ঢাকা, শুক্রবার, ২১ আষাঢ় ১৪৩১, ০৫ জুলাই ২০২৪, ২৭ জিলহজ ১৪৪৫

ক্রিকেট

শিরোপার স্বাদ পাননি যে কিংবদন্তিরা

তৌহিদুল আলম, স্পোর্টস করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১০৪৯ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ১৩, ২০১৫
শিরোপার স্বাদ পাননি যে কিংবদন্তিরা সৌরভ গাঙ্গুলি, রাহুল দ্রাবিড়, ব্রায়ান লারা ও জ্যাক ক্যালিস

ঢাকা: ক্যারিয়ারে একবার বিশ্বকাপ ট্রফি উচিয়ে ধরতে কে না চায়। তবে তা অধরাই থেকে যায় বেশিরভাগ ক্রিকেটারের কাছে।

কিন্তু যেসব ক্রিকেটাররা ক্যারিয়ার জুড়ে বিশ্ব ক্রিকেটকে শাসন করেছেন প্রতাপের সঙ্গে, তারাও যদি শিরোপা জয় না করেন তবে তাদের অভাগাই বলতে হয়। বিশ্বকাপ জিততে না পারার আক্ষেপ নিয়েই ক্যারিয়ার শেষ করতে হয়েছে অনেক কিংবদন্তি ক্রিকেটারকে। বিশ্বকাপ জিততে ‍না পারা সেইসব ক্রিকেটারদের কথা তুলে ধরা হলো বাংলানিউজের পাঠকদের জন্য।

সৌরভ গাঙ্গুলি
সৌরভ গাঙ্গুলির অধিনায়কত্বেই ভারতীয় ক্রিকেটের খোলনলচে পাল্টে গিয়েছিলো। দলের মধ্যে এনেছিলেন লড়াইয়ের মানসিকতা। কিন্তু তিনি জিততে পারেননি বিশ্বকাপ। তার ক্ষুরধার ক্রিকেট জ্ঞান সমৃদ্ধ অধিনায়কত্বের জোরেই ২০০৩ সালে ভারত পৌঁছে যায় বিশ্বকাপের ফাইনালে। কিন্তু অস্ট্রেলিয়ার কাছে হেরে যায় দল তার দল। ২০০৭ সালে ভারত গ্রুপ পর্ব থেকে বিদায় নিলেও ১৯৯৯ সালে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে রাহুল দাব্রিড়ের সঙ্গে ৩১৮ রানের পার্টানারশিপ গড়ে রেকর্ড গড়েছিলেন কলকাতার মহারাজ। ওই ম্যাচে তিনি খেলেছিলেন ১৮৩ রানের এক ইনিংস। সৌরভ গাঙ্গুলি ১৯৯৯, ২০০৩, ২০০৭ বিশ্বকাপে খেলেছেন।

সাঈদ আনোয়ার
বিশ্বকাপ জিততে পারেননি তবে আক্রমণাত্মক এই উদ্বোধনী ব্যাটসম্যান ক্রিকেটে স্মরণীয় হয়ে থাকবেন বহুকাল। টি-টোয়েন্টি যুগের আগেই সাঈদ আনোয়ারের স্ট্রাইক রেট থাকতো ৮০ এর ঘরে। ভারতের বিপক্ষে তার ১৯৪ রানের ইনিংসটি বহুদিন একদিনের ক্রিকেটের সর্বোচ্চ ব্যক্তিগত রানের রেকর্ড ধরে রেখেছিলো। শারজায় বোলারদের তুলোধুনো করে গড়েছেন একের পর এক রেকর্ড। কিন্তু তারপরও বিশ্বকাপ জেতা হয়নি এই বাঁহাতি ব্যাটসম্যানের। ৯৬ সালে ভারতের বিপক্ষে কোয়ার্টার ফাইনাল থেকে ছিটকে গিয়েছিল তার দল। এরপরের আসর ১৯৯৯ বিশ্বকাপে ফাইনালে উঠেও শিরোপা জিততে পারেনি পাকিস্তান। ২০০৩ সালে দক্ষিণ আফ্রিকা বিশ্বকাপে গ্রুপ পর্বে ভারতের বিপক্ষে সেঞ্চুরি করেছিলেন এই স্টাইলিশ ব্যাটসম্যান। সাঈদ আনোয়ার খেলেছেন ১৯৯৬, ১৯৯৯, ২০০৩ বিশ্বকাপ

ব্রায়ান লারা
ক্রিকেটের বরপুত্র খ্যাত ব্রায়ান লারাকে সর্বকালের সেরা প্রতিভাবান ব্যাটসম্যান হিসেবে বিবেচনা করা হয়। নান্দনিক ব্যাটিংয়ে মুগ্ধ করেছেন দুনিয়াব্যাপী ক্রিকেটভক্তদের কিন্তু পাননি বিশ্বকাপ শিরোপা। ১৯৯৬ সালে সেমিফাইনালে চার রানে হেরে গিয়েছিল ওয়েস্ট ইন্ডিজ। ২০০৭ সালে নিজ দেশে আয়োজিত বিশ্বকাপে খেলেন ক্যারিয়ারের শেষ ইনিংস। ইংল্যান্ডের বিপক্ষে ২২ রান করে রান আউট হয়েছিলেন এই ক্রিকেট শিল্পী। ১৯৯২, ১৯৯৬, ১৯৯৯, ২০০৩ এবং ২০০৭ বিশ্বকাপ খেলেছেন ব্রায়ান চার্লস লারা।

জ্যাক ক্যালিস
সর্বকালের সেরা অলরাউন্ডারদের একজন জ্যাক ক্যালিস। কিন্তু চোকার খ্যাত দক্ষিণ আফ্রিকার মতো তারও পোড়া কপাল। ব্যক্তিগত অর্জনের খাতায় সবই পেলেও পাননি বিশ্বকাপ। ১৯৯৯ এবং ২০০৭ আসরে সেমিফাইনালে তার দল জিততে জিততে হেরে যায়। ২০১১ বিশ্বকাপে ঢাকায় কোয়ার্টার ফাইনালে অপ্রত্যাশিতভাবে অপেক্ষাকৃত দুর্বল নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে হেরে বিদায় বিশ্বকাপ থেকে বিদায় নেয় দক্ষিণ আফ্রিকা।

রাহুল দ্রাবিড়
‘দ্য ওয়াল’ নামে পরিচিত ভারতীয় লিজেন্ড রাহুল দ্রাবিড়েরও জেতা হয়নি বিশ্বকাপ। রাহুল দ্রাবিড় খেলেছন ৯৯, ২০০৩ এবং ২০০৭ সালের বিশ্ব আসরে।   ২০০৩ সালে ‍তার দল ফাইনালে গেলেও অস্ট্রেলিয়া তাদের শিরোপা বঞ্চিত করে। ২০০৭ বিশ্বকাপে তার নেতৃত্বেই গ্রুপ পর্ব থেকে বিদায় নেয় ভারত।

ইয়ান বোথাম
নিঃসন্দেহে সর্বকালের সেরা অলরাউন্ডারদের একজন। কিন্তু জিততে পারেননি বিশ্বকাপ। ইংরেজ এই অলরাউন্ডারের চোখের সামনেই তারই প্রতিদ্বন্দ্বি আরেক অলরাউন্ডার পাকিস্তানের ইমরান খান ১৯৯২ বিশ্বকাপ শিরোপা জেতেন।  

অনিল কুম্বলে
পাকিস্তানের বিপক্ষে ৯৯ সালে দিল্লি টেস্টে এক ইনিংসে দশ উইকেট নিয়েছিলেন ভারতীয় লেগ স্পিনার অনিল কুম্বলে। কিন্তু তার কপালেও জোটেনি বিশ্বকাপ ট্রফি। বিশ্বকাপ ছাড়া ক্রিকেট ক্যারিয়ারের আর সবকিছুই জিতেছেন এই লেগ স্পিনার।

ওয়াকার ইউনুস
বিশ্বকাপ জিততে না পারা কিংবদন্তিদের তালিকায় সবচেয়ে দুর্ভাগা ক্রিকেটারের নাম ওয়াকার ইউনুস। পাকিস্তানের এই গতি তারকা ৯২ সালের অস্ট্রেলিয়া বিশ্বকাপে ইনজুরির জন্য খেলতে পারেননি। সেবারই পাকিস্তান শিরোপা জিতেছিল। এরপর ১৯৯৬ সালে কোয়ার্টার ফাইনালে ভারতের বিপক্ষে হেরে বিদায় নেয় পাকিস্তান। ৯৯ সালে ইংল্যান্ড বিশ্বকাপের ফাইনালে অস্ট্রেলিয়ার কাছে হেরে শিরোপা বঞ্চিত থাকতে হয় দুর্ধর্ষ এই পেসারকে।

কার্টলি অ্যাম্ব্রোস
আগ্রাসী পেস বোলিংয়ের উদাহরণ হয়ে আছে ওয়েস্ট ইন্ডিজের পেসার কার্টলি অ্যাম্ব্রোস। ক্যারিয়ার জুড়ে ব্যাটসম্যানদের কাছে বিভীষিকা হয়েছিলেন তিনি। কিন্তু তারও অধরাই রয়ে যায় বিশ্বকাপ শিরোপা। ১৯৯৬ সালে সেমিফাইনালে অস্ট্রেলিয়ার কাছে হেরে বিদায় নেয় তার দল।

জন্টি রোডস
ফিল্ডিংকে শিল্পের পর্যায়ে নিয়ে গেছেন এই প্রোটিয়া তারকা। শৈল্পিক ফিল্ডিংয়ের জন্য বিশ্বব্যাপী তারকা হয়ে ওঠার নমুনা শুধু জন্টি রোডসের। ৯২ বিশ্বকাপে ইনজামামুল হককে রান আউট করেই উড়ন্ত ফিল্ডার খেতাব পান। কিন্তু অন্যান্য প্রোটিয়াদের মতো তিনিও দুর্ভাগা। বারবার শক্তিশালী দল নিয়ে শিরোপার কাছাকাছি গিয়েও শিরোপা বঞ্চিত থাকতে হয়েছে রোডসকে।

বাংলাদেশ সময়: ১০৫০ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ১৩, ২০১৫

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।