার হ্যামিল্টন মাসাকাদজা এবং ভুসিমুজি সিবান্দা। প্রথম দশ ওভারে ৪৮ রান তুলে মাশরাফির মাথা ব্যথার কারণ হয়ে দাড়িয়েছিল এ জুটি।
সাকিবের ব্রেক-থ্রু
ব্যাট হাতে করেছিলেন এক রান। কিন্তু বল হাতে ব্রেক-থ্রু এনে দিতে সময় নেননি এ অলরাউন্ডার। নিজের তৃতীয় ওভারের প্রথম বলে এবং ইনিংসের ১১তম ওভারে সিবান্দাকে এলবিডাব্লিউর ফাঁদে ফেলে টাইগারদের প্রথম সাফল্য এনে দেন সাকিব। এরপর মাসাদকাদজাকে বোল্ড করলে জিম্বাবুয়ের রান দাড়ায় দুই উইকেটে ৫২ রান।
জুবায়েরের অভিষেক উইকেট
এ ম্যাচ দিয়ে লেগ স্পিনার জুবায়ের হোসেনের ওয়ানডে অভিষেক হয়েছে। তিনিও হতাশ করেননি। ক্যারিয়ারের পঞ্চম বলেই মারুমাকে বোল্ড করে প্রথম আন্তর্জাতিক উইকেটের স্বাদ পান এ লেগ স্পিনার। জিম্বাবুয়ের স্কোর দাড়ায় ১৭ ওভারে তিন উইকেটে ৬০ রান।
টেইলর- সলোমনের প্রতিরোধ
চতুর্থ উইকেটে টেইলর এবং সলোমন ১০৬ রানের পার্টনারশিপ গড়লে ম্যাচ জয়ের স্বপ্ন দেখতে থাকে সফরকারীরা। দু’জনের সাবলীল ব্যাটিংয়ে এক সময় ম্যাচের নিয়ন্ত্রণ নিয়ে নেয় জিম্বাবুয়ে। সলোমন মির এবং ব্রেন্ডন টেইলর দুজনেই তুলে নেন হাফ সেঞ্চুরি।
টাইগারদের স্বস্তির নিঃশ্বাস
তবে এবারো স্বাগতিকদের বিপদ থেকে রক্ষা করলেন জুবায়ের। ইনিংসের ৩৪তম ওভারের শেষ বলে সলোমনের উইকেট তুলে নিলে স্বস্তি ফিরে আসে টাইগারদের ড্রেসিং রুমে। জিম্বাবুয়ের স্কোর দাড়ায় চার উইকেটে ১৬৬ রান। এরপর পাওয়ার প্লে শুরু হওয়ার আগে ব্রেন্ডন টেলর ৬৩ রান করে দলীয় ১৭২ রানের মাথায় রুবেল হোসেনের বলে আউট হলে পথ হারিয়ে ফেলে সফরকারীরা। এরপর মাশরাফি এলটন চিগাম্বুরার উইকেট তুলে নিলে জয় নিশ্চিত হয়ে যায় বাংলাদেশের।
এ ম্যাচটিতে জয় পেতে কষ্ট হয়েছে বাংলাদেশের, কিন্তু ম্যাচের অভিজ্ঞতা কাজে লাগিয়ে পঞ্চম ওয়ানডেতে আরো সতর্ক হবে মাশরাফির দল- এমনটাই প্রত্যাশা টাইগার ভক্তদের।
অন্যদিকে আরেকটি ‘বাংলাওয়াশ’ দেখার অপেক্ষায় সমর্থকরা। যেকোনো দলকেই সিরিজে ৫-০ হারানো সবসময়ই বিশেষ কিছু। অজেয় বাংলাদেশ দলের চেহারা দেখতে অপেক্ষা মাত্র একটি ম্যাচের!
বাংলাদেশ সময়: ২২০০ ঘণ্টা, নভেম্বর ২৮, ২০১৪