ঢাকা, সোমবার, ২৪ আষাঢ় ১৪৩১, ০৮ জুলাই ২০২৪, ০০ মহররম ১৪৪৬

ক্রিকেট

বিশ্বকাপে ভারত-পাকিস্তান দ্বৈরথ

তৌহিদুল আলম, স্পোর্টস করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২০০৬ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ১৪, ২০১৫
বিশ্বকাপে ভারত-পাকিস্তান দ্বৈরথ ফাইল ফটো

ঢাকা: ক্রিকেটের দুই চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী ভারত-পাকিস্তানের লড়াই মানেই মর্যাদার। আর বিশ্বকাপের ম্যাচে এ লড়াই আরো বেশি।

ম্যাচ চলাকালে খেলোয়াড়দের পাশাপাশি সমর্থকদের মধ্যেও বিরাজ করে উত্তেজনা। যদিও বিশ্বেকাপের এ উত্তেজনায় ভারতীয় সমর্থকরাই জয়ী।

বিশ্বকাপে এখন পর্যন্ত দল দু’টি পাঁচবার মুখোমুখি হয়ে সবগুলোতেই জয় তুলে নেয় ভারত। তবে একদিনের আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে দল দু’টির ১২৬ ম্যাচের মুখোমুখিতে পাকিস্তানের জয় ৭২টি। আর ভারতের জয় ৫০টি। ফলাফল হয়নি চার ম্যাচের।

‌একনজরে ভারত-পাকিস্তানের বিশ্বকাপের পাঁচ ম্যাচের পরিসংখ্যান:

১৯৯২ বিশ্বকাপ
অস্ট্রেলিয়া-নিউজিল্যান্ডে অনুষ্ঠিত বিশ্বকাপের পঞ্চম আসরেই প্রথমবার মুখোমুখি হয় ভারত-পাকিস্তান। ৪ মার্চ সিডনি ক্রিকেট গ্রাউন্ডে ভারতীয় অধিনায়ক আজহার উদ্দিন টস জিতে ব্যাটিংয়ের সিদ্ধান্ত নেন। ক্রিকেট লিজেন্ড শচীন টেন্ডুলকারের ৫৪ রানের কল্যাণে সাত উইকেটে ২১৬ রান করে ভারতীয়রা।

২১৭ রানের জয়ের লক্ষ্যে খেলতে নেমে মাত্র ১৭৩ রানে সাজঘরে ফেরেন পাকিস্তানের সব ব্যাটসম্যান। আমির সোহেল (৬২) ও জাভেদ মিয়াদাদ (৪০) রান করেও দলের জয় নিশ্চিত করতে পারেন নি। এর ফলে ৪৩ রানের জয় নিয়ে মাঠ ছাড়ে ভারতীয়রা। ভারতের পক্ষে কপিল দেব, মনোজ প্রভাকার ও জাভাগাল শ্রীনাথ ২টি করে উইকেট নেন।

১৯৯৬ বিশ্বকাপ
এ আসরে দুই চিরপ্রতিদ্বন্দ্বীর সাক্ষাত হয় কোয়ার্টার ফাইনালে। ৯ মার্চ ব্যাঙ্গালুরুতে নিজ মাঠে টস জিতে ব্যাটিং নেয় ভারত। শুরুতে নভজিত সিং সিধুর ৯৪ ও শেষ দিকে অজয় জাদেজার ২৫ বলে ৪৫ রানের ঝড়ো ইনিংসে ভর করে পাকিস্তানকে ২৮৮ রানের টার্গেট দেয় স্বাগতিকরা।
জবাবে আমির সোহেল ও সাঈদ আনোয়ার পাকিস্তানকে চমৎকার শুরু এনে দিলেও মিডল অর্ডারের ব্যর্থতায় সে ম্যাচ ৩৯ রানে হেরে বিশ্বকাপ থেকে বিদায় নেয় পাকিস্তান। ওই ম্যাচে নিয়মিত অধিনায়ক ওয়াসিম আকরামের জায়গায় দায়িত্ব পালন করেন আমির সোহেল।

ভারতের পক্ষে অনিল কুম্বলে ও ভেঙ্কটেশ প্রসাদ ৩টি করে উইকেট তিনি। পাকিস্তানের ব্যাটিং কিংবদন্তি জাভেদ মিয়াদাদের ক্যারিয়ারের শেষ ম্যাচ ছিল ঔটি।

১৯৯৯ বিশ্বকাপ
ইংল্যান্ড বিশ্বকাপে সুপার সিক্স পর্বের ম্যাচে ৮ জুন ম্যানচেস্টারে মুখোমুখি হয় আজহার উদ্দিনের ভারত এবং ওয়াসিম আকরামের পাকিস্তান। তৃতীয়বারের এ মুখোমুখিতেও টস জিতে ব্যাট করে ছয় উইকেট ২২৭ রান সংগ্রহ করে ভারত। ম্যাচে ‘দ্য ওয়াল’ খ্যাত রাহুল দ্রাবিড় করেন ৬১ রান। এছাড়া অধিনায়ক আজহার উদ্দিনের ব্যাট থেকে আসে ৫৯ রান। ব্যাটিং জিনিয়াস শচীনের ব্যাট থেকে আসে ৪৫ রান। পাকিস্তানের পক্ষে ১০ ওভারে ২৭ রান দিয়ে ২ উইকেট নেন ওয়াসিম আকরাম।

২২৮ রানের টার্গেটে ব্যাট করতে নেমে ৪৫ ওভার ৩ বলে ১৮০ রানে অল আউট হয় পাকিস্তান। এতে ৪৭ রানের জয় পায় ভারত। পাকিস্তানের পক্ষে ইনজামাম-উল-হক ৪১, সাঈদ আনোয়ার ৩৬ ও মঈন খান করেন ৩৪ রান। ভারতের পক্ষে মাত্র ২৭ রান দিয়ে পাকিস্তানের ৫ উইকেট তুলে নেন ভেঙ্কটেশ প্রসাদ।

২০০৩ বিশ্বকাপ
গ্রুপ পর্বের ম্যাচে দক্ষিণ আফ্রিকার সেঞ্চুরিয়ানে পাকিস্তানকে ছয় উইকেটে হারায় ভারত। ওই  ম্যাচে প্রথমবারের মতো টস জিতে ব্যাটিংয়ের সিদ্ধান্ত নেন অধিনায়ক ওয়াকার ইউনূস। ব্যাট করতে নেমে ৭ উইকেটে ২৭৩ রান করে পাকিস্তান। দলের পক্ষে বাঁহাতি ওপেনার সাঈদ আনোয়ার করেন ১০১ রান। ভারতের পক্ষে বাঁহাতি জহির খান ও অশিস নেহারা ২টি করে উইকেট নেন।

২ রানের জন্য সেঞ্চুরি বঞ্চিত হলেও শচীন টেন্ডুলকারের ঝড়ো ইনিংসের কল্যাণে ২৬ বল বাকি থাকতেই ছয় উইকেটে জয় তুলে নেয় ভারত। এছাড়া বাঁহাতি ব্যাটসম্যান যুবরাজ সিং ৫০ ও রাহুল দ্রাবিড় ৪৪ রানে অপরাজিত থাকেন। পাকিস্তানের পক্ষে ২ উইকেট নেন ওয়াকার ইউনুস।

২০১১ বিশ্বকাপ
উপমহাদেশে অনুষ্ঠিত দশম বিশ্বকাপের সেমিফাইনালে দেখা হয় দু’দলের।   ৩০ মার্চ মোহালিতে অনুষ্ঠিত ওই ম্যাচে এবারও দলের পক্ষে সর্বোচ্চ রান করেন ‘গড অব ক্রিকেট’ খ্যাত শচীন। ইনিংসে শচীনের ৮৫ রান ছাড়াও ওপেনার বীরেন্দ্র শেভাগ করেন ৩৮ রান। শেষ পর্যন্ত ৯ উইকেটে ২৬০ রান সংগ্রহ করে ভারত। পাকিস্তানের পক্ষে ওয়াহাব রিয়াজ ৫ উইকেট।

জয়ের লক্ষে ব্যাট করতে নেমে ১ বল বাকি থাকতেই ২৩১ রানে অলআউট হয় পাকিস্তান। পাকিস্তানের ইনিংসে সর্বোচ্চ ৫৬ রান করেন মিসবাহ-উল-হক। এছাড়া মোহাম্মদ হাফিজ করেন ৪৩ রান। ভারতের পক্ষে জহির খান, অশিস নেহেরা, মুনাফ প্যাটেল, হরভজন সিং ও যুবরাজ সিং ২টি করে উইকেট নেন। ফলে ২৯ রানে পাকিস্তানকে হারিয়ে ২৮ বছর পর বিশ্বকাপের ফাইনালে ওঠে মহেন্দ্র সিং ধোনির দল।

এ বিশ্বকাপে এখানেই থ‍ামেনি ভারত। বিশ্বকাপ জয় দিয়ে মিশন শেষ করে তারা।

পাকিস্তানের পরাজয়ের কারণ
বিশ্বকাপ মঞ্চে ভারতের কাছে পাকিস্তানের টানা পরাজয়ের ব্যাখ্যা দিতে গিয়ে সে সময়ের সাবেক ওপেনার রমিজ রাজা (এশিয়া কাপ চলাকালে) বাংলানিউজকে বলেন, চাপে পড়লে পাকিস্তানের ক্রিকেটাররা ভেঙে পড়েন। দু’দলের হাই-ভোল্টেজ ম্যাচে ভারতীয় ক্রিকেটাররা চাপ জয় করেই ভালো খেলে।

তিনি বলেন, ‘ভারত-পাকিস্তান ম্যাচ মানে শুধু ২২ গজের লড়াই নয়, এর সঙ্গে জড়িয়ে রয়েছে ইতিহাস, ঐতিহ্য’।

বাংলাদেশ সময়: ২০০৭ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ১৪, ২০১৫

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।