ঢাকা, মঙ্গলবার, ১৬ আশ্বিন ১৪৩১, ০১ অক্টোবর ২০২৪, ২৭ রবিউল আউয়াল ১৪৪৬

ক্রিকেট

ক্রিকেট বলের ঘূর্ণনে ঘুরবে ভাগ্যের চাকা !

বেলাল হোসেন, স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০০২৫ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ৫, ২০১৬
ক্রিকেট বলের ঘূর্ণনে ঘুরবে ভাগ্যের চাকা ! ছবি: বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম

বগুড়া: দু’জনই টগবগে তরুণ। একজন শফিকুল ইসলাম।

আরেকজন একরামুল হক। দু’জনেই পেশায় ছাত্র। ভিন্ন বিষয় নিয়ে লেখাপড়া করছেন তারা। বাসস্থানও তাদের আলাদা। কিন্তু দু’জনের নেশা এক ও অভিন্ন। তবে এই নেশায় কোন ভয় নেই।
 
এটা উর্ধ্বপানে এগিয়ে চলার নেশা। যেখানে রয়েছে যুদ্ধ জয়ের বিশাল স্বপ্ন। সেই স্বপ্নকে সামনে রেখে এগিয়ে চলছেন ক্রিকেট প্রেমী এই দুই তরুণ। ছোটকাল থেকেই ক্রিকেট খেলাই তাদের নেশা। আর স্বপ্নবাজ এই দুই তরুণের স্বপ্ন পূরণে এগিয়ে এসেছে রবি ফাস্ট বোলার হান্ট। এখন ক্রিকেট বলের ঘূর্ণনে ঘুরবে তাদের ভাগ্যের চাকা।
 
বৃহস্পতিবার (০৪ ফেব্রুয়ারি) বগুড়ার শহীদ চাঁন্দু স্টেডিয়ামে আয়োজন করা হয় রবি ফাস্ট বোলার হান্ট বাছাই প্রতিযোগিতা। প্রতিযোগিতায় অংশ নেওয়া সবাইকে পেছনে ফেলে জয় ছিনিয়ে নেন এই দুই তরুণ। ঘণ্টায় ১২৬ কিলোমিটার গতিতে বল ছুঁড়ে গতির পরীক্ষায় তারা বাছাইপর্বে টিকে যান।
 
আর বাছাইপর্বে টিকে যাওয়া এই দুই তরুণ বাংলানিউজের সঙ্গে একান্ত আলাপচারিতায় তাদের নানা অজানা কথা বলেন।
 
একটি বেসরকারি পলিটেকনিক ইনিস্টিটিউটের সিভিল বিভাগের ছাত্র শফিকুল ইসলাম। তিনি বগুড়া শহরের খান্দার এলাকায় পরিবারের সঙ্গে বসবাস করেন। চার ভাইয়ের মধ্যে সবার ছোট তিনি।
 
শফিকুল ইসলাম বাংলানিউজকে জানান, বাবা আব্দুস সোবহান ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানে হিসাবরংক্ষণের চাকরি করেন। মা ফিরোজা বেগম গৃহিনী। গ্রামের বাড়ি বরিশালের বরগুনায়। চাকরির সুবাদে বহু আগে তার বাবা বগুড়ায় আসেন। সেই থেকে বগুড়ায় তাদের সবকিছু। তবে সংসারে বেশ অভাব রয়েছে।
 
তিনি আরো জানান, ছোটবেলা থেকেই বেশি বেশি ক্রিকেট খেলা দেখতেন তিনি। এরপর বয়স বাড়ার সঙ্গে হাতে ব্যাট-বল তুলে নেন। পছন্দের ক্রিকেটার স্টার্কের মতো করে খেলার চেষ্টা করতে থাকেন। প্রায় পাঁচবছর ধরে শহীদ চাঁন্দু স্টেডিয়ামে প্রশিক্ষণ চালিয়ে যান তিনি।
 
শফিকুল ইসলাম জানান, সময়ের ব্যবধানে ব্যাটের চেয়ে বলই তার হাতে বেশ মানায়। বা-হাতে চলে তার বল। অনেক সাধনার পর রবি ফাস্ট বোলার হান্ট তাকে সুযোগ করে দিয়েছে। এখন তার সামনে এগিয়ে যাওয়ার পালা। সঙ্গে স্বপ্ন বাস্তবায়নে সর্বোচ্চ চেষ্টা করাই কাজ বলে জানান তিনি।  
 
প্রতিযোগিতায় উত্তীর্ণ হওয়ার পর নির্বাচক প্যানেলের এক সদস্য ও বগুড়া শহীদ চাঁন্দু স্টেডিয়ামের ভেন্যু ম্যানেজার জামিলুর রহমান জামিলকে মাঠে নানা পরামর্শ দিতে দেখা যায় শফিকুল ইসলামকে। এর আগে বিসিবি’র হাই পারফরমেন্স কোচ সারোয়ার ইমরানের সঙ্গেও শফিকুলকে দেখা যায়।
 
এদিকে একরামুল হক বাংলানিউজকে জানান, নওগাঁ জেলার হাটনওগাঁ গ্রামে তার বাড়ি। বাবা সুলতানুল ইসলাম পেশায় একজন কসমেটিকস ব্যবসায়ী। মা যুথী বেগম ‍গৃহিনী। তার দুই ভাই। বড় ভাই রাহুল ঢাকায় একটি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে আর্কিটেকচার বিষয় নিয়ে লেখাপড়া করেন। আর তিনি নওগাঁ জিলা স্কুলে কমার্স নিয়ে দশম শ্রেণিতে পড়াশোনা করছেন।
 
তিনি আরো জানান, বুঝ হওয়ার পর থেকেই ক্রিকেট খেলা তার পছন্দের তালিকার শীর্ষে। তখন থেকেই ক্রিকেটার ব্রেটলি হওয়ার স্বপ্ন দেখতে থাকেন এই তরুণ। স্বপ্ন বাস্তবে রূপ দিতে হাতে ব্যাট-বল নেওয়ার পর স্থানীয় এলিড ক্রিকেট একাডেমীতে প্রশিক্ষণের জন্য ভর্তি হন তিনি। প্রায় চার বছর ওই প্রতিষ্ঠানে ক্রিকেটের ওপর প্রশিক্ষণ নেন। কিন্তু ব্যাটের চেয়ে বলই তার কাছে ভাল লাগে।
 
আর এ সুযোগ কাজে লাগাতে রবি ফাস্ট বোলার হান্ট প্রতিযোগিতায় অংশ নিতে নিজের নাম লেখান ডান হাতি একরামুল হক। পরে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের দেওয়া রেজিস্ট্রেশন ফরম নিয়ে মাঠে প্রবেশ করেন তিনি। টানা ৭-৮ বল নেটে ছোঁড়ার পর নির্বাচক প্যানেল তাকে নির্বাচিত করেন।  
 
** রংপুরে তিন ফাস্ট বোলারে মুগ্ধ নির্বাচকরা

বাংলাদেশ সময়: ০০২০ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ০৫, ২০১৬
এমবিএইচ/আরএইচএস

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।