ঢাকা, সোমবার, ১০ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৫ নভেম্বর ২০২৪, ২৩ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

ক্রিকেট

মিরাজদের স্পিনের কাছেই হেরে গেল প্রোটিয়া যুবারা

সিনিয়র কসেপনডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৭৫০ ঘণ্টা, জানুয়ারি ২৭, ২০১৬
মিরাজদের স্পিনের কাছেই হেরে গেল প্রোটিয়া যুবারা ছবি: উজ্জ্বল ধর- বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম

চট্টগ্রাম:  বিষয়টি আগে থেকেই অনুমেয় ছিল যে, বাংলাদেশ অনূর্ধ্ব-১৯ দলের স্পিন বিষে নীল হয়ে যাবে  ডিফেন্ডিং চ্যাম্পিয়ন দক্ষিণ আফ্রিকা অনূর্ধ্ব-১৯ দল। হলও তাই! টাইগার যুবা স্পিনারদের টালমাটাল স্পিন ঘূর্ণিতে অনুর্ধ্ব-১৯ বিশ্বকাপেরে উদ্বোধনী ম্যাচে বাংলাদেশের কাছে ৪৩ রানে হেরে হোঁ‍চট খেল প্রোটিয়া যুবারা।

আর প্রোটিয়াদের বিপক্ষে রোমাঞ্চকর জয় নিয়ে বিশ্বকাপে শুভ সুচনা করলো বাংলাদেশ অনুর্ধ্ব-১৯ দল। বাংলাদেশের হয়ে বল হাতে ৭টি উইকেট নিয়েছেন স্পিনাররা আর বাকি ৩টি উইকেট নিয়েছেন পেসাররা।  
 
বাংলাদেশর দেয়া ২৪১ রানের লক্ষ্যে খেলতে নেমে ৮ বল বাকি থাকতে ১৯৭ রানে অলআউট হয় দ. আফ্রিকা।
 
এরআগে বুধবার (২৭ জানুয়ারি) চট্টগ্রামের জহুর আহমেদ চৌধুরী স্টেডিয়ামে দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে টস জিতে ব্যাটিংয়ে নামে স্বাগতিক বাংলাদেশ। আর ব্যাটিংয়ে নেমে উদ্বোধনী জুটিতে বেশ স্বাচ্ছন্দেই খেলিছিলেন দুই যুবা টাইগার ওপেনার সাইফ হাসান ও পিনাক ঘোষ। এমন স্বাচ্ছন্দে যখন স্বাগতিকরা এগিয়ে যাচ্ছিলেন তখন দশম ওভারে যুবাদের ওপর আঘাত হানেন প্রোটিয়া বোলার মুল্ডার। তার দেয়া অফস্ট্যাম্পের বাইরের বলটি জোরে হাকাতে গিয়ে উইকেটরক্ষক ভেরিয়েনের হাতে ধরা পড়ে ব্যক্তিগত ৬ রানে ফিরে যান সাইফ হাসান।

সাইফের ফিরে যাবার পর দ্বিতীয় উইকেটে ৪৪ রানের জুটি গড়ে ২০ ওভারের প্রথম বলেই ব্যক্তিগত ৪৩ রানে রান আউট হয়ে নিজের ইনিংসের সমাপ্তি টানেন পিনাক ঘোষ। এরপর তৃতীয় উইকেটে শান্ত’র সঙ্গে ২৯ রানের জুটি শেষে হোয়াইটহেড এর বলে উইকেটরক্ষকের হাতে কট বিহাইন্ড হয়ে দলীয় ১০৩  ও ব্যক্তিগত ৪৬ রানে প্যাভিলনের পথে হাঁটা শুরু করেন জয়রাজ শেখ।

তবে চতুর্থ উইকেটে টাইগার যুবা অধিনায়ক মেহেদি হাসান মিরাজ ও নাজমুল হোসেন শান্ত যে জুটি গড়েছেন তা এই বাংলাদেশ ইনিংসের সর্বোচ্চ। দুই টপ ‍অর্ডারের ৫৯ রানের জুটিতে স্বাগতিকরা যখন বড় সংগ্রহের স্বপ্ন দেখছে তখন ৩৮ ওভারে ডি জর্জি সেই স্বপ্নে বিঘ্ন ঘটান। এই ওভারের পঞ্চম ফ্ল্যাট বলটি মিরাজ সুইপ করতে গিয়ে মিডউইকেটে ক্যাচ তুলে দেন যা সেখান থেকে তালুবন্দি করেন লুডিক। ফলে ব্যক্তিগত ২৩ রান নিয়েই সন্তুষ্ট থাকতে হয় মিরাজকে।

মিরাজের ফিরে যাবার পর দলের হয়ে বলতে গেলে একাই লড়ে গেছেন নাজমুল হাসান শান্ত। উদ্বোধনী ম্যাচেই অর্ধশতক হাঁকিয়ে দুর্দান্তই খেলেছেন এই টাইগার যুবা। হয়তো ইনিংসের শেষ পর্যন্ত অপরাজিত থাকতে চেয়েছিলেন। কিন্তু ৪৯ তম ওবারের শেষ বলটি তার সেই ইচ্ছে পূরণ হতে দেয়নি। মুল্ডারের  ইয়র্কার লেংথের বলটি শান্ত’র স্ট্যাম্পে চিড় ধরালে ব্যক্তিগত ৭৩ রানেই এদিনের মত তৃপ্ত থাকতে হয় তাকে।

এরপর জাকির হাসানের ১৯ ও মোহাম্মদ সাইফুদ্দিনের ১৭ রানে নির্ধারতি ৫০ ওভারে ৭ উইকেটের বিনিময়ে ২৪০ রানের চ্যালেঞ্জিং স্কোর গড়তে সক্ষম হয় বাংলাদেশের যুবারা।

প্রোটিয়াদের হয়ে ওয়াইন মুল্ডার ৩টি, লুথো সিপামলা, শিন হোয়াইটহেড ও ডি জর্জি নিয়েছেন ১ করে উইকেট।
 
জবাবে জয়ের জন্য খেলতে নেমে দুই স্বাগতিক বোলার মিরাজ ও সাইফের বলে  দলীয় ২৭ রানে ভেরানে ও মুল্ডারের উইকেট হারিয়ে ব্যাকফুটে চলে যায় দক্ষিণ আফ্রিকা। রানের খাতা  খুলে ১ রান যোগ করে মিরাজের স্পিন ঘূর্ণিতে সাইফের হাতে ক্যাচ দিয়ে ফেরেন ওপেনার ভ্যারানে। আর ব্যক্তিগত ৮ রানে মুল্ডারকে বোল্ড আউটের স্বাদ পাইয়ে দেন টাইগার যুবা ফাস্ট বোলার সাইফ।
 
এরপর আবার সাইফের আঘাত আর তাতেই তার দ্বিতীয় শিকারে পরিণত হয়ে ব্যক্তিগত ৮ রানে নিজের ইনিংসের ফুলস্টপ টানেন ডি জর্জি। ডি জর্জির ফিরে যাবার পর ব্যক্তিগত ৫ রানে সাইদ সরকারের  বলে এলবিডব্লিউর ফাঁদে পড়ে ব্যক্তিগত ৫ রানে ড্রেসিং রুমের পথ ধরেন মুনাস্যামি।  
 
মুনাস্যামি ড্রেসিংয়ের রুমের পথ ধরলে দার তার পদাঙ্ক অনুসরণ করেন গালিয়েম ও সায়ানভালা। সাইদের বলে ২২ রানে গালিয়েম আর মিরাজের বলে ১৭ রানে সাইফের হাতে ক্যাচ দিয়ে ফেরেনে সায়ানভালা।  
স্বাগতিকদের বোলিং তোপে যখন একে একে প্যাভিলিয়নে ফেরার মিছিলে যোগ দিচ্ছেলেন প্রোটিয়া যুবারা তখন দলটির হয়ে একাই লড়ে গেছেন ওপেনার লিয়াম স্মিথ। ১৪৬ বলে ১০০ রানের ইনিংস খেলে একদিকে যেমন নিজের ব্যক্তিগত ইনিংসকে সমৃদ্ধ করেছেন তেমনি সম্মান জনক সংগ্রহ এনে দিয়েছেন দলকে। তবে ইনিংসের শেষ পর্যন্ত তার উইকেটে থাকা হয়নি। ৪৫ ওভারের চতুর্থ বলে শাওনের কৌশলী ডেলিভারি না বুঝেই হাকালে এক্সটা কাভার অঞ্চল থেকে বলটি তালু বন্দি করেন ‍অধিনায়ক মিরাজ।
 
এরপর লুডিকের ৫, ফিল্যান্ডারের ৬,  হোয়াইটহেডের ১৩ ও সিপামলার অপরাজিত ১ রানে ৪৯ ওভার চার বলে ১৯৭ রানে গুটিয়ে যায় দক্ষিণ আফ্রিকার ইনিংস।
 
বাংলাদেশর হয়ে মিরাজ ও সাইফুদ্দিন ৩টি আর সাইদ সরকার ও সালেহ আহমেদ শাওন নিয়েছেন ২টি করে উইকেট। ম্যাচ সেরা হয়েছেন বাংলাদেশের নাজমুল হাসান শান্ত।
 
বাংলাদেশ সময়: ১৭৫২ ঘণ্টা, ২৭ জানুয়ারি, ২০১৬
এইচএল/এমএমএস

** জয়ে শুরু টাইগার যুবাদের মিশন
** জয়ের পথে টাইগার যুবারা
** ৪১ ওভারে দ. আফ্রিকার ১৫৬/৫
** ৩০ ওভারে দ. আফ্রিকার সংগ্রহ ১০০/৪
** প্রোটিয়াদের চার ব্যাটসম্যান সাজঘরে
** ১৭ ওভারে প্রোটিয়াদের ৫১/৩
** সাইফুদ্দিনের আরেকটি আঘাত
**  মেহেদির আঘাতে সাজঘরে প্রোটিয়া ওপেনার
** শান্তর দুর্দান্ত ব্যাটিং, প্রোটিয়াদের টার্গেট ২৪১
**  ৪৬ ওভার শেষে বাংলাদেশ ২১৭/৬
** চতুর্থ ব্যাটসম্যান হিসেবে মিরাজের বিদায়
** মিরাজ-শান্তর ব্যাটে এগুচ্ছে টাইগারদের ইনিংস
** ৩০ ওভারে বাংলাদেশ ১৩০/৩
** ১৫ ওভার, বাংলাদেশ ৫৭/১
** ১০ ওভার শেষে বাংলাদেশ ৩৭/১
** ধীরে শুরু স্বাগতিকদের

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।