ঢাকা, শনিবার, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ২৮ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

ক্রিকেট

ভারতের লড়াইটা হলো কেবল আমিরের সঙ্গে

সাজ্জাদ খান, স্পোর্টস করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০০৩৪ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ২৮, ২০১৬
ভারতের লড়াইটা হলো কেবল আমিরের সঙ্গে ছবি: শোয়েব মিথুন/বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম

মিরপুর থেকে: এশিয়া কাপে পাকিস্তান-ভারত টানটান উত্তেজনার এক ম্যাচের অপেক্ষায় ছিলেন মিরপুর শের-ই-বাংলা স্টেডিয়ামের প্রায় ২৫ হাজার দর্শক। সবার মিনতি পূর্ণ হতেই চলেছিল।

লো-স্কোরিং ম্যাচটিকে জমিয়ে তুলেছিলেন মোহাম্মদ আমির। পাকিস্তানের অন্য বোলাররা জ্বলে উঠতে পারলে ম্যাচটির ফয়সালা হতে পারতো শ্বাসরুদ্ধকর এক লড়াইয়ের পর। কিন্তু শেষ অবধি তা হতে দেননি বিরাট কোহলি। তার ৫১ বলে ৪৯ রানের মহাগুরুত্বপূর্ণ ইনিংসেই পাঁচ উইকেটের জয় নিয়ে মাঠ ছাড়ে ভারত।

মাত্র ৮৪ রানের জয়ের লক্ষ্যে ছোটা ব্যাটিং শক্তির দল ভারত মোহাম্মদ আমিরের আগ্রাসী বোলিংয়ে শুরুতে খেই হারায়। পাওয়ার প্লে’র ৬ ওভারে ভারত তোলে তিন উইকেটে মাত্র ২১ রান। তখন ম্যাচে বেশ ভালোভাবেই ছিল পাকিস্তান। নিজের প্রথম দুই ওভারে রোহিত শর্মা, আজিঙ্কা রাহানে ও সুরেশ রায়নাকে দলীয় ৮ রানের মধ্যে সাজঘরে পাঠিয়ে লড়াইটা জমিয়ে তোলেন আমির একাই।
 
কিন্তু দেয়াল হয়ে দাঁড়ান বিরাট কোহলি ও যুবরাজ সিং। চতুর্থ উইকেটে এ দুজন ৬৮ রানের জুটি গড়ে পাকিস্তানের স্বপ্নকে ভেঙে দেন। শেষ দিকে অবশ্য বল হাতে জ্বলে উঠেছিলেন মোহাম্মদ সামি, পর পর দুই বলে কোহলি ও হারদিক পান্ডের উইকেট তুলে নিয়ে। তখন যে বড্ড দেরি হয়ে গেছে! জয় থেকে ভারত তখন মাত্র ৮ রান দূরে।
 
কোহলি ৪৯ রানে আউট হলেও যুবরাজ অপরাজিত থেকেই দলকে নিয়ে যান জয়ের বন্দরে। যুবরাজ করেন ১৪ রান। অধিনায়ক মহেন্দ্র সিং ধোনি ৭ রানে অপরাজিত থাকলে ১৫.৩ ওভারে  লক্ষ্য পূরণ করে ভারত।  

মিরপুর শের-ই-বাংলা স্টেডিয়ামের তরতাজা সবুজ ঘাসের উইকেটে টসজয়ী দল ব্যাট করতে চাইবে না সেটি অনুমেয়ই ছিল। ভারতের অধিনায়ক মহেন্দ্র সিং ধোনি ফিল্ডিং-ই বেছে নেন। সিদ্ধান্তকে সঠিক প্রমাণ করেন আশিষ নেহরা পাকিস্তানের ওপেনার মোহাম্মদ হাফিজকে ফিরিয়ে।

ম্যাচের চতুর্থ ওভার থেকেই শুরু পাকিস্তানি ব্যাটসম্যানদের আসা-যাওয়ার মিছিল। এরপর শারজিল খান, খুররম মনজুর, শোয়েব মালিক আর উমর আকমলও যখন ড্রেসিং রুমের পথ ধরেন তখন স্কোরবোর্ডের করুণ দশা (৫ উইকেটে ৩৫)। পাকিস্তানের শেষ ভরসা বলতে ক্রিজে আসেন অধিনায়ক শহীদ আফ্রিদি। কিন্তু ঝুঁকি নিয়ে দ্বিতীয় রান নিতে গিয়ে রবীন্দ্র জাদেজার দুর্দান্ত থ্রোতে রান আউট হয়ে তিনিও যখন ফিরে যান, পাকিস্তানের রান ৬ উইকেটে ৪২।

পাকিস্তানের এমন বিপদে লড়তে থাকেন সরফরাজ আহমেদ। ২৫ রান করে এই উইকেটকিপার-ব্যাটসম্যানও আউট হন। আর তাতে ৮৩ তেই গুটিয়ে যায় পাকিস্তান।

৮ রানে ৩ উইকেট নিয়ে সফল বোলার হারদিক পান্ডে। ১১ রানে দুটি উইকেট নেন জাদেজা। নেহরা, বুমরাহ ও যুবরাজ একটি করে উইকেট দখল করেন। উইকেটে সবুজ ঘাস দেখে চার জন ফাস্ট বোলার নিয়ে একাদশ সাজান পাকিস্তান অধিনায়ক শহিদ আফ্রিদি। কিন্তু বোলারদের লড়াই করার মতো পুঁজি দিতে পারেনি তাদের ব্যাটসম্যানরা।

তারপরও বল হাতে ম্যাচ জমিয়ে তুলতে কম চেষ্টা করেননি আমির। লড়াইটা হলো কেবল আমির আর ভারতের মধ্যেই। চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী দল দুটোর লড়াইয়ে আমিরের বোলিং স্পেলটাকে বাহবা দিতে দেখা গেছে ভারতের দর্শকদেরও।
 
প্রথম ম্যাচে বাংলাদেশকে ৪৫ রানে হারিয়েছিল ভারত। নিজেদের দ্বিতীয় ম্যাচে পাকিস্তানকে হারিয়ে ফাইনালে ওঠার দৌঁড়ে অনেকটাই  এগিয়ে গেল মহেন্দ্র সিং ধোনির দল।

বাংলাদেশ সময়: ০০৩৫ ঘণ্টা, ২৮ ফেব্রুয়ারি ২০১৬
এসকে/এমআর

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।