ঢাকা, রবিবার, ২২ আষাঢ় ১৪৩১, ০৭ জুলাই ২০২৪, ২৯ জিলহজ ১৪৪৫

ক্রিকেট

এবার ভারতের মাটিতে ঐতিহাসিক টেস্ট

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৮১৬ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ৮, ২০১৭
এবার ভারতের মাটিতে ঐতিহাসিক টেস্ট বাংলাদেশ-ভারত টেস্ট ম্যাচের দৃশ্য-ফাইল ছবি

ঢাকা: ভারতের বিপক্ষে এর আগেও ৮টি টেস্ট ম্যাচ খেলেছে বাংলাদেশ। তবে ম্যাচগুলোর সবই বাংলাদেশের মাটিতে হয়েছে! এই প্রথম একটি মাত্র টেস্ট ম্যাচের জন্য হায়দ্রাবাদে বাংলাদেশকে আমন্ত্রণ জানিয়েছে ভারতীয় ক্রিকেট বোর্ড।

হায়দ্রাবাদের রাজীব গান্ধী স্টেডিয়ামে স্বাগতিক ভারতের বিপক্ষে সফরকারী বাংলাদেশের ঐতিহাসিক ম্যাচটি শুরু হবে বৃহস্পতিবার (০৯ ফেব্রুয়ারি) সকাল ১০টায়।

আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে টেস্ট মর্যাদা পাওয়ার পর বিগত ১৬ বছরে টেস্ট খেলুড়ে প্রতিটি দেশেই দ্বিপাক্ষিক সিরিজ খেলতে বাংলাদেশ আমন্ত্রিত হলেও এর আগে আমন্ত্রণ জানায়নি ভারত!

বর্তমান ক্রিকেট দুনিয়‍ায় ভারত এক পরাশক্তির নাম।

ওয়ানডে কি টি-টোয়েন্টি, টেস্ট ক্রিকেটে তো বটেই; বিরাট কোহলি ভারতের টেস্ট অধিনায়কের দায়িত্ব নেয়ার পর দলটির চেহারা উল্লেখযোগ্যভাব বদলে গেছে। তার অধীনে সবশেষ ১৮টি টেস্ট অপরাজিত ভারত। তিনিই ভারতের একমাত্র অধিনায়ক যার অধীনে ২০১৫ সাল থেকে আজ অব্দি টেস্ট ফরম্যাটে জয়ের ধারাবাহিকতা ধরে রেখেছে ক্রিকেটের সব সময়ের শক্তিশালী এই দল।

এর আগে দলটির সর্বোচ্চ টানা জয়ের রেকর্ড ছিল ১৯৮৫-৮৭ সালে। কপিল দেব, দীলিপ ভেংসরকার ও রবি শাস্ত্রী এই তিন অধিনায়ক ভারতকে অপরাজেয় রেখেছিলেন টানা ১৭টি ম্যাচে।

ঘরের মাটিতে দলটির টেস্টের রেকর্ডও অনন্য। গত দুই বছরে ১২টি টেস্ট খেলে একটিতেও হারেনি। ১০টিতে জয় আর দুটিতে করেছে ড্র। বাংলাদেশের বিপক্ষে তাদের রেকর্ড আরও উজ্জ্বল। এ পর্যন্ত মোট ৮টি ম্যাচ খেলে ৬টিতেই মাঠ ছেড়েছে জয়ের শেষ হাসি হেসে। আর দু’টিতে করেছে ড্র।

তারপরেও প্রতিপক্ষ হিসেবে বাংলাদেশকে সমীহ করছেন টিম ইন্ডিয়া কোচ অনীল কুম্বলে। ‘বাংলাদেশকে খাটো করে দেখার কিছু নেই। দল হিসেবে তারা যথেষ্টই শক্তিশালী। র‌্যাংকিংয়ে ভারত এক নম্বর দল হলেও তারা ছেড়ে দেবে না বরং চ্যালেঞ্জ নিয়েই খেলবে। ’

কুম্বলে বাংলাদেশকে সমীহ করলেও মাঠের লড়াইয়ে বাংলাদেশের জ্বলে ওঠাটা আসলেই কি অতটা সহজ হবে? টেস্ট ফরম্যাটে একরকম অনভ্যস্ত বাংলাদেশ স্বাগতিক বিরাট কোহলি, রবীন্দ্র জাদেজা, রবিচন্দ্রন অশ্বিন, ভুবনেশ্বর কুমার, আজিঙ্কা রাহানে ও লোকেশ রাহুলরা হয়ে উঠতে পারেন ম‍ূর্তিমান ত্রাস।

তাদের বিশ্বমানের বোলিং ও ব্যাটিং লাইনআপের সামনে সম্প্রতি তাসের ঘরের মতো ভেঙে চূর্নবিচূর্ণ হয়ে দেশে ফিরেছে ইংল্যান্ড ও নিউজিল্যান্ড। সেই বিবেচনায় বাংলাদেশ কতটা শক্ত পয়ে দাঁড়াতে পারবে সেটা সময়ের উপরেই ছেড়ে দিতে হচ্ছে।

শক্তিমত্তা, অভিজ্ঞতা, স্বাগতিক এসব বিচেনায় ভারত এগিয়ে থাকবে। কিন্তু বাংলাদেশ কি একেবারেই ছেড়ে কথা বলবে? ২০১৫ বিশ্বকাপ থেকে বদলে যাওয়া বাংলাদেশকে দেখেছে গোটা ক্রিকেট বিশ্ব। ওই বছরের জুনে বাংলাদেশ সফরে এসে এই ভারতই ২-১ ব্যবধানে ওয়ানডে সিরিজ হেরেছে স্বাগতিক বাংলাদেশের কাছে। এর চাইতেও জ্বলেজ্বলে এক উদাহরণ আছে। গেল বছর আইসিসি টি টোয়েন্টি বিশ্বকাপেও নিজেদের মাটিতে মাশরাফিদের কাছে হারতে হারতে মাত্র ১ রানে জিতেছে মাহেন্দ্র সিং ধোনির দল।

আর টেস্ট ফরম্যাটে অনভ্যস্ত থেকেও গত বছরের অক্টোবরে শক্তিশালী ইংল্যান্ডের বিপক্ষে দুর্লভ এক জয় তুলে নিয়েছে অধিনায়ক মুশফিকুর রহিমের দল। যদিও গত মাসে নিউজিল্যান্ড সফরে গিয়ে হোয়াইটওয়াশ হয়ে এসেছে টাইগাররা। তাই সাম্প্রতিক ফর্ম দুশ্চিন্তার রেখা এঁকে দিয়েছে কোচ হাতুরাসিংহের কপালে।

ভারতের বিপক্ষে এই ম্যাচের পার্থক্যটা টস গড়ে দেবে বলে মনে করেন বাংলাদেশ ক্রিকেটের প্রধান নির্বাচক মিনহাজুল আবেদীন নান্নু। উইকেট ফ্ল্যাট হওয়ায় আগে যারা ব্যাটিং নেবে তারাই সুবিধাজনক অবস্থানে থাকবে বলে মত তার। তামিম, সাকিব, সৌম্য, মুশফিক, রিয়াদ, মোসাদ্দেক ও সাব্বির যদি তাদের স্বাভাবিক ব্যাটিং করে আসতে পারেন, আর তাসকিন, শফিউল, রাব্বি, ও তাইজুলরা যদি তাদের থলি থেকে বোলিং যাদু বের করে আনতে পারেন তাহলে হায়দ্রাবাদে টাইগারদের ভারতবধ সম্ভব না হলেও ভালো কিছু হবে বলেই তিনি বিশ্বাস করেন।

‘আমি চাইবো অবশ্যই আমরা যাতে পাঁচ দিন ভালো ক্রিকেট খেলতে পারি। প্রতিটা সেশন যাতে দুর্দান্তভাবে পার করতে পারি এবং প্রতিদ্বন্দ্বিতা গড়ে তুলতে পারি। সেটাই আমাদের জন্য অনেক বড় একটি অর্জন হবে। আমাদের দলে বিশ্বমানের ব্যাটসম্যান, ফাস্ট বোলার ও স্পিনার আছে। ’

তবে তাই হোক। প্রথমবারই ভারতের মাটিতে ভারতের বিপক্ষে দুর্দান্ত খেলে ভিন্ন স্বাদের এই টেস্ট ম্যাচটি চিরস্মরণীয় করে রাখুক বাংলাদেশ।

বাংলাদেশ সময়: ০০১৪ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ০৯, ২০১৭
এইচএল/এমএমএস/এমজেএফ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।