ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ১৩ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৮ নভেম্বর ২০২৪, ২৬ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

ক্রিকেট

‘চোকার’ অপবাদ ঘোচালো দ. আফ্রিকা!

ওয়ার্ল্ডকাপ ডেস্ক | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৭৫৪ ঘণ্টা, মার্চ ১৮, ২০১৫
‘চোকার’ অপবাদ ঘোচালো দ. আফ্রিকা! সংগৃহীত

ঢাকা: গতকাল পর্যন্তও সবার মুখে ছিল দক্ষিণ আফ্রিকার শেষ ঠিকানা নকআউট পর্ব। কেনই বা বলবে না? কারণ দলটির গায়ে যে ‘চোকার’ নামক একটি সিল লাগানো আছে।

ইতিহাস তেমটিই বলে। বিশ্বকাপে এর আগে নিজেদের সবকটি আসরেই প্রোটিয়াদের স্নায়ু চাপ বা ভাগ্য খারাপ থাকার কারণে নকআউট পর্ব থেকেই বিদায় নিতে হয়েছিল।

তবে একি এবি ডি ভিলিয়ার্সরা যে সে ইতিহাস বদলে ফেললেন! গ্রুপ পর্বে ভারত, পাকিস্তানের কাছে হারলেও অন্য ম্যাচগুলো দাপটের সঙ্গে জিতে শেষ আটের লড়াইয়ে আরেক এশিয়ান জায়ান্ট শ্রীলঙ্কা? তবে ম্যাচটিতে কোন রকম চাপ ছাড়াই লঙ্কানদের কাঁদিয়ে নয় উইকেটের বিশাল জয় নিয়ে সেমিফাইনাল নিশ্চিত করলো দলটি।

এদিকে মাঠের নামার আগে ডি ভিলিয়ার্সরা আত্মবিশ্বাসী থাকলেও সঙ্গে ছিল পূর্বের দু:স্মৃতি। কারণ এর থেকেও ভাল দল নিয়ে যে প্রোটিয়াদের বিশ্বকাপ থেকে ছিটকে পড়ার নজির রয়েছে। এর সবচেয়ে বড় উদাহারনটি ১৯৯৯ ইংল্যান্ড বিশ্বকাপ। হেনসি ক্রুনিয়ার নেতৃত্বে বিশ্বকাপের সবচেয়ে শক্তিশালী দলটি ছিল সেবার। দলটিতে ছিলেন হার্সেল গিবস, জ্যাক ক্যালিস, লেন্স ক্লুজনার, অ্যালান ডোনাল্ডের মত তারকারা।

কিন্তু সেমিফাইনালে অস্ট্রেলিয়ার সঙ্গে ম্যাচটি টাই হলে রান রেটের এগিয়ে থাকা অজিরা জিতে বিদায় করে দেয় প্রোটিয়াদের।

এর আগে ক্রিকেটের নিষেধাজ্ঞা কাটিয়ে ১৯৯২ বিশ্বকাপে প্রথমবারের মত অংশগ্রহন করে দ.আফ্রিকা। তবে প্রথম হলেও কেপলার ওয়েলসের নেতৃত্বে গ্রুপ পর্বে লড়াই করে ইংল্যান্ডের বিপক্ষে সেমিফাইনাল নিশ্চিত করে প্রোটিয়ারা। কিন্তু এবার দলটির সঙ্গে ভাগ্য ছিল না। জিতা ম্যাচটিতে বৃষ্টি এসে কপাল পোড়ে দলটির। শেষে টার্গেট দাঁড়ায় এক বলে (অসম্ভব) ২২ রান। ১৯৯৬ ভারত-পাকিস্তান বিশ্বকাপে নকআউট পর্বটি ছিল কোয়ার্টার ফাইনাল। তবে ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে ম্যাচটিতে লারার সেঞ্চুরির পর ব্যাটিংয়ে নামা দলটি মাত্র ১৯ রানে হেরে আসর থেকে বিদায় নেয়।

২০০৩ ঘরের মাঠে বিশ্বকাপে শন পোলোকের নেতৃত্বে দারুণ আত্মবিশ্বাসী ছিল প্রোটিয়ারা। তবে গ্রুপ পর্বের ম্যাচে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে জিততেই হতো দলটিকে। কিন্তু আবারো সেই কপাল পোড়া বৃষ্টি সব নষ্ট করে দিল। বৃষ্টিতে ম্যাচটি বন্ধ হওয়ার আগে স্ট্রাইকে থাকা মার্ক বাউচার যদি একটি রান নিতেন তাহলেই হত। কিন্তু কোন রান না নেয়ায় পরে বৃষ্টিতে আর কোন বল মাঠে না গড়ালে ডি/এল ম্যাথডে ম্যাচটি টাই হয়। এবারও রান রেটের হিসেবে পোলকদের কাঁদিয়ে জয় পায় লঙ্কানরা।

২০০৭ ওয়েস্ট ইন্ডিজ বিশ্বকাপে মোটামুটি লড়াই করেই সেমিফাইনাল নিশ্চিত করে গ্রায়েম স্মিথ বাহিনী। তবে শেষ চারের লড়াইয়ে অস্ট্রেলিয়ার কাছে বাজে ভাবে হার। আর ২০১১ বিশ্বকাপে বাংলাদেশের মাটিতে নিউজিল্যান্ডের দেয়া ছোট টার্গেটেই স্নায়ু চাপে পড়ে বিশ্বকাপ শেষ হয় দ্বিতীয়বারের মত স্মিথের নেতৃত্বে টূর্ণামেন্টে আস‍া দক্ষিণ আফ্রিকা।

তবে ২০১৫ বিশ্বকাপে আর ভূল করলেন না ডি ভিলিয়ার্স। এবার চাপ যেমন সামলেছেন তেমনি ভাগ্যও সঙ্গে ছিল দলটির দিকে। এখন দেখার বিষয় সেমিফাইনালের বৈতরনী পেরিয়ে ফাইনাল জিতে নেলসন মেন্ডেলার দেশে প্রথমবারের মত বিশ্বকাপের ট্রফি নিয়ে যেতে পারে কিনা দলটি?

বাংলাদেশ সময়: ১৭৫৪ ঘণ্টা, মার্চ ১৮, ২০১৫

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।