শনিবার (২৭ জানুয়ারি) হাইভোল্টেজ এক ফাইনাল উপভোগ করবেন ক্রিকেটপ্রেমীরা। সাবেক কোচ চন্ডিকা হাথুরুসিংহের শিষ্যদের বিপক্ষে শিরোপা লড়াইয়ে নামবে মাশরাফি বাহিনী।
ফাইনালের আগে স্বাগতিক সমর্থকদের মনে উদ্বেগের জন্ম দিয়েছে সবশেষ ম্যাচের ভুলে থাকার মতো পারফরম্যান্স। অবিশ্বাস্যভাবেই ধস নামে বাংলাদেশের ব্যাটিং লাইনআপে। মাত্র ৮২ রানে সবকটি উইকেটের পতন ঘটে। ১০ উইকেটের উড়ন্ত জয়ে ফাইনালের টিকিট নিশ্চিত করে লঙ্কান শিবির। এমন অভাবনীয় সাফল্যে আত্মবিশ্বাসের তুঙ্গে সফরকারীরা।
ম্যাচপূর্ব সংবাদ সম্মেলনে মাশরাফি বিন মর্তুজার কণ্ঠে ফুটে উঠেছে শিরোপা জিততে কতটা উদগ্রীব তার দল, ‘ফাইনাল ম্যাচে জেতার জন্য আমরা সবাই উদগ্রীব হয়ে আছি। এটা সত্যি কথা। যদি হতে পারি, তবে প্রথমবারের মতো হবে। আসলে হওয়ার আগ পর্যন্ত এটা নিয়ে বেশি চিন্তা করতে থাকলে আমার কাছে মনে হয় বেশি চাপ এসে দাঁড়াবে। বিশেষ করে ফাইনাল ম্যাচে একটা চাপ থাকেই। যদি বৃহস্পতিবারের ম্যাচটি জিততাম তাও থাকতো। আমার কাছে মনে হয় গতকাল হারাতে চাপটা আরও কমে যাওয়ার কথা। চাপ সব সময়ই একটা থাকে যা থাকবেই এবং জয়টা আমরা অবশ্যই চাই। ’
প্রথমবারের মতো শিরোপাটি নিজেদের করে নিতে পারলে তা স্বাগতিক দলের জন্য দারুণ আনন্দের হবে বলেও মত ‘নড়াইল এক্সপ্রেস’ খ্যাত মাশরাফির, ‘প্রথমবারের মতো আমরা যদি জিততে পারি, এটা অনেক আনন্দের হবে। সব কিছু নির্ভর করছে আসলে কালকে আমরা কেমন খেলবো, কেমন শুরু করবো ম্যাচটা। যেহেতু ওয়ানডে সেহেতু ৩,৪,৫টা ওভারেই খেলার পট পরিবর্তন হয়ে যেতে পারে। তাই আমাদের ওই দিকগুলোর প্রতি নজর রাখতে হবে। ’-যোগ করেন বাংলাদেশ দলপতি।
টুর্নামেন্টের প্রথম দেখায় ১৬৩ রানের জয়ে লঙ্কানদেরও উড়িয়ে দিয়েছিল টাইগাররা। অঘটন ভুলে ঘুরে দাঁড়িয়ে নিজেদের ক্রিকেট ইতিহাসে প্রথম কোনো ত্রিদেশীয় সিরিজের শিরোপা জিততে দৃঢ়প্রতিজ্ঞ লাল-সবুজের জার্সিধারীরা। জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে দুই ম্যাচে যথাক্রমে ৮ উইকেট ও ৯১ রানের জয় ধরা দেয়।
প্রথম তিন ম্যাচেই বোনাস পয়েন্টসহ জয় তুলে নেয় বাংলাদেশ। দ্বিতীয় ম্যাচেই নিশ্চিত হয় ফাইনাল। অন্যদিকে ব্যাক-টু-ব্যাক জয়ে প্রথম দুই ম্যাচে হারের পর ফাইনালের দৌড়ে ছিটকে যাওয়ার শঙ্কা দূর করে শ্রীলঙ্কা। বিদায় নিয়েছে লঙ্কানদের বিপক্ষে একটি ম্যাচ জেতা জিম্বাবুয়ে।
ঘরের মাটিতে সবশেষ ২০০৯ সালে ত্রিদেশীয় সিরিজ খেলেছিল বাংলাদেশ দল। সেবারও প্রতিপক্ষ ছিল চলতি ইভেন্টের দু’দল। শিরোপার কাছে গিয়ে হতাশায় ডুবতে হয়েছিল। ঢাকায় অনুষ্ঠিত ফাইনাল ম্যাচটিতে লঙ্কানদের বিপক্ষে ২ উইকেটে হেরে যায় বাংলাদেশ।
দীর্ঘ সময় পর শ্রীলঙ্কার বিপক্ষেই আরেকটি ত্রিদেশীয় সিরিজের ফাইনাল মহারণ। আগের ম্যাচের দুঃস্মৃতি পেছনে রেখে নিজেদের সর্বোচ্চ উজাড় করে দিতে প্রস্তুত মাশরাফি-সাকিব-তামিম-মুশফিক-মোস্তাফিজরা। সিনিয়ররা জ্বলে উঠলেই প্রকম্পিত হবে মিরপুর শের-ই-বাংলার গ্যালারি। গর্জন তুলবেন হাজারো দর্শক। এ যে হাথুরুর শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে প্রতিশোধের ম্যাচ, শিরোপা জেতার লড়াই।
বাংলাদেশ সময়: ১৯২১ ঘণ্টা, ২৬ জানুয়ারি, ২০১৮
এমআরএম