শেষদিকের নাটকীয়তায় অবিশ্বাস্য ব্যাটিংয়ে ১৬৭ রানের টার্গেট অতিক্রম করান অভিজ্ঞ কার্তিক। ২টি চার ও ৩টি ছক্কায় খেলেন ৮ বলে ২৯ রানের অপরাজিত ইনিংস।
শেষ তিন ওভারে জয় থেকে ৩৫ রান দূরে ছিল টিম ইন্ডিয়া। ১৮তম ওভারে মাত্র ১ রান দিয়ে মানিশ পাণ্ডের (২৮) উইকেট তুলে নিয়ে জয় হাতের নাগালে নিয়ে আনেন মোস্তাফিজুর রহমান। ১২ বল দরকার ৩৪। ক্রিজে আসেন কার্তিক। এসেই ব্যাট হাতে রীতিমতো অভাবনীয় ঝড় তোলেন। আগের তিন ওভারে ১৩ রান দিয়ে দুই উইকেট নেওয়া রুবেল হোসেনের করা ১৯তম ওভারে ২২ রান নিয়ে ম্যাচের গতিপথ বদলে দেন তিনি।
শেষ ওভারে প্রয়োজন ছিল ১২। সৌম্য সরকারের করা পঞ্চম বলে লংঅনে সতীর্থের মুখোমুখি হয়ে বিজয় শংকরের (১৭) ক্যাচ ছাড়ার উপক্রম হলেও শেষ পর্যন্ত তালুবন্দি করেন মিরাজ। দিক বদল করে স্ট্রাইকে চলে আসেন কার্তিক।
জয়ের জন্য চাই ১ বলে ৫ রান। কাভারের উপর দিয়ে দর্শনীয় শটে ফ্ল্যাট সিক্সে সতীর্থদের বাঁধভাঙা উল্লাসের মধ্যমণি বনে যান কার্তিক। হতাশার সাগরে ডুব দেয় বাংলাদেশ। বৃথাই যায় সাব্বির রহমানের ৭৭ রানের ইনিংস। টাইগারদের ত্রিদেশীয় সিরিজ জয়ের অধরা স্বপ্নপূরণের অপেক্ষাটাও বাড়লো। এ নিয়ে দুইয়ের বেশি টিম নিয়ে কোনো সিরিজ বা টুর্নামেন্টে পাঁচবার ফাইনাল খেলেও শিরোপার স্বাদ থেকে বঞ্চিত বাংলাদেশ দল। এই হার বাংলাদেশের সমর্থকদের জন্য হৃদয়ভাঙার হার।
এই সিরিজ থেকে বাংলাদেশের প্রাপ্তি-অর্জন কম নয়। স্বাগতিক শ্রীলঙ্কাকে রাউন্ড রবিন পর্বের দুই ম্যাচেই হারিয়ে ফাইনালের টিকিট কাটে লাল-সবুজের জার্সিধারীরা। ভারতের বিপক্ষে জিততে জিততেও জেতা হলো না চ্যাম্পিয়নের মুকুট। টিম ইন্ডিয়ার বিপক্ষে আটটি টি-টোয়েন্টি ম্যাচেই সঙ্গী হলো হারের হতাশা আর অাক্ষেপ।
বিরাট কোহলি, মহেন্দ্র সিং ধোনি, হার্দিক পাণ্ডে, ভুববেশ্বর কুমার ও জাসপ্রিত বুমরাহকে ছাড়াই শ্রীলঙ্কার মাটি জয় করলো রোহিত শর্মার দল। ফাইনালের মঞ্চে ৫৬ রান করে আউট হন রোহিত। শিখর ধাওয়ান ১০, সুরেশ রায়না (০), লোকেশ রাহুল ২৪ রানে সাজঘরের পথ ধরেন। ৬ উইকেট হারিয়ে নাটকীয় জয় তুলে নেয় ভারত এক কার্তিকের বীরত্বে।
এর আগে প্রেমাদাসা স্টেডিয়ামে টস হেরে ব্যাটিংয়ে নেমে ৮ উইকেট হারিয়ে স্কোরবোর্ডে ১৬৬ রান তোলে বাংলাদেশ। ৭৭ রানের দুর্দান্ত এক ইনিংস উপহার দেন রানে ফেরা সাব্বির রহমান। ৫০ বলের ঝড়ো ব্যাটিংয়ে ছিল ৭টি চার ও ৪টি ছক্কার মার।
শেষ ওভারে ১৮ রান তুলে দলকে লড়াকু স্কোর এনে দিতে কার্যকরী ভূমিকা রাখেন অপরাজিত মেহেদী হাসান মিরাজ। তার ব্যাট থেকে আসে ৭ বলে দু’টি চার ও এক ছক্কায় ১৯।
মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ (২১) ও অধিনায়ক সাকিব আল হাসান (৭) দু’জনই রানআউট হন। তামিম ইকবাল ১৫, লিটন দাস ১১, সৌম্য সরকার ১, মুশফিকুর রহিম ৯ রানে সাজঘরে ফেরেন।
ভালো শুরুর পর হঠাৎই ছন্দপতন হয়। তামিম-লিটনের উদ্বোধনী জুটি (২৭) ভাঙার পর স্কোর তিন উইকেটে হয়ে যায় ৩৩। মুশফিককে নিয়ে ৩৫ রান যোগ করে প্রাথমিক চাপ সামাল দেন ওয়ানডাউনে নামা সাব্বির। মাহমুদউল্লাহর সঙ্গে ৩৬ ও সাকিবকে নিয়ে ষষ্ঠ উইকেট জুটিতে যোগ করেন ২৯।
চার ওভারে ১৮ রান খরচায় তিনটি উইকেট দখল করেন লেগস্পিনার যুজভেন্দ্র চাহাল। ২০ রান দিয়ে এক উইকেট নেন তরুণ অফস্পিনার ওয়াশিংটন সুন্দর। অন্য দু’টি পেসার জয়দেব উনাদকাতের।
বাংলাদেশ সময়: ২৩১১ ঘণ্টা, ১৮ মার্চ, ২০১৮
এমআরএম