ঢাকা, সোমবার, ৯ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৫ নভেম্বর ২০২৪, ২৩ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

ক্রিকেট

রানার মাকে দেখে এলেন স্মৃতিকাতর হোয়াটমোর

মাহবুবুর রহমান মুন্না, স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৫৩৮ ঘণ্টা, জানুয়ারি ২১, ২০১৬
রানার মাকে দেখে এলেন স্মৃতিকাতর হোয়াটমোর ছবি: মানজারুল ইসলাম/ বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম

খুলনা: ব্যাট-বলের পারফরম্যান্সে দারুণভাবে এগিয়ে যাচ্ছিলেন জাতীয় দলের অলরাউন্ডার মানজারুল ইসলাম রানা। তার এগিয়ে চলার পথ রুদ্ধ করে দেয় এক সড়ক দুর্ঘটনা।

এরপর স্মৃতির পাতায় ঠাঁই হয় সেই প্রতিশ্রুতিশীল ক্রিকেটারের।

২০০৭ সালের ১৬ মার্চ বিকেলে খুলনার বিখ্যাত ‘চুই ঝাল’ (বিশেষ পদ্ধতিতে রান্না করা গরুর ভুনা) খেতে রওনা হন রানা। চুই ঝাল খেয়ে খুলনা-সাতক্ষীরা মহাসড়কে মোটরসাইকেল দুর্ঘটনায় মারা যান ২৩ বছরবয়সী রানা। ফলে বাংলাদেশের ক্রিকেট হারায় উদীয়মান এক তারকাকে।

বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড (বিসিবি) তার স্মরণে খুলনার শেখ আবু নাসের স্টেডিয়ামের গ্যালারির পশ্চিম অংশের নাম দিয়েছে মানজারুল ইসলাম রানা স্ট্যান্ড। মৃত্যুর আগে জাতীয় দলের জার্সি গায়ে নিজেকে নিয়ে যাচ্ছিলেন এক অন্য উচ্চতায়। কিন্তু, অকাল মৃত্যু থামিয়ে দিয়েছে সব!

তৎকালীন সময়ে বাংলাদেশ দলের অধিনায়ক ছিলেন হাবিবুল বাশার সুমন। আর জাতীয় দলের কোচের আসনে ছিলেন ডেভ হোয়াটমোর। প্রাক্তন কোচ ডেভ হোয়াটমোরের হাত ধরেই আন্তর্জাতিক অঙ্গনে পা রাখেন মানজারুল ইসলাম রানা। ২০০৫ সালে জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে ওয়ানডে সিরিজে তার বোলিং বাংলাদেশের সিরিজ জয়ে দারুণ অবদান রাখে।

ডেভ হোয়াটমোর রানার স্পিন বোলিং ও লেট অর্ডারের ব্যাটিংয়ের ভক্ত ছিলেন। সেই হোয়াটমোর এখন খুলনায়। প্রিয় শিষ্যের স্মৃতিতে কাতর হয়ে বৃহস্পতিবার (২১ জানুয়ারি) দুপুরে আবু নাসের স্টেডিয়াম সংলগ্ন রানার বাসায় যান বাংলাদেশের প্রাক্তন কোচ ও জিম্বাবুয়ে ক্রিকেট দলের বর্তমান কোচ হোয়াটমোর।

২০১৪ সালে পর ফের রানার বাসায় গিয়ে যেন পুরোনো রানাকেই আবারও ফিরে পান অস্ট্রেলীয় এই কোচ। ম্যান অব দ্য ম্যাচের ট্রফি, ক্যাপ, ড্যামি বোর্ড সবই যেন হোয়াটমোরকে মনে করিয়ে দেয় রানার স্মৃতি।

মৃত্যু অমোঘ হলেও কোনো কোনো মৃত্যু একেবারেই যেন মেনে নেওয়া যায় না। বাংলাদেশের ক্রিকেটে মানজারুল ইসলাম রানার মৃত্যু তেমনই এক ট্র্যাজেডি।

খুলনার মুজগুন্নী এলাকায় রানার বাসায় গিয়ে ডেভ হোয়াটমোর রানার মা জামিলা খাতুনের সঙ্গে বেশকিছু সময় কাটান। সন্তান হারানো মায়ের সঙ্গে করেছেন স্মৃতিচারণ। তার কথায় বোঝা যায় এত বছর পরও প্রিয় শিষ্য রানাকে ভোলেননি হোয়াটমোর।

খুলনায় ক্রিকেট আনন্দের রেণু ছড়ালেই এক মায়ের হৃদয়ে হাহাকার ওঠে। ছেলের স্মৃতি হানা দেয় মায়ের মানসপটে। কিন্তু সেই মায়ের খোঁজ কেউ নেয় না বললেই চলে। এমনকি খেলায় দাওয়াতও পান না তিনি। সেই মায়ের খোঁজ নিতে আসা ডেভ হোয়াটমোরের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানান শোকাতর মা।

১৯৮৪ সালের ৪ জানুয়ারি খুলনায় জন্মগ্রহণ করা রানার জাতীয় দলে টেস্ট অভিষেক ঘটে জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে ২০০৪ সালের ১৯ ফেব্রুয়ারি। তার আগে ঘটে ওয়ানডে অভিষেক। দেশের হয়ে ছয়টি টেস্ট আর ২৫টি ওয়ানডে ম্যাচ খেলেন অকাল প্রয়াত মানজারুল ইসলাম রানা।

বাংলাদেশ সময়: ১৫৪০ ঘণ্টা, জানুয়ারি ২১, ২০১৫
এমআরএম/এমজেএফ

** কেউ দাওয়াত দেয় না, চাইও না

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।