ঢাকা, সোমবার, ১০ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৫ নভেম্বর ২০২৪, ২৩ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

ক্রিকেট

রোড টু কোয়ার্টার ফাইনাল

সিনিয়র করেসপনডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৮৪৯ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ২, ২০১৬
রোড টু কোয়ার্টার ফাইনাল ছবি: উজ্জ্বল ধর- বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম

ঢাকা: বিশ্বকাপের মতো আসরে বলে কয়ে দুর্দান্ত পারফর্ম করা কী সহজ কাজ? না, কাজটা একটু কঠিনই। তবে, কঠিন হলেও আইসিসি অনূর্ধ্ব-১৯ বিশ্বকাপে কাজটি করে দেখিয়েছেন এবারের আসরের অন্যতম ফেবারিট দল স্বাগতিক বাংলাদেশের যুবারা।


 
অ-১৯ বিশ্বকাপ শুরুর আগে থেকেই বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন দলের বিপক্ষে মিরাজরা যে পারফরম্যান্স দেখিয়েছেন তাতে এবারের আসরে তারা যে দুর্দান্ত খেলবেন তা বোঝাই যাচ্ছিল। বিশেষ করে, দক্ষিণ আফ্রিকার মতো ডিফেন্ডিং চ্যাম্পিয়নদের বিপক্ষে ১৪ ম্যাচের মধ্যে ১১টিতে জয়ই তাদের এই আশার পালে জোর হাওয়া লাগিয়েছে।
 
শুধু কী দক্ষিণ আফ্রিকা? বিশ্বকাপ শুরুর মাত্র কয়েকদিন আগে নিজেদের মাটিতে ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে তিন ম্যাচ সিরিজের ওয়ানডে খেলে তিনটিতেই জিতে তাদের দিয়েছে হোয়াইট ওয়াশের লজ্জাও! তাই বিশ্বকাপের গ্রুপ পর্বে গ্রুপ চ্যাম্পিয়ন হয়ে দলটির কোয়ার্টার ফাইনালে যাওয়াটা দীর্ঘ প্রত্যাশার একটি সফল পূরণ বললে নিশ্চই অত্যুক্তি হবে না।
 
মিরাজদের বিশ্বকাপের সুপার কোয়ার্টার ফাইনালে যাওয়া এবারই প্রথম নয়। এর আগে আরও তিনবার তারা অ-১৯ বিশ্বকাপের সুপার কোয়ার্টার ফাইনালে খেলেছে।
 
টাইগার যুবাদের এবারের বিশ্বকাপের মিশন শুরু হয় ২৭ জানুয়ারি চট্টগ্রামের জহুর আহমেদ চৌধুরী স্টেডিয়ামে দ. আফ্রিকার বিপক্ষে উদ্বোধনী ম্যাচ দিয়ে। সেই ম্যাচে শক্তিশালী দলটির বিপক্ষে ৪৩ রানের জয় দিয়েই নামের সুবিচার করেছে মিরাজ-শান্তরা।
 
ম্যাচটিতে টস জিতে ব্যাটিংয়ে নেমে নাজমুল হোসেইন শান্তর ৭৩, জয়রাজ শেখের ৪৬ ও পিনাক ঘোষের ৪৩ রানে ৭ উইকেটে ২৪০ রানের সংগ্রহ পায় বাংলাদেশ। জবাবে, সাইফ-মিরাজদের বোলিং তোপে ১৯৭ রানে গুটিয়ে গেছে প্রোটিয়ারা। ম্যাচসেরার পুরস্কার জেতেন নাজমুল হোসেন শান্ত।
 
এর পরের ম্যাচটিতে টাইগার যুবারা হারিয়েছে স্কটল্যান্ডকে।   এরই সুবাদে এক ম্যাচ হাতে রেখেই কোয়ার্টার ফাইনাল নিশ্চিত করে বাংলাদেশের যুবারা।
 
কক্সবাজার শেখ কামাল আন্তর্জাতিক স্টেডিয়ামে ওই ম্যাচটি মিরাজদের শুধু জয়ই উপহার দেয়নি, উপহার দিয়েছে নাজমুল হোসেন শান্ত’র যুবা ওয়ানডেতে অবিষ্মরণীয় রেকর্ডটিও। এই ম্যাচেই টাইগার টপ অর্ডার শান্ত অপরাজিত ১১৩ রানের মহাকাব্যিক ইনিংসটি খেলে যুবা ওয়ানডেতে সর্বোচ্চ ১৭৪৭ রান করে ভেঙ্গে দিয়েছেন পাক ব্যাটসম্যান সামি আসলামের ১৬৯৫ রানের আগের রেকর্ডটি।
 
স্কটিশ যুবাদের কাছে টস হেরে ব্যাটিংয়ে নেমেছিল স্বাগতিক যুবারা। শান্তর অপরাজিত ১১৩, মিরাজের ৫১ ও সাইফের ৪৯ রানে ৬ উইকেটে ২৫৬ রানের সংগ্রহ গড়ে বাংলাদেশ। জবাবে, ২৫৭ রানের লক্ষ্যে খেলতে নেমে মিরাজদের বোলিং তোপে ১৪২ রানে গুটিয়ে গিয়ে ১১৪ রানের বড় ব্যবধানে হেরে যায় স্কটল্যান্ড।
 
আর গ্রুপ পর্বে নিজেদের তৃতীয় ও শেষ ম্যাচে (০২ ফেব্রুয়ারি) উড়তে থাকা নামিবিয়াকে ৮ উইকেটে হারিয়ে মাটিতে নামান বাংলাদেশের লড়াকু যুবারা। কক্সবাজারের শেখ কামাল আন্তর্জাতিক স্টেডিয়ামে শাওন-মিরাজদের স্পিন ঘূর্ণিতে মাত্র ৬৫ রানে অলআউট হয় টস হেরে ব্যাটিংয়ে নামা নামিবিয়ান যুবারা।

মাত্র ৬৬ রানের সহজ লক্ষ্যে খেলতে নেমে জয়রাজ শেখ ও নাজমুল হোসেন শান্তর অপরাজিত ৩৪ ও ১৪ রানে ২ উইকেটের খরচায় ৮ উইকেটের দাপুটে জয় নিয়ে গ্রুপ চ্যাম্পিয়ন হয়ে কোয়ার্টারে পা দিয়েছে বাংলাদেশের যুবারা।
 
এদিনের ম্যাচে জয়ের পাশাপাশি ক্রিকেট বিশ্ব দেখেছে টাইগার যুবা অধিনায়ক মেহেদি হাসান মিরাজের সর্বোচ্চ উইকেটের গৌরবের মুহূর্তটিও।
 
নামিবিয়ার বিপক্ষে ৭.৫ ওভার বল করে মাত্র ১২ রান দিয়ে মিরাজ এদিন ২ উইকেট তুলে নিয়ে ভেঙ্গে দিয়েছেন দীর্ঘ ৮ বছর ধরে পাক যুবা স্পিনার ইমাদ ওয়াশিমের দখলে থাকা ৭৩ উইকেটের রেকর্ডটি। এই দুই উইকেটের সুবাদে ৭৪ টি উইকেট নিয়ে মিরাজ নাম লেখান সর্বোচ্চ উইকেট শিকারির তালিকায়।
 
তাই এ কথা খুব সহজেই বলা যায় যে, মিরাজরা যে দাপট দেখিয়ে গ্রুপ পর্ব থেকে কোয়ার্টার ফাইনালে উঠেছে, সেই দাপট সামনের ম্যাচগুলোতেও অব্যাহত থাকলে এবারের বিশ্বকাপ শিরোপা তাঁদের হাতে উঠা কঠিন হলেও অসম্ভব হবে না।
 
বাংলাদেশ সময়: ১৮৩৮ ঘণ্টা, ২ ফেব্রুয়ারি, ২০১৬
এইচএল/আরএম

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।