ঢাকা: বাংলাদেশে বাঁহাতি স্পিনারদের কদর বেশি। ক্রিকেটের কুলীন ব্যাটসম্যানরাও টাইগারদের বাঁহাতি স্পিনারদের সমীহ করেন।
ক্রিকেট রোমান্টিকদের কাছে নস্টালজিয়ার অপর নাম লেগ স্পিন বোলিং, এই কথা বললে খুব বেশি বলা হবে না। শেন ওয়ার্ন, অনিল কুম্বলের অবসরের পর থেকেই ক্রিকেট বিশ্বে লেগ স্পিনারাও যেন দৃশ্যপট থেকে উধাও।
মাঝে মাঝে ভারতের অমিত মিশ্র কিংবা নিউজিল্যান্ডের ইশ সোধি দু’একটি ম্যাচ খেলেন আর দীর্ঘশ্বাস ফেলেন ক্রিকেট রোমান্টিকরা। কিন্তু এই মারকাটারি ক্রিকেটের যুগে লেগ স্পিন নামক শিল্পের কদর কোথায়?
কব্জির যাদুতে ব্যাটসম্যানকে বিভ্রান্ত করার চেয়ে দলগুলোর চাওয়া দ্রুত উইকেট নেওয়া কিংবা রানের চাকা থমকে দিয়ে প্রতিপক্ষকে বিপদে ফেলা। এজন্য অধিনায়করাও চান না কোন ধরনের ঝুঁকি নিতে, ফলে লেগ স্পিনাররা যে ক্রিকেটে এখন এক বিরল প্রজাতি হয়ে যাচ্ছে এই কথা বললে খুব বেশি বলা হবে না।
জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে হোম সিরিজেই ডেব্যু হয়েছে লিখনের। টেস্ট সিরিজে নজর কেড়েছেন এই লেগি। বিশেষ করে খুলনা টেস্টের শেষ দিনে চা বিরতির আগে স্বাগতিকদের প্রয়োজন ছিল ব্রেক থ্রু। চা বিরতির আগে দুটি উইকেট তুলে নিয়ে মুশফিককে স্বস্তি এনে দিয়েছিলেন লিখন।
ওয়ানডেতেও দুর্দান্ত শুরু করেছেন লিখন। চতুর্থ ওয়ানডেতে যখন ব্রেন্ডন টেলর এবং সোলমন মায়ারের ১০৬ রানের পার্টানারশিপ বাংলাদেশকে ম্যাচ থেকে ছিটকে দিচ্ছিল তখনও প্রয়োজনীয় ব্রেক থ্রু এনে দেন লিখন।
এভাবে দলের প্রয়োজনে ভূমিকা রাখতে পেরে বেশ আনন্দিত এই লেগ স্পিনার, বড় জুটিগুলো ভাঙতে পারায় আমি খুশি, আমার কাছে ভালো লেগেছে। আমি শুরুতে অনেক রান দিয়েছিলাম। কিš‘ তারপরও বড় জুটিটাই ভেঙেছি। এজন্য সবাই খুব খুশি। দলে আমার যে ভূমিকা সেটা করতে পেরেছিলাম। এমনকি সময় মতো একটা ব্রেক থ্রুও এনে দিতে পেরেছি।
টেস্ট এবং ওয়ানডে দুই ফরম্যাটেই অভিষেক হয়েছে জুবায়েরের, পার্থক্যটাও বুঝতে শিখছেন বলে জানালেন এই লেগ স্পিনার। টেস্টে উইকেট পেতে হয় আর ওয়ানডেতে রান রেট নিয়ন্ত্রনে রেখে বোলিং করতে হয়। শুক্রবার আমি একটু বেশি নার্ভাস ছিলাম। কেন ছিলাম বুঝতে পারিনি। প্রথম টেস্টে নামার সময়ও একটু নার্ভাস ছিলাম। কিš‘ দ্বিতীয় ও তৃতীয় টেস্টে সেটা আর হয়নি। আশা করছি ওয়ানডেতেও পরের ম্যাচে সুযোগ পেলে ঠিক হয়ে যাবে। ’
গতকাল এক ওভারে ১৩ রান দেয়ার পর নার্ভাস হয়েছিলেন কিনা জানতে চাইলে লিখন বলেছেন, ‘যখন ওরা মারছিল তখন সিনিয়র ক্রিকেটাররা আমাকে বলেছেন, এটা কোনো সমস্যা না। ক্লাব ক্রিকেটে যেমন করে বোলিং করিস তেমনটা কর। তারপর একটু সাহস পেয়েছি। মিরপুরে মাঠে এতো দর্শক, উল্লাস সব মিলিয়ে একটু নার্ভাস ছিলাম। পরের দিকে অবশ্য ভালো হয়েছে। ’
সামনেই বিশ্বকাপ। তবে বিশ্বকাপ দলে জায়গা পাওয়ার বিষয়টি ছেড়ে দিলেন নির্বাচকদের উপর, আমার কাজ হলো ভালো পারর্ফম করা। এরপর দলে আমি কতটুকু ভূমিকা রাখতে পারব তা ঠিক করবেন নির্বাচকরা।
লিখন হয়তো তার কব্জি যাদুতে ২২ গজে লিখবেন নতুন ইতিহাস, তার পারফরমেন্স এমনই ইংগিত দিচ্ছে।
বাংলাদেশ সময়: ২১০০ ঘন্টা, ২৯ নভেম্বর ২০১৪