ঢাকা, সোমবার, ১০ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৫ নভেম্বর ২০২৪, ২৩ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

ক্রিকেট

আভেশ তোপে সুপার লিগে ভারত

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৫২১ ঘণ্টা, জানুয়ারি ৩০, ২০১৬
আভেশ তোপে সুপার লিগে ভারত ছবি : শোয়েব মিথুন/বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম

মিরপুর থেকে: ভারতীয় পেসার আভেশ খানের পেস তোপে নিউজিল্যান্ডের যুবাদের  ১২০ রানের বড় ব্যবধানে হারিয়ে ‘ডি’ গ্রুপ থেকে দ্বিতীয় দল হিসেবে টুর্নামেন্টের সুপার লিগে উঠেছে ভারতের যুবারা। ভারতের দেয়া ২৫৯ রানের লক্ষ্য তাড়া করতে নেমে ৩১.৩ ওভারে ১৩৮ রানে  অলআউট হয় নিউজিল্যান্ড।



এর আগে একই দিন ফতুল্লার খাল সাহেব ওসমান আলী স্টেডিয়াম আয়ারল্যান্ডের বিপক্ষে ৮ উইকেটের বড় জয় নিয়ে এই গ্রুপ থেকে প্রথম দল হিসেবে সুপার লিগ নিশ্চিত করে নেপাল।

শনিবার (৩০ জানুয়ারি) মিরপুর শের-ই-বাংলা ক্রিকেট স্টেডিয়ামে কিউই যুবাদের বিপক্ষে টস হেরে ব্যাটিংয়ে নামে এবারের আসরের ফেভারিট ভারত। আর ব্যাটিংয়ে নেমে দলীয় ১৯ রানে অধিনায়ক ইশান কিশান ও রিকি ভুই’র উইকেট হারিয়ে ব্যাকফুটে চলে যায় ভারতের যুবারা। ফিরে যাবার আগে ইশান কিশান নিজের থলিতে পুড়েন ৪ আর রিকি ভুই ১ রান।

তবে, তৃতীয় উইকেটে সরফরাজ খান ও রিসবাহ প্যান্টের ৮৯ রানের জুটিতে ভারত বড় সংগ্রহের দিকে এগিয়ে যেতে চাইলেও ডেল ফিলপস’র এর ২৭তম ওভারের তৃতীয় ফুল লেংথের বলটি প্যান্ট উঠিয়ে মারলে ডিপ থার্ডম্যান অঞ্চল থেকে তা তালুবন্দি করেন গিবসন। ফলে দলীয় ১০৮ ও ব্যক্তিগত ৫৭ রানে থামে তার ইনিংস।

প্যান্টের বিদায়ের পর বিদায় নেন সরফরাজ। আয়ারল্যান্ডের পর নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে নিজের দ্বিতীয় অর্ধশতক তুলে নিয়ে বেশ ভালোই খেলছিলেন। কিন্তু ৩৪তম ওভারে নাথান স্মিথের পঞ্চম বলটি স্ট্যাম্পে গিয়ে আঘাত করলে ৮০ বলে ব্যক্তিগত ৭৪ রানে থামেন এ ব্যাটসম্যান।

সরফরাজ ক্রিজ ছাড়া হবার ঠিক দুই ওভার পরে রাচিন রবীন্দ্র’র বলে নাথান স্মিথের হাতে ক্যাচ দিয়ে ব্যক্তিগত ৩ রানে নিজের ইনিংসের সমাপ্তি টানেন ওয়াশিংটন সুন্দর।

এরপর আরমান জাফর অবশ্য চেয়েছিলেন বড় একটি ইনিংস খেলে দলকে এগিয়ে নিতে। কিন্তু ৪৫তম ওভারে আবার রবীন্দ্র ভারত শিবিরে আঘাত হানলে অর্ধশতকের খুব কাছে গিয়ে ব্যক্তিগত ৪৬ রানে বোল্ড আউটের কবলে পড়ে ড্রেসিং রুমের পথে হাঁটা ধরেন আরমান।

এরপর কিউই বোলিং তোপে ভারতের টেলএন্ডাররা চেষ্টা করেও দলের জন্য বড় সংগ্রহের উপলক্ষ্য হতে পারেননি। তবে মাহিপাল লমরোর ব্যাট হাতে বেশ ভালই লড়েছেন। ৪১ বলে তিনি করেন ৪৫ রান। তবে, শেষ পর্যন্ত উইকেটে থাকতে পারেননি। গিবসনের বলে কট অ্যান্ড বোল্ড হয়ে ফিরেছেন। পরে, রাহুল বাথামের ১০ বলে  ১১, আভেশ খানের অপরাজিত ৭  ও জিসান আনসারির অপরাজিত ১ রানে ৮ উইকেটে ২৫৮ রানের সংগ্রহ পায় ভারত।

ব্ল্যাকক্যাপসদের হয়ে বল হাতে জ্যাক গিবসন ৩টি, নাথান স্মিথ ও রাচিন রবীণ্দ্র ২টি আর ডেল ফিলপস নিয়েছেন ১টি উইকেট।

জবাবে, জয়ের জন্য ২৫৯ রানের লক্ষ্যে খেলতে নেমে ইনিংসের শুরুতে আভেশ খানের পেস তোপে পড়ে দলীয় ৫ রানে তিন ব্যাটসম্যানকে হারিয়ে চাপে পড়ে নিউজিল্যান্ড। এদিন আভেশের বল ব্ল্যাকক্যাপসদের উপর এতটাই প্রভাব বিস্তার করেছে যে ব্যক্তিগত ৫ রান পর্যন্ত নিজেদের থলিতে পুড়তে পারেননি রাচির রবীন্দ্র, গ্লেন ফিলিপস ও জশ ক্লার্কসন। আভেশের সুইং ঝড়ে ব্যক্তিগত ২ রানে রাচীন রবীন্দ্র, ১ রানে ফিলিপস ও ০ রানে ফিরেছেন জশ ক্লার্কসন।

তিন ব্যাটসম্যানের বিদায়ের পর চাপে পড়া কিউইদের টেনে তুলতে চেষ্টা চালান চতুর্থ উইকেটের জশ ফিনি ও ফিন অ্যালেন। কিন্তু ১১তম ওভারে চতুর্থ বারের মতো আভেশ আঘাত হানলে সেই চেষ্টা ব্যর্থ হয়। ফলে ব্যক্তিগত ২ ও দলীয় ১৬ রানে প্যাভিলনের পথে হাটা শুরু করেন জশ ফিনি।

এত স্বল্প সংগ্রহে চার উইকেট হারিয়ে দিশেহারা নিউজিল্যান্ড খেলায় পঞ্চম উইকেটে ভর করে খেলায় ফিরতে চায়। এই জুটিতে ফিন অ্যালন ক্রিস্টিয়ান লিয়োপার্ডের ধীর গতির ব্যাটিং নিউজিল্যান্ডকে সেই স্বপ্ন দেখালেও শেষ পর্যন্ত তা বাস্তবায়িত হয়নি। কেননা, এই দুই ব্যাটসম্যান যখন দলকে ৪৯ রানের সংগ্রহ এনে দিয়েছেন তখন বল হাতে জ্বলে উঠেন মহিপাল লরমর। ১৮তম ওভারে চতুর্থ বলটি ফিন অ্যালেনের স্ট্যাম্পে সজোরে আঘাত হানলে দলীয় ৬৫ ও ব্যক্তিগত ২৯ রানে থামতে হয় এই মিডল অর্ডারকে।

লরমরের পর কিউই শিবির ছত্রভঙ্গের দায়িত্ব নেন ভারতের লেগ স্পিনার জিশান আনসারি। ১৯তম ওভারে তার পঞ্চম মাপা লেংথের বলটি ডেল ফিলিপস খেলতে গেলে মিডলস্ট্যাম্প ভেঙে ব্যক্তিগত ২ ও দলীয় ৭২ রানে ৬ উইকেট হারিয়ে অলআউটের প্রহর গুনতে শুরু করে নিউজিল্যান্ড।

সেই ধারাবাহিকতায় ২২তম ওভারে লরমরের দ্বিতীয় ডেলিভারিতে ৪০ বলে ৪০ রানের ঝড়ো ইনিংস খেলে বোল্ড আউটের গ্লানি নিয়ে ফেরেন ক্রিস্টিয়ান লিওপার্ড। আর তার পরের ওভারে লরমর আরেকবার কিউই শিবির আঘাত হেনে এলবি’র ফাঁদে ফেলে ব্যক্তিগত ২ রানে ক্রিজ ছাড়া করেন নাথান স্মিথকে।

এরপর অনিকেত পারিখের ২৬ বলে ২৬ রানের ইনিংস ও টেলর স্কটের ২৮ বলে ২৯ রানে ১৩৮ রানে থামে নিউজিল্যান্ডের ‍যুবাদর ইনিংস। ফলে ম্যাচ শেষে সুপার কোয়ার্টার ফাইনালের লড়াই থেকে ছিটকে যাবার গ্লানি নিয়ে মাঠ ছাড়তে হয় এবারের আসরে অফ ফর্মে থাকা কিউই যুবাদের।

ভারতের হয়ে বল হাতে আভেশ খান ৪টি, মহিপাল লরমর ৩টি ও জিশান আনসারি নিয়েছেন ১টি উইকেট।      
 
বাংলাদেশ সময়: ১৫২১ ঘণ্টা, ৩০ জানুয়ারি ২০১৬
এইচএল/এমআর

** নিউজিল্যান্ডের লক্ষ্য ২৫৯ রান

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।