দলে বিগ হিটারের অভাব থাকায় ব্যাটিং লাইনআপের নিচের দিকে নামানো হচ্ছে সৌম্য সরকারকে। এমনটাই জানিয়েছেন ডমিঙ্গো।
গত দুই টি-টোয়েন্টি ম্যাচে শেষ ৫ ওভারে যথাক্রমে ৪১ ও ৪৮ রান তুলেছে বাংলাদেশ। অথচ দুই ম্যাচে ওপেনার তামিম ইকবাল উইকেটে সেট হয়ে গিয়েছিলেন। দুই ম্যাচে সৌম্য যখন ক্রিজে আসেন তখন ১৭.৪ ওভার চলে, দু’বারই মাত্র ৫ বল খেলার সুযোগ পেয়েছেম এই বাঁহাতি। কিন্তু সৌম্যকে মূলত শেষদিকে ঝড় তোলার দায়িত্ব দিয়েই পাঠানো হয়েছে। অথচ সর্বশেষ বঙ্গবন্ধু বিপিএলে ওপেনার হিসেবে খেলেছেন তিনি।
সৌম্যকে পরে নামানর ব্যাখ্যায় ডমিঙ্গো বলেন, ‘টপ অর্ডারে অনেক সুযোগ পেয়েছে সৌম্য। আমার মতে সে দারুণ খেলোয়াড়। কিন্তু আমরা এমন কয়েকজন খেলোয়ড়কে খুঁজছি যারা ইনিংসের শেষদিকে বল সীমানা ছাড়া করতে সক্ষম। কিন্তু বাংলাদেশ দলে এই বিগ হিটারের বড্ড অভাব। লিটন ওপেনিংয়ে অভ্যস্ত, কিন্তু সে চারে ব্যাট করছে। হয়তো পজিশন পাল্টে যাওয়ায় ওর সমস্যা হচ্ছে। ’
তিনি আরও বলেন, ‘সৌম্য ওপেনিং অথবা তিনে ব্যাট করে। কিন্তু আমাদের দলে অনেক ওপেনার। এজন্য দলে ভিন্ন কম্বিনেশন খুঁজতে হচ্ছে। সৌম্যর মতো ব্যাটসম্যান, যার ব্যাটিং দক্ষতা অসাধারণ, তাকে দিয়ে আমরা ইনিংসের শেষদিকে রান তোলার চেষ্টা করছি যে কিনা বল মাঠের বাইরে পাঠাতে সক্ষম। ’
মুশফিকুর রহিমের মতো সিনিয়র ও নিয়মিত খেলোয়ায়ড় এবার নিরাপত্তা নিয়ে দুশ্চিন্তার কারণে সফর সরে দাঁড়িয়েছেন। ফলে তার জায়গা নেওয়ার সুযোগ দারুণ সুযোগ থাকছে বাকিদের জন্য, এমনটাই মনে করেন ডমিঙ্গো, ‘আমরা তিনজন প্রথম পছন্দের খেলোয়াড়কে পাচ্ছি না। মোহাম্মদ সাইফউদ্দিন নতুন বল হাতে নেওয়ার পাশাপাশি আটে ব্যাট করতে পারে। আবার সাকিব ও মুশফিককেও পাচ্ছি না। ফলে নতুনরা সুযোগ পাচ্ছে। কিন্তু এটা এখনও কাজে দেয়নি। তবে মোহাম্মদ নাঈম প্রথম ম্যাচে আর ভারতের বিপক্ষে ৮১ রানের ইনিংস খেলে কিছুটা প্রমাণ করেছে। নতুন হিসেবে এটাকে আমি ভালোই বলব। ’
‘যদি তারা (তিন সিনিয়র) খেলতো তাহলে হয়তো নাঈমের মতো খেলোয়াড়কে আমরা আবিষ্কার করতে পারতাম না। যদিও ফলাফল তেমন আশানুরূপ নয়, তবে আমরা সবাই অনেক কিছু শিখতে পারছি। বাবর আজম, শোয়েব মালিক এবং মোহাম্মদ হাফিজের মতো হতে তরুণদের কতো দূর যেতে হবে সেটাও তারা শিখতে পারছে,’ যোগ করেন তিনি।
দুই ম্যাচে টসে জিতে দু’বারই ব্যাটিং বেছে নেওয়ার ব্যাখ্যায় ডমিঙ্গো বলেন, ‘উইকেট মোটেও সহজ ছিল না। প্রথম ম্যাচেও তা দেখেছি। তখন আমরা ১৪১ রান করলাম আর ওরা এক কিংবা দুই বল হাতে রেখে জিতে গেল। আমরা সবাই জানি স্কোর ডিফেন্ড করায় পাকিস্তান অনেক এগিয়ে, বিশেষ করে তাদের ডেথ বোলিং। আমাদের ব্যাটিং লাইনআপ অনভিজ্ঞ, এজন্য আমরা শুরুতে বোর্ডে কিছু রান তুলতে চেয়েছিলাম এবং দ্বিতীয় ইনিংসে বল হাতে ডিফেন্ড করতে চেয়েছিলাম। তবে এটা কাজে লাগেনি। ’
ডমিঙ্গোর মতে, পাকিস্তানের সঙ্গে বাংলাদেশের পার্থক্য দিবালোকের মতোই স্পষ্ট এবং পাকিস্তানের পর্যায়ে পৌঁছাতে হলে অনেকটা পথ পাড়ি দিতে হবে। তিনি বলেন, ‘আমি আজকের (দ্বিতীয় ম্যাচ) ফলাফলে খুব হতাশ। আমরা ভেবেছিলাম প্রথম ম্যাচে ওদের ভালোই চ্যালেঞ্জ জানিয়েছিলাম। এখানে ব্যাট করা কঠিন। এখানে গড়ে ১৫৫ রান করা নিরাপদ। প্রথম ম্যাচে আমরা ১৫ রান কম করেছিলাম এবং হয়তো দ্বিতীয় ম্যাচে ২৫ রান কম হয়েছে। আর এজন্যই ওরা শীর্ষ দল আর আমরা নবম স্থানে। অভিজ্ঞতা আর দক্ষতার ক্ষেত্রে ওদের ধরতে হলে আমাদের আরও অনেক কাজ করতে হবে। ’
লাহোরে সোমবার (২৬ জানুয়ারি) সিরিজের তৃতীয় ও শেষ ম্যাচে পাকিস্তানের মোকাবিলা করবে বাংলাদেশ দল।
বাংলাদেশ সময়: ১৭২৮ ঘণ্টা, জানুয়ারি ২৬, ২০২০
এমএইচএম